Iron Toxicity
অন্যান্য
সারা মরশুম জুড়েই লৌহের বিষক্রিয়া দেখা যেতে পারে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের নিচু জমিতে এর প্রাদুর্ভাব ঘটে। উদ্ভিদে লৌহের অধিক শোষণ এবং অতিরিক্ত লৌহ জমা হওয়ার ফলে কোষকলায় বিষাক্ত পদার্থ সৃষ্টি হয়। ফলে পাতার ক্লোরোফিল ধ্বংস হয়ে যায় এবং শারীরবৃত্তীয় কার্যক্রম বাধাপ্রাপ্ত হয় এবং এতে পাতা বাদামী কিংবা তামাটে বর্ণ ধারণ করে। মূল অঞ্চলে অতিরিক্ত লৌহ থাকলে শিকড়তন্ত্র দুর্বল হয় এবং উদ্ভিদ অনেক অত্যাবশ্যকীয় পুষ্টি উপাদান শোষণ করতে পারে না। এর ফলে ১০-১০০ শতাংশ পর্যন্ত ফলন হ্রাস পায়।
এ সমস্যা দূরীকরণে কোন জৈবিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার কথা জানা নেই।
লৌহের বিষক্রিয়া যুক্ত মাটিতে সুষম সার বিশেষ করে পটাশিয়াম প্রয়োগ করুন। এ সমস্যা দূর করতে চুন প্রয়োগও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মূল সারের সাথে ম্যাঙ্গানিজ সার প্রয়োগ করলে উদ্ভিদ কর্তৃক লৌহের শোষণ কমে। অম্লধর্মী মাটিতে চুন প্রয়োগ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অধিক লৌহ ও জৈব সার সমৃদ্ধ মাটিতে এবং যে জমির জল নিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত নয় সেখানে কখনোই অতিরিক্ত পরিমাণ জৈব পদার্থ যেমন জৈব সার, খড় ইত্যাদি প্রয়োগ করবেন না। অ্যামোনিয়াম সালফেটের পরিবর্তে ইউরিয়া সার ব্যবহার করুন কারণ অ্যামোনিয়াম সালফেটের তুলনায় ইউরিয়া মাটিকে কম অম্লযুক্ত করে।
উদ্ভিদের মূল অঞ্চলে অতিরিক্ত লৌহের উপস্থিতি থাকলে বিষক্রিয়া হয়। প্লাবিত জমির সাথে এ বিষক্রিয়ার সম্পর্ক রয়েছে এবং নিচু জমির ধানের ফলন হ্রাসের জন্য প্রাথমিকভাবে এ কারণটি দায়ী। প্লাবনভূমির মাটিতে লৌহের ঘনত্ব বেশি থাকে এবং উদ্ভিদ কর্তৃক লৌহ শোষণের পরিমাণও বেশি হয়। বৃহৎ পরিসরে, অম্লধর্মী মাটি, অক্সিজেনযুক্ত মাটি এবং মাটির উর্বরতার মাত্রা এ পুষ্টি উপাদানের উপস্থিতি কিংবা শোষনের ওপর প্রভাব বিস্তার করে। প্লাবিত জমির স্বাভাবিক অক্সিজেন সমৃদ্ধ মাটিতে পিএইচ মাত্রা ৫.৮-এর নীচে থাকলে লৌহের বিষক্রিয়া হয় এবং স্বল্প অক্সিজেন সমৃদ্ধ মাটিতে ৬.৫-এর নীচে পিএইচ থাকলে লৌহের বিষক্রিয়া দেখা যায়। যথাযথ ব্যবস্থা যেমন মাটিতে চুন প্রয়োগ, জমির উর্বরতা বৃদ্ধি, শস্যের নির্দিষ্ট বৃদ্ধি পর্যায়ে জল নিষ্কাশন ইত্যাদির মাধ্যমে এটি দূর করা যায়। ম্যাঙ্গানিজ লৌহের সাথে মাটিতে প্রতিযোগিতা করে, ফলে এ পুষ্টি উপাদানটি জমিতে প্রয়োগ করলে লৌহের বিষক্রিয়া কিছু পরিমান হ্রাস পায়।