তুলা

তুলো ফসলে আগাছানাশক জনিত বিবর্ণ রোগ

Herbicides Photosynthesis Inhibitors

অন্যান্য

সংক্ষেপে

  • পাতায় শিরার মধ্যবর্তী অংশ হলুদাভ হয়ে যায়।
  • পাতার প্রান্তদেশ হলুদ হয়ে যায় এবং উপরের দিকে বেঁকে যায়।
  • অতিরিক্ত মাত্রায় আগাছানাশক প্রয়োগ কোষকলার বিবর্ণতা এমনকি মৃত্যুরও কারণ হতে পারে।
  • প্রখর সূর্যালোকে লক্ষণ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

6 বিবিধ ফসল

তুলা

উপসর্গ

উপসর্গগুলোর বিস্তার প্রয়োগকৃত আগাছানাশকের ধরন, প্রয়োগের সময় এবং প্রয়োগমাত্রার উপর নির্ভর করে থাকে। কচি পাতার তুলনায় বয়স্ক পাতা আরও বেশি সংক্রামিত হয়। শিরার মধ্যবর্তী অংশ হলুদাভ এবং পাতা মড়মড়ে হয়ে যায়, শিরাগুলোর মধ্যকার কোষকলা ক্রমশঃ হলুদাভ হয়ে যায়। পাতার প্রান্তদেশ হলুদ এবং পরবর্তীতে উপরের দিকে বেঁকে যায়। পূর্ণ সূর্যালোকে ( পাতা কাগজের ব্যাগের অনুরূপ দেখায়) অধিকতর খারাপ অবস্থার সৃষ্টি হয়, উদাহরণস্বরূপ পাতা ক্রমশঃ শুকিয়ে যেতে থাকে এবং দুই থেকে পাঁচ দিনের মধ্যে ঝরে পড়তে পারে। পাতায় দ্রুত এবং ক্ষতিকারক ক্রিয়ার কারণে আগাছানাশককে “বিরঞ্জক” হিসেবে বিবেচনা করা হয়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

এ অবস্থার জন্য কোন জৈবিক দমন ব্যবস্থা নেই। প্রতিরোধ ব্যবস্থা এবং উপযুক্ত চাষ পদ্ধতি ফসলের সম্ভাব্য ক্ষতি পরিহারের প্রধান চাবিকাঠি।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। আগাছানাশক ব্যবহারের আগে আপনি কোন ধরনের আগাছার (বড় পাতাযুক্ত আগাছা নাকি ঘাস জাতীয় আগাছা) জন্য আগাছানাশক ব্যবহার করছেন সে সম্পর্কে আগে নিশ্চিত হন এবং এর জন্য অন্য কোন ভালো ব্যবস্থা না থাকলেই কেবল এ আগাছানাশক ব্যবহার করুন। সতর্কতার সাথে আগাছানাশক নির্বাচন করুন এবং ভালোভাবে নির্দেশনা পড়ুন এবং নির্দেশ অনুপাতে আগাছানাশক ব্যবহার করুন।

এটা কি কারণে হয়েছে

সাধারনত পিএস২ নিবারকভুক্ত আগাছানাশক দ্বারা উদ্ভিদ ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে থাকে, যেমন এট্রাজিন, ব্রোমক্সিনিল, ডায়ুরন এবং ফ্লোমেটিউরনও উল্লেখযোগ্য। আগাছানাশক সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়াকে অবরুদ্ধ করে এবং কোষকলায় উপস্থিত সবুজ রঞ্জক পদার্থসমুহ বিনষ্ট করে, এতে পাতার বিবর্ণতা বাড়ে। অঙ্কুরোদগমের পূর্বে প্রয়োগকৃত আগাছানাশক গাছের শিকড় দ্বারা শোষিত হয় এবং জল সঞ্চালনের পথ অনুসরণ করে উপরের অংশ পর্যন্ত চলে আসে। অবশেষে বিষক্রিয়া পাতা, বিশেষ করে পাতার প্রান্তীয়দেশে পুঞ্জীভূত হয়। অঙ্কুরোদগমের পরবর্তী সময়ে প্রয়োগকৃত আগাছানাশক গাছের কোষকলাকে ক্ষতি করে এবং উদ্ভিদের অন্যান্য অংশে বাহিত হয় না। বিভিন্ন প্রকার আগাছা (যেমন ঘাস, সরিষা, বিছুটি পাতা, বুনো মূলো প্রভৃতি ) আগাছানাশকের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে উঠায় এ সমস্যা সর্বত্র দেখা যায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • আপনি কোন ধরনের আগাছার (বড় পাতাযুক্ত আগাছা নাকি ঘাস জাতীয় আগাছা) জন্য আগাছানাশক ব্যবহার করছেন সে সম্পর্কে আগে নিশ্চিত হন।
  • আপনার উদ্দেশ্য সফল করতে সতর্কতার সাথে সবচেয়ে উপযুক্ত আগাছানাশক নির্বাচন করুন।
  • ভালোভাবে নির্দেশনা পড়ুন এবং নির্দেশিত আগাছানাশক ব্যবহার করুন।
  • প্রতিবার কাজ শেষে ব্যবহৃত পাত্র পরিষ্কার করুন যাতে বিভিন্ন রকমের আগাছানাশক মিশে দূষিত না হয়।
  • অধিক বাতাসের সময় আগাছানাশক ছিটানো থেকে বিরত থাকুন যাতে আগাছানাশক বাতাসে ভেসে অন্য জমিতে ছড়িয়ে পড়তে না পারে।
  • এমন নজলের স্প্রেয়ার ব্যবহার করুন যাতে নির্দিষ্ট আগাছানাশক ভালোভাবে ছিটানো যায় এবং আগাছানাশক বাতাসে কম ভাসে।
  • আগাছানাশকের ফলাফল যাচাই করতে চারণভূমি বা খড়ের জমিতে আগাছানাশক ব্যবহার করে পরীক্ষা করে নিন।
  • আবহাওয়ার পূর্বাভাস সতর্কতার সঙ্গে দেখে নিন।
  • বৃষ্টি হলে আগাছানাশক ছিটাবেন না।
  • প্রয়োগ তারিখ, পণ্য, মাঠের অবস্থান এবং আবহাওয়ার অবস্থা সমস্তকিছু সম্পর্কে একটা বিস্তারিত বিবরণ লিখে রাখুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন