Opogona sacchari
বালাই
বৃদ্ধি পর্যায়, ফুল ধারণ পর্যায় এবং ফসল আহরণের পরেও সংক্রমণ ঘটতে পারে। সাধারণভাবে, পূর্ণাঙ্গ মথ গাছের ক্ষতি করতে ও পীড়ন দিতে আকৃষ্ট হয়। শুধুমাত্র বিছার কারণে খাবারজনিত ক্ষতি হয়, যা সাধারণত উদ্ভিদের পচনশীল অংশ খেয়ে থাকে। অবশিষ্টাংশ খাওয়া শেষ হলে তারা সুস্থ গাছের অংশবিশেষ (শিকড়, কাণ্ড, আপাতকাণ্ড, বৃন্ত ও ফল) খেতে শুরু করে। বীজও আক্রান্ত হতে পারে। নালা হিসেবে প্রাথমিক লক্ষণ দেখা যায় কিন্তু প্রাথমিক ধাপে তা সনাক্ত করা কঠিন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে এ বালাই পরবর্তী ধাপে চিহ্নিত হয়। গাছের মাংসল অংশ সম্পূর্ণরূপে ফাঁপা হয়ে যেতে পারে এবং পাতা নেতিয়ে পড়ে। ফলে প্রতিকূল অবস্থায় পত্রমোচন এমনকি গাছ মারা যেতে পারে।
গ্রীনহাউসে গবেষণা করে দেখা গেছে, স্টেইনারনেমা ফেলটি, হেটেরোহ্যাবডিটিস ব্যাকটেরোফোরা ও হেটেরোহ্যাবডিটিস হেলিওথিডিস-এর মত কৃমি (নেমাটোড) এ বিছার বিরুদ্ধে কার্যকর। ব্যাসিলাস থুরিনজিয়েন্সিসও ব্যবহার করা যেতে পারে।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। যদি কীটনাশকের প্রয়োজন হয়, তবে ইমিডাক্লোরোপ্রিড সমৃদ্ধ রাসায়নিক ব্যবহার করতে পারেন।
অপোগোনা স্যাকারি প্রজাতির বিছার কারণে এ লক্ষণগুলো দেখা যায়। মথ নিশাচর হয়। তাদের শরীর উজ্জ্বল বাদামী রঙের, আকারে ১১ মিমি. এবং পাখার বিস্তার ১৮-২৫ মিমি.। সামনের পাখা লম্বা ডোরা দাগযুক্ত সমভাবে বাদামী রঙের হয় এবং পুরুষ পোকার ক্ষেত্রে তাতে একটি ঘন বাদামী দাগ থাকে। পিছনের পাখা ধূসর রঙের ও উজ্জ্বল হয়, কিনারায় ঝালর থাকে। স্ত্রী মথ গুচ্ছে ৫ টি করে গাছের কোষকলার ক্ষত ও ফাটলে প্রায় ৫০-২০০ টির মত ডিম পাড়ে। প্রায় ১২ দিন পর সাদা বা বিবর্ণ সবুজ, হালকা স্বচ্ছ বিছা ডিম থেকে ফুটে বের হয়। বিছার উভয় পাশে চোখের মত চিহ্ন সম্বলিত উজ্জ্বল লালচে থেকে বাদামী রঙের মাথা থাকে। প্রায় ৫০ দিনে বিছা ২৬ মিমি. পর্যন্ত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়। এরপর খেয়ে তৈরী করা নালীর শেষপ্রান্তে মূককীট দশা পূর্ণ করে। অতিরিক্ত ২০ দিন পর, পূর্ণাঙ্গ মথের নতুন প্রজন্ম বের হয়। শীতল তাপমাত্রায় (প্রায় ১৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস) ও শুষ্ক আবহাওয়াতে এ বিকাশ আনুকূল্য লাভ করে। উষ্ণ আবহাওয়ায় এই সময়কাল কমে যেতে পারে।