ভুট্টা

জিঙ্কের অভাবজনিত রোগ

Zinc Deficiency

অভাব

সংক্ষেপে

  • কিনারা থেকে শুরু করে পাতা হলুদ হতে শুরু করে।
  • প্রধান পত্রশিরা সবুজই থাকে।
  • কাণ্ডের চারপাশে বিকৃত পাতাগুলো গুচ্ছাকার হয়ে যায়।
  • গাছ খর্বাকৃতি হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

31 বিবিধ ফসল
আপেল
কলা
শিম
করলা
আরো বেশি

ভুট্টা

উপসর্গ

জাতভেদে জিঙ্কের অভাবজনিত রোগের লক্ষণের তারতম্য হয় কিন্তু বেশ কিছু প্রভাব সব ক্ষেত্রে একই থাকে। অনেক জাতের গাছের পাতায় মূল শিরা সবুজ থাকে কিন্তু পাতাগুলো হলুদ হয়ে যায়। কিছু জাতে শুধু কচি পাতা আক্রান্ত হয়, আবার কিছু জাতে নবীন ও পুরাতন সব পাতাই আক্রান্ত হয়। নতুন পাতাগুলো ছোট, সরু এবং পাতার কিনারা ঢেউ খেলানো হয়। সময়ের সাথে পাতার হলদে দাগগুলো তামাটে বর্ণ ধারণ করে এবং পাতার কিনারা থেকে পচন শুরু হয়। কিছু ফসলে, কাণ্ডের মধ্যপর্বের দৈর্ঘ্য খর্বাকৃতি হয়ে পড়ে, ফলে পাতাগুলো কাণ্ডের চারপাশে গুচ্ছাকারে সজ্জিত হয়। কাণ্ডের মধ্যপর্বের দৈর্ঘ্য খর্বাকৃতি হওয়ার কারণে এবং কচি পাতার বৃদ্ধি বাধাপ্রাপ্ত হওয়ার জন্য (পাতা খর্বাকৃতি হয়) পাতার আকার বিকৃত হয় এবং দৈহিক বৃদ্ধিও বাধাগ্রস্ত হয়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

চারা রোপণের কয়েকদিন পরে বীজতলায় কিংবা জমিতে জৈবসার প্রয়োগ করলে তা জিঙ্কের অভাবজনিত রোগের প্রকোপের সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

  • জিঙ্ক (Zn) সমন্বিত সার ব্যবহার করুন।
  • উদাহরণ: জিঙ্ক সালফেট (ZnSO4) পাতায় স্প্রে হিসাবে ব্যবহৃত হয়।
  • আপনার জমি ও ফসলের জন্য কোন পণ্যটি সেরা হবে এবং এটি কি মাত্রায় ব্যবহার করতে হবে সে সম্পর্কে জানতে কোন কৃষি উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করুন।

আরো সুপারিশ:

  • সর্বোত্তম হারে ফসল আহরণ করতে মরশুম শুরু হওয়ার আগে জমির মাটি পরীক্ষার সুপারিশ রয়েছে।
  • বীজ বপন বা চারা রোপণ করার আগে মাটিতে জিঙ্ক প্রয়োগ করা উচিৎ।
  • বীজের গায়ে জিঙ্কের প্রলেপ দিলে তা ফসলে পুষ্টির যোগান দিতে পারে।

এটা কি কারণে হয়েছে

জিঙ্কের অভাব বেশি প্রকট হয় স্বল্প জৈবসার সমৃদ্ধ ক্ষারীয় বেলে মাটিতে। মাটিতে প্রচুর পরিমাণ ফসফরাস কিংবা ক্যালসিয়ামের উপস্থিতিও ( ক্যালকেরিয়াস মাটিতে) জিঙ্কের সহজলভ্যতাকে বাধাগ্রস্ত করে। বস্তুতঃ ফসফরাস প্রয়োগে জিঙ্কের সহজলভ্যতার ক্ষেত্রে বিপরীত প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়। মাটিতে ক্যালসিয়াম সমৃদ্ধ পদার্থ যেমন চুনাপাথর কিংবা চক প্রয়োগ করলেও ( চুন প্রয়োগ) মাটির অম্লতা বাড়ে, ফলে জিঙ্ক সঞ্চয়ন ক্ষমতা কমে যায়, (এমনকি মাটিতে জিঙ্কের পরিমাণ অপরিবর্তিত থাকলেও) গাছ জিঙ্ক আহরণ করতে পারে না। গাছের অঙ্গজ বৃদ্ধি পর্যায়ে মাটি ঠাণ্ডা এবং ভেজা থাকলেও জিঙ্কের অভাবজনিত রোগ দেখা দিতে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • বীজ বপন বা চারা রোপণের পূর্বে মাটিতে জৈব সার প্রয়োগ করুন।
  • মাটিতে চুন প্রয়োগ করবেন না, কারণ এতে মাটির অম্লতা বেড়ে যায় ফলে গাছ মাটি থেকে জিঙ্ক আহরণ করতে পারে না।
  • জিঙ্কের অভাব সহ্য করতে পারে এমন সহনীয় জাত অথবা মাটি থেকে জিঙ্ক ভালোভাবে শোষণ করতে পারে এমন জাত চাষ করুন।
  • জিঙ্ক সমৃদ্ধ সার প্রয়োগ করুন।
  • মাটির অম্লতা বাড়ানোর জন্য অ্যামোনিয়াম সালফেট ব্যবহার না করে ইউরিয়া সার ব্যবহার করুন।
  • কখনোই অতিরিক্ত ফসফরাস সার ব্যবহার করবেন না।
  • নিয়মিত সেচের জলের গুণাগুণ পর্যবেক্ষণ করুন।
  • জমিতে সবসময় এমনভাবে সেচ দেবেন যাতে জমি কখনো শুকনো থাকে আবার কখনো প্লাবিত থাকে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন