Nitrogen Deficiency
অভাব
গাছের পুরাতন পাতায় প্রথম লক্ষণ প্রকাশ পায় এবং ধীরে ধীরে কচি পাতায় তা ছড়িয়ে পড়ে। মৃদু অবস্থায়, পুরাতন পরিণত পাতা বিবর্ণ সবুজ বর্ণে রূপান্তরিত হয়। যদি ব্যবস্থা না নেওয়া হয়, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই পাতাগুলি ক্লোরোফিলবিহীন হয়ে পড়ে এবং সেই সঙ্গে পত্রশিরা এবং পত্রবৃন্ত হালকা লাল বিবর্ণতা প্রদর্শন করে। এই অভাব ক্রমাগত চলতে থাকলে, পাতাগুলি অবশেষে হলদেটে-সাদা (পত্রশিরাসহ) বর্ণে রূপান্তরিত হয় এবং কুঁকড়ে যেতে পারে বা বিকৃতভাবে বৃদ্ধি পেতে পারে। কচি পাতা বিবর্ণ সবুজই রয়ে যায় কিন্তু স্বাভাবিকের তুলনায় কম বাড়ে। শাখাপ্রশাখা কমে যাওয়ায় গাছের একটা লম্বাটে, সরু গড়ন লক্ষ্য করা যায় কিন্তু উচ্চতা প্রায়ক্ষেত্রে স্বাভাবিকই থাকে। জলের চাপজনিত প্রভাবে গাছ অসহনশীল হয়ে পড়ে এবং পাতা দুর্বল হয়ে যাওয়াটা এক্ষেত্রে স্বাভাবিক। পাতার অকালমৃত্যু এবং ঝরে পড়ে যাওয়ার মতো ঘটনাও ঘটতে পারে যার ফলে ফসলের উৎপাদন লক্ষ্যনীয়ভাবে হ্রাস পায়। সার প্রয়োগের মাধ্যমে নাইট্রোজেন মাটিতে যোগ করলে কয়েকদিনের মধ্যে উন্নতি স্পষ্টভাবে বোঝা যায়।
মাটিতে উচ্চ মাত্রায় জৈবিক পদার্থের উপস্থিতি মাটির গঠন আরো দৃঢ় করতে পারে এবং মাটির ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করে জল ও পুষ্টি ধরে রাখার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। খামারজাত সার, মিশ্র সার, পিট সার বা সাধারণভাবে মাটিতে পাখির বিষ্ঠা, বিছুটি পাতার গাদ, হর্ন মিল বা নাইট্রোলাইম প্রয়োগ করে জৈবিক পদার্থ যোগ করা যেতে পারে। বিছুটি পাতার গাদ সরাসরি পাতার উপরে স্প্রে করা যেতে পারে।
উদ্ভিদের অঙ্গজ বৃদ্ধির জন্যে উচ্চ মাত্রায় নাইট্রোজেনের প্রয়োগ গুরুত্বপূর্ণ। অনুকূল আবহাওয়ায়, দ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ফসলের জন্যে ভালো মাত্রায় নাইট্রোজেনের সরবরাহ গুরুত্বপূর্ণ যাতে উদ্ভিদের অঙ্গজ বৃদ্ধি এবং ফল/শস্য উৎপাদন চূড়ান্ত মাত্রায় পৌঁছায়। নাইট্রোজেনের অভাব বালুকাময়, উত্তম নিকাশী ব্যবস্থা সম্পন্ন জমিতে লক্ষ্য করা যায়, সঙ্গে স্বল্প মাত্রায় জৈবিক পদার্থ থাকে যেটা পুষ্টি উপাদানের লিচিং ঘটায়। ঘন ঘন বৃষ্টিপাত, বন্যা বা ভারী মাত্রায় জলসেচ মাটি থেকে নাইট্রোজেনকে ধুয়ে দেয় এবং অভাব তৈরি করে। খরা জনিত পরিস্থিতির ফলে সৃষ্ট অবস্থার চাপ জল ও পুষ্টির শোষনে বাধা দেয়, ফলে পুষ্টির অসম সরবরাহ ঘটে। পরিশেষে, মাটির pH মাত্রাও গাছের নাইট্রোজেন প্রাপ্তির ক্ষেত্রে একটা ভূমিকা পালন করে। নিম্ন অথবা উচ্চ মাত্রার pH উদ্ভিদের নাইট্রোজেন শোষনের ক্ষেত্রে ঋণাত্মক প্রভাব ফেলে।