Rhizoctonia solani
ছত্রাক
এ রোগের কারণে প্রধানত গাছের মূল আক্রান্ত হয়, চারা কম গজায়, গাছের বৃদ্ধি কমে এবং ফলন কমে যায়। মূলে কিছুটা নিমজ্জিত ক্ষত এবং বাদামী বিবর্ণ ভাব দেখা যায়, মূল কুঁচকে গিয়ে পচে যায়। যদি এরা ঠিক মতো বৃদ্ধি পায় তাহলে নডিউল সংখ্যা কমে যায় এবং ছোট ও ফ্যাকাশে বর্ণ ধারণ করে। আক্রান্ত বীজ বপন করলে চারা গজানোর সাথে সাথে ঝলসে যেতে পারে বা মরে যায়। যে সব গাছ টিকে থাকে এদের বৃদ্ধি থেমে যায় এবং কোষ কলা মৃত দেখায়। ফসলের বৃদ্ধির শেষ মুহুর্তে সংক্রমণ হলে বৃদ্ধি থেমে যায়। সুযোগসন্ধানী জীবাণুগুলি মৃত কোষ কলার উপর জন্মায় ও উপদ্রব করে, যা উপসর্গগুলি আরও খারাপ করে তোলে। খেতের মধ্যে রোগ প্রায়ই প্যাচ তৈরি করে এবং আবহাওয়া অনুকূল হলে তা আরো প্রসারিত হতে পারে।
সামান্য কাইনিটিন মিশ্রিত উপাদান বা ট্রাইকোডার্মা হারজিয়ানাম প্রয়োগ করে বীজ ভিজিয়ে রেখে মাটিতে জন্মানো রোগ দমন করা যায় যেমন- মসুরের মূলের পচা রোগ। পাশাপাশি এরা বেঁচে থাকা অন্যান্য গাছের বৃদ্ধি এবং উৎপাদনশীলতা বাড়িয়ে দেয়। এই পণ্যের বৃহৎ পরিসরে ব্যবহারের লক্ষ্যে এখনো জমিতে পরীক্ষা চলছে ।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। এক বার যদি কোষকলা ছত্রাক দ্বারা সংক্রমিত হয় তাহলে কোন কিছুর ব্যবহার করে এ রোগ দমন অসম্ভব। থিয়াবেন্ডাজল প্লাস কারবাথিন, কারবাথিন প্লাস থিরাম দ্বারা বীজ শোধন করলে চারা গজাতে সহায়তা করে। অন্যান্য ছত্রাকনাশকও ব্যবহার করা যায়।
এ রোগের জন্য দায়ী মাটিতে জন্মানো ছত্রাকের মিশ্রণ যা গাছের যে কোনো পর্যায়ে সংক্রমিত হতে পারে । রাইজোকটনিয়া সোলানি এবং ফিউসেরিয়াম সোলানি মিলে এই মিশ্রণ তৈরি হয় যা মাটিতে দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকতে পারে । যখন আবহাওয়া অনুকূলে থাকে তখন এরা গাছের মূলের কোষ কলায় জন্মায় এবং গাছের উপরের দিকে জল ও পুষ্টি উপাদান সরবরাহে বাধা দেয়, যার ফলে গাছ নেতিয়ে পড়ে এবং শুকিয়ে যায়। যদি এরা গাছের কোষকলায় জন্মায় তাহলে গাছের মূলের বৃদ্ধি কমে যায় এবং নডিউলের সংখ্যাও হ্রাস পায়। মরশুমের প্রথম দিকে ঠাণ্ডা এবং আর্দ্র মৃত্তিকা রোগের বৃদ্ধিকে সমর্থন করে। আসলে, উপসর্গ প্রায়ই জলমগ্ন বা জলসেচন অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত হয়। পরিশেষে, বীজ বপনের তারিখ এবং বীজ বপনের গভীরতা চারা জন্মানো ফলনের উপর একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলে।