ধান

ধানের কাণ্ডের গান্ধী পোকা

Tibraca limbativentris

বালাই

সংক্ষেপে

  • ধানের ফুল আসার পর কচি পাতা মরে যাওয়া, কাণ্ড মরা (ডেড হার্ট) এবং শীষ সাদা হয়ে যাওয়া (হোয়াইট হেড) প্রধান লক্ষন।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

ধান

উপসর্গ

যদিও গান্ধী পোকা সেচ সুবিধাযুক্ত এবং শুষ্ক উভয় প্রকার জমিতেই পাওয়া যায় কিন্তু শুষ্ক জমিতে এ পোকার আক্রমণ বেশী তীব্র হয়ে থাকে। পূর্ণ বয়স্ক ও অপরিনত উভয় পোকাই ধানের চারাকে আক্রমণ করে, ফলে ‘মরা ডিগ’ এবং ‘সাদা শীষ’ লক্ষণ প্রকাশ পায় । ফলে, নতুন গজানো পাতা মরে যায় এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে পুরো কাণ্ডই মরে যায় । এ লক্ষণ ডায়াত্রিয়া গণের কিছু মথের দ্বারাও হয়ে থাকে । ফুল আসার সময় পোকা ধানের শীষে আক্রমণ করে এবং এর ফলে ‘হোয়াইট পেনিকেল’ বা ‘হোয়াইট হেড’ লক্ষণ প্রকাশ পায়। টি লিম্বাটিভেন্টিস পাতা এবং বর্ধনশীল শীষ থেকে রস শোষণ করে, ফলে শস্যে বিষক্রিয়া দেখা যায়। যদি সময়মত নিয়ন্ত্রণ না করা হয় এবং পোকার প্রকোপ অতি মাত্রায় দেখা যায়, তাহলে ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ৮০ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

টেলোনোমাস প্রজাতির পরজীবী দ্বারা গান্ধীপোকার ডিম পরাজীবায়ন করুন। স্বাভাবিক অবস্থায় মাঠে এ পরজীবীকে ছেড়ে দেওয়ার পর কিছু কিছু ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশ পর্যন্ত পরাজীবায়ন লক্ষ্য করা গেছে। অন্যান্য প্রাকৃতিক শত্রুর মধ্যে আছে ইফ্যারিয়া গণের কিছু কিছু মাছি। মেতারাইজিয়াম অ্যানইসোপ্লি, বেউভেরিয়া ব্যাসিনিয়া প্যাসিলিমাইসিস প্রজাতি, করডাইসেপ্স নুটান্স দ্বারা প্রস্তুতকৃত কীটনাশক ব্যবহার করতে হবে। কনিডিয়া সাসপেনশন হিসেবে ধান গাছে প্রয়োগ করা যেতে পারে। পাইপার গণের সকল প্রজাতির গাছ থেকে প্রাপ্ত প্রয়োজনীয় তেলের দ্রবণ (০.২৫-৪%) ডিমের জীবনকালকে প্রভাবিত করে ।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। যদি অন্য কোন উপায় না থাকে, তবে ফসফরাস, পাইরিথ্রয়েড অথবা কারবামিক কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে।

এটা কি কারণে হয়েছে

এ লক্ষণ ধানের কাণ্ডের গান্ধী পোকা টি লিম্বাটিভেন্টিস দ্বারা হয়ে থাকে। মধ্য এবং দক্ষিণ আমেরিকায় এটির আবাস এবং ধান ছাড়াও এ পোকা সয়াবিন, টম্যাটো, এবং গমে আক্রমণ করে থাকে। সাধারণত এ পোকা ফসল তোলার মধ্যবর্তী সময়ে ফসলের মাঠের বাইরে অবস্থান করে এবং নতুন চারা লাগানোর পর পুনরায় চলে আসে। পূর্ণবয়সী ও অপরিণত পোকা উভয়ই গাছ খেয়ে ফেলে এবং এমন একটি অবস্থা সৃষ্টি করে যা ‘সাদা শীষ’ ও ‘মরা ডিগ’ নামে পরিচিত। এ লক্ষণ যথাক্রমে শস্য ও কাণ্ডের ক্ষতি বোঝায়। শুষ্ক ও কম আর্দ্রতায় ধান চাষ করলে ক্ষতির পরিমাণ বেশী হয়। জমিতে জলের পরিমাণ কম থাকলে গাছের গোড়ায় পোকা থাকার সম্ভাবনা থাকে। ফসল পরিণত হলে কাণ্ড শক্ত হয়ে যায় যা পোকার ভক্ষণে বাধা দেয় এবং এর ফলে পোকার সংখ্যা হ্রাস পায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • জমি প্রস্তুতির প্রাক্কালে ফসলের অবশিষ্টাংশ এবং আগাছা ধ্বংস করুন।
  • যেহেতু পতিত জমি পোকার আবাসের জন্য অনুকূল সেহেতু জমির সঠিক ব্যবস্থাপনা অথবা পরিচর্যা নিশ্চিত করুন।
  • ফসলের অন্তর্বর্তী দূরত্ব (প্রতি বর্গ মি. জমিতে ১৫০ টি গাছ) বাড়াতে হবে কারণ বেশী নিবিড়তা পোকাকে প্রাকৃতিক শত্রুর আক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
  • কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে যাতে শিকারী পোকা মারা না পড়ে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন