Boron Deficiency
অভাব
ফসলের উপর এবং এর বৃদ্ধির অবস্থার উপরে নির্ভর করে লক্ষণ বিভিন্ন রকমের হতে পারে, কিন্তু সাধারণত এই লক্ষণ প্রথম বৃদ্ধির পর্যায়ে দৃশ্যমান হয়। প্রথম লক্ষণ কচি পাতার বিবর্ণতা ও মোটা হয়ে যাওয়ার প্রবণতার মাধ্যমে প্রকাশ পায়। হলুদ হয়ে যাওয়ার লক্ষণ সবক্ষেত্রে একই রকমের হয় বা বিক্ষিপ্তভাবে শিরার অভ্যন্তরভাগে ছড়ানো থাকে এবং প্রধান শিরা থেকে দূরত্ব যত বাড়ে হলুদ হয়ে যাওয়ার প্রবণতাও তত বাড়ে। মঞ্জরীর কাছে থাকা পাতা ও কাণ্ড ভঙ্গুর হয়ে যায় এবং গাছ নুইয়ে পড়লে সহজেই ভেঙে পড়ে। পাতা অন্তঃশিরাবাহী অঞ্চলে সামান্য উত্থিত অবস্থায় থাকতে পারে এবং ডগা ও পাতার পার্শ্বীয় ভাগ নিচের দিকে কুঁকড়ে যেতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, পাতার শিরা মোটা হয়ে যেতে পারে এবং উত্থিত অবস্থায় থাকতে পারে। পত্রবৃন্ত পাক খেয়ে যেতে পারে। পর্বমধ্য খর্বাকৃতি হতে পারে, ও শীর্ষভাগের কাছে পাতার ঘণত্ব বৃদ্ধি পেতে পারে। সবথেকে মারাত্মক যেটা তা হলো বোরনের অভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত অংশগুলিতে নেক্রোসিস বা পচন রোগ দেখা দেয়। সংরক্ষণকারী শিকড় প্রায় ক্ষেত্রেই খর্বাকৃতি হয়, এর অগ্রভাগ ভোঁতা ধরনের হয় এবং বোরনের অভাব তীব্র হলে তা চিরে যেতে পারে।
চাষ করার আগে মাটি জৈব পদার্থ সমৃদ্ধ কিনা তা পরীক্ষা করে নিন ও জলধারণ ক্ষমতা পর্যাপ্ত করার জন্যে খামারজাত সার প্রয়োগ করুন।
মাটির অম্ল মাত্রা অত্যধিক হলে সেই মাটিতে বোরনের ঘাটতি দেখা দেবে কারণ এই অবস্থায় এই মৌলটি এমন রাসায়নিক গঠনে থাকে যা উদ্ভিদ গ্রহণ করতে পারে না। যে মাটিতে জৈব পদার্থের পরিমান ১.৫%-এর কম থাকে বা বেলে মাটিতেও (গাছের খাদ্যপ্রাণের লিচিং হতে দেখা যায়) বোরনের অভাব দেখা দেয়। এই ক্ষেত্রে বোরন সরাসরি প্রয়োগ করলে এই ঘাটতি মেটে না কারণ উদ্ভিদ তা সরাসরি গ্রহণ করতে পারে না। পাতায় যে লক্ষণগুলি প্রকাশ পায় সেগুলি অন্যান্য রোগের লক্ষণের সাথে সমজাতীয় বলে মনে হতে পারে: ফলস্ ক্ষুদ্রাকৃতি মাকড়, জিঙ্কের অভাবজনিত রোগ বা আয়রনের মৃদু অভাবজনিত রোগ। সংরক্ষণকারী শিকড়ে, ফোসকার মতো ফোলা অংশ ও চিড় ধরার মতো লক্ষণ শিকড়-গ্রন্থির নেমাটোড বা মাটির আর্দ্রতার দ্রুত পরিবর্তনের সঙ্গে সমজাতীয় মনে হয়। ক্যালসিয়ামের অভাবজনিত রোগেও কাণ্ডের অগ্রভাগ ও শিকড়ের অগ্রভাগের মৃত্যু হয়, কিন্তু ডগার নিচে থাকা পাতা মোটা হয়ে যায় না এবং শিকড়ের অন্তঃভাগ হলুদ হয়ে যায় না।