ধান

ধানের শীষের মাকড়

Steneotarsonemus spinki

মাকড়

5 mins to read

সংক্ষেপে

  • এ মাকড় পাতার খোলের অভ্যন্তরস্থ উপাদান খেয়ে পাতাকে বিবর্ণ করে।
  • ফলে গাছের বন্ধ্যাত্ব, বিকৃত আকৃতির দানা, সোজা মাথা এবং তোতাপাখীর ঠোঁটের মত দানা হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

ধান

উপসর্গ

মাকড়ের ভক্ষণ মূলতঃ পাতার খোলের পেছনের দিক থেকে সংঘটিত হয় এবং দারুচিনি বা চকোলেট-বাদামী রঙের ফুসকুড়ি দেখে পোকার উপস্থিতি বোঝা যায়। যখন পাতার খোলের বহিরাবরণ অপসারিত হয় তখন সরাসরি মাকড়ের উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করা যায়। মাকড়ের ভক্ষণ মূলতঃ শীষের বৃদ্ধির পর্যায়ের শুরু থেকে দানার দুগ্ধ পর্যায়ের শেষ পর্যন্ত হয়ে থাকে। সুযোগসন্ধানী ছত্রাকজনিত জীবাণু গাছের বৃদ্ধির পর্যায়ে দানা ও পাতার খোলে প্রবেশ করে গাছের ক্ষতি করে (যেমনঃ ধানের খোল পচা জীবাণু )। ফলে অপরিপক্ব অনুমঞ্জরী, গাছের বন্ধ্যাত্ব, সোজা মাথা এবং "তোতাপাখির ঠোঁট"-এর মতো বিকৃত আকৃতির দানা উৎপন্ন হয় । পৃথিবীব্যাপী এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং মারাত্মক বিধ্বংসী ধান গাছ আক্রমণকারী মাকড়।

Recommendations

জৈব নিয়ন্ত্রণ

অতিরিক্ত কীটনাশক ব্যবহারের ফলে প্রাকৃতিক শত্রু পোকা যেমন এস স্পাইনকি (মাকড়সা, এন্ডো-প্যারাসিটয়েড বোলতা ইত্যাদি) যাতে মারা না যায় সেদিকে সতর্ক থাকুন।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। গুরুতর ক্ষতির ক্ষেত্রে, হেক্সিথায়াজোক্স বা সালফার যৌগ সংঘঠিত কীটনাশক স্প্রে ব্যবহার করুন। স্প্রে করার আগে, মাঠ ভাসিয়ে জলসেচ করুন যাতে মাকড় গাছ বেয়ে উপরে উঠতে বাধ্য হয়, যার ফলে এই দমন ব্যবস্থার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পায়।

এটা কি কারণে হয়েছে

স্টিনিওটারসোনেমাস স্পিংকি (Steneotarsonemus spinki) নামক মাকড় দ্বারা ধান গাছের শীষ আক্রমণের লক্ষণ প্রকাশ পায় এর পাতা ভক্ষণের কার্যকারিতার উপর। উচ্চ তাপমাত্রা ও কম বৃষ্টিপাত পোকার ব্যাপকহারে বৃদ্ধির জন্য আদর্শ অবস্থা। তাপমাত্রা ২৫.৫ ডিগ্রী সেল়সিয়াস থেকে ২৭.৫ ডিগ্রী সেল়সিয়াস এবং আর্দ্রতা ৮০ থেকে ৯০% হলো সবচেয়ে উপযুক্ত অবস্থা। নিবিড় ও অনবরত ধান চাষ এবং ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি ভাগাভাগি করে ব্যবহার মাকড়ের বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে। ধানগাছ সারা বছর ধরেই আক্রান্ত হতে পারে। যাইহোক, শীষ বৃদ্ধির শুরুর পর্যায়ে এর সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং পরিপক্ব গাছে এর ব্যাপকতা কমতে থাকে। এই কীটপতঙ্গের অন্য কীটপতঙ্গের সাথে আন্তঃক্রিয়ার সাধারণ চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য থাকায় এদের দমন করা খুব কঠিন যেমন সারোক্ল্যাডিয়াম ওরাইজা (খোল পচা রোগের জন্য দায়ী মাকড়) এবং বার্কহোল্ডারিয়া গ্লুমি (শীষ পোড়া রোগ সৃষ্টির জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়া)।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • মাকড়ের খোঁজ পেতে মাঠ নিয়মিত তদারকি করুন।
  • মাঠে হাল চাষ করার আগে ফসল উত্তোলনের সময় ছড়িয়ে পড়ে থাকা খড়কুটো পুড়িয়ে ফেলুন।
  • ফসল উত্তোলনের পর মাঠ অন্ততঃপক্ষে দুই সপ্তাহ পতিত অবস্থায় ফেলে রাখুন।
  • ঘন করে চারা সারিতে রোপণ করুন।
  • সুষম অনুপাতে নাইট্রোজেন ফসফরাস পটাশিয়াম আছে এমন উর্বর জমিতে ধান রোপণ করুন।
  • জমি এবং আশপাশের ক্ষেতে আগাছা পরিষ্কার হয়েছে কিনা তা নিশ্চিত করুন।
  • মাকড়ের জীবনচক্র ব্যাহত করতে ধানের সাথে শিম বা ডাল জাতীয় শস্য দ্বারা ফসল চক্র করুন।
  • ধান চাষে ব্যবহৃত সরঞ্জাম পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখুন ও সঠিক মান বজায় রেখে ব্যবহারের অভ্যাস করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন