তুলা

তুলার পাতায় লালচে রোগ

Leaf Reddening

অন্যান্য

সংক্ষেপে

  • পাতার কিনারা প্রথমে লাল হয়ে যায়।
  • পরে সমগ্র পাতা বিবর্ণ হয়ে পড়ে।
  • কাণ্ড দুর্বল ও লালচে হয়ে যায়।
  • পাতা ও ফল ঝরে পড়ে।
  • গাছের বৃদ্ধি স্তব্ধ হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

তুলা

উপসর্গ

পাতার লালচে রোগ ঘটনাক্রম এবং শস্যের পর্যায়ের উপর নির্ভর করে সামান্য হেরফের হতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, প্রথমে পাতার প্রান্তভাগ লাল হয়ে যায় এবং পরে পাতার বাকি অংশও বিবর্ণ হয়ে যায়। অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে নেতিয়ে পড়া, কাণ্ড লাল হওয়া, কম সংখ্যক বা আদৌ কোন শুঁটি বের না হওয়া, পাতা এবং ফল ঝরে পড়া এবং গাছের বৃদ্ধি স্তব্ধ হওয়া। বার্ধক্য অবস্থায়, বিবর্ণতা একটি প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যা সমগ্র জমি জুড়ে সাধারণত দেখা যায়। নাইট্রোজেনের ঘাটতি ছাড়াও, সরাসরি অতিরিক্ত সূর্যালোক , ঠাণ্ডা তাপমাত্রা এবং বায়ুর ক্ষতির কারণেও পাতার লালচে রোগ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে, বিবর্ণতা সমগ্র ক্ষেতের সমস্ত পাতার পরিবর্তে একটি পাতাকে প্রভাবিত করে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

গাছের বৃদ্ধি পর্যায় এবং চাপের উপর নির্ভর করে জৈব সারের প্রয়োগ গাছের জন্য উপকারী হবে। যদি পাতার লালচে রোগ মরশুমের শেষের দিকে হয় বা বাহ্যিক উপাদান দ্বারা বাধাপ্রাপ্ত হয় তাহলে জৈবিক দমন ব্যবস্থার প্রয়োজন হয় না।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। তুলার লালচে রোগ দমনে তেমন কোন রাসায়নিক দমন ব্যবস্থা নেই। খামারজাত সারের প্রয়োগ, সঠিক সেচ প্রদান এবং সুষম সারের ব্যবহার করলে এ সমস্যা এড়াতে সাহায্য করবে। মরশুমের শুরুতে যদি ঘটতে থাকে, তাহলে পুষ্টির সংশোধিত প্রয়োগের ফলে সমস্যার সমাধান হতে পারে। যদি শুঁটি প্রথম খোলার সময় বা তার কাছাকাছি সময়ে লক্ষণ দেখা যায় তাহলে কোন প্রতিরোধ ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন নেই।

এটা কি কারণে হয়েছে

কয়েকটি অজৈব কারণে এ রোগের লক্ষণ দেখা যায় যেমন- জল, ক্রমাগত তাপমাত্রা জনিত চাপ বা মাটির কম উৎপাদনশীলতা। কিছু প্রজাতি বা হাইব্রিড জাত এ রোগের প্রতি বেশি সংবেদনশীল। পাতা লাল হওয়ার কারণ হলো পাতায় অ্যান্থোসায়ানিন নামক লাল রঞ্জক পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এবং ক্লোরোফিল নামক সবুজ রঞ্জক পদার্থ কমে যাওয়া। এর কারণে গাছের মূলের কোষকলা মারা যেতে পারে, ফলে গাছ জল এবং পুষ্টি পরিবহনের সক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। বার্ধ্যক্য অবস্থায়, এটি গাছের প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া এবং এর ফলে গাছের ফলনে তেমন কোন প্রভাব পড়ে না। মরশুমের শুরুতে সংক্রমণের অন্য কারণ হলো নাইট্রোজেন, ফসফরাস এবং পটাশিয়ামের অভাব ( ম্যাগনেসিয়াম জড়িত নয়)। উপরন্তু, সরাসরি অতিরিক্ত সূর্যালোক, ঠাণ্ডা তাপমাত্রা এবং বায়ুর প্রভাবে পাতা বিবর্ণ হয়ে যায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • ফল আসার সময় যাতে মাটির তাপমাত্রা অত্যধিক না হয় সেই জন্য নির্ধারিত সময়ে গাছ লাগান।
  • গাছের মধ্যে সর্বোত্তম দূরত্ব বজায় রাখুন।
  • অজৈব চাপের বিরুদ্ধে সহনশীল তুলার জাত ব্যবহার করুন।
  • মাটিতে পর্যাপ্ত জৈব সার প্রদান নিশ্চিত করুন।
  • বাতাসের প্রবাহজনিত ক্ষতির হাত থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্যে প্রতিরোধী শ্রেণীর গাছ রোপণ করুন।
  • গাছের চাহিদা অনুযায়ী সঠিক সেচ পরিকল্পনা করুন।
  • মৃত্তিকার পুষ্টি নিরীক্ষা করুন এবং সুষম পুষ্টির ব্যবস্থাপনা পদ্ধতি প্রয়োগ করুন।
  • ফসল সংগ্রহের পর গভীর চাষ দিয়ে তলার মাটি উপরে তুলুন এবং উপরের মাটি তলায় দিয়ে দিন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন