আম

ফসফরাসের অভাবজনিত রোগ

Phosphorus Deficiency

অভাব

সংক্ষেপে

  • পাতায় বেগুনী রঞ্জক পদার্থের আবির্ভাব হয় - যা পাতার কিনারা থেকে শুরু হয়।
  • পাতা কুঁকড়ে যায় এবং গাছ খর্বাকৃতি হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

59 বিবিধ ফসল
বাদাম
আপেল
খুবানি
কলা
আরো বেশি

আম

উপসর্গ

ফসফরাসের অভাবজনিত উপসর্গ যে কোন স্তরেই দেখা দিতে পারে কিন্তু কচি চারাগাছেই এর প্রভাব বেশী বোঝা যায়। অন্যান্য পুষ্টিদায়ক উপাদানের তুলনায় বিচার করলে ফসফরাসের অভাবজনিত উপসর্গ সাধারণভাবে কোন গভীর প্রভাব ফেলে না এবং উপসর্গকে চিহ্নিত করাও কঠিন হয়ে দাঁড়ায়। মৃদু অভাবজনিত উপসর্গের সম্ভাব্য চিহ্ন হলো উদ্ভিদ বামনাকৃতি হয়ে যায় বা উদ্ভিদের বৃদ্ধি থমকে যায়। যা'হোক, পাতায় কোন নির্দিষ্ট উপসর্গ লক্ষ্য করা যায় না। মারাত্মক অভাবজনিত ক্ষেত্রে, কাণ্ড ও বৃন্তে গাঢ় সবুজ থেকে বেগুনী বিবর্ণতা দেখা যায়। পুরাতন পাতার নীচের দিকেও বেগুনী রঞ্জক পদার্থের আবির্ভাব ঘটে এবং তা পাতার অগ্রভাগ থেকে শুরু হয়ে পাতার কিনারার দিকে এবং পরে পত্রফলকের বাকি অংশে ছড়িয়ে যায়। পাতা চর্মসদৃশ হয়ে যেতে পারে এবং পাতার শিরা অংশ বাদামী জালিকাকার গঠন তৈরী করে। কোন কোন ক্ষেত্রে পাতার অগ্রভাগে পোড়া অংশ এবং পাতার কিনারা বরাবর বর্ণহীনতা ও মরা কোষকলা, শুষ্ক দাগের আবির্ভাব থেকে ফসফরাসের ঘাটতি চিহ্নিত করা যায়। ফুল ও ফলের আবির্ভাব ঘটে কিন্তু ফলের উৎপাদনে ঘাটতি দেখা যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

খামারজাত সার বা অন্যান্য দ্রব্য (জৈব সার, মিশ্র সার ও পক্ষীমলসার) বা উভয়ের মিশ্রণ প্রয়োগ করলে মাটিতে ফসফরাসের অভাবজনিত ঘাটতি পূরণ হয়। ফসল চাষের পরে জমিতে পড়ে থাকা উদ্ভিদ দেহের অবশিষ্টাংশ মাটিতেই মিশিয়ে দিলে তা দীর্ঘমেয়াদে মাটিতে ফসফরাসের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ও সেইসঙ্গে তা মাটির গঠনেরও উন্নতি সাধন করে। জৈব পদার্থ মাটিতে পচে গেলে তা গাছে প্রয়োজনীয় ফসফরাসের স্থায়ী জোগান দেয়।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

  • ফসফরাস (P) সমৃদ্ধ সার ব্যবহার করুন।
  • উদাহরণ: ডাই-অ্যামোনিয়াম ফসফেট (DAP), সিঙ্গল সুপার ফসফেট (SSP)
  • মাটি ও ফসলের জন্য সেরা পণ্য কোনটি এবং এর প্রয়োগের মাত্রা জানতে কৃষি বিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে পরামর্শ করুন।

আরো সুপারিশ:

  • আপনার ফসলের উৎপাদন সর্বোত্তম মাত্রায় নিয়ে যেতে ফসল মরশুম শুরু হওয়ার আগে মাটি পরীক্ষার পরামর্শ রয়েছে।

এটা কি কারণে হয়েছে

বিভিন্ন ধরনের ফসলের ক্ষেত্রে ফসফরাসের অভাবজনিত ফলাফল বিভিন্ন ধরনের হয়। উদ্ভিদের শিকড় মাটিতে উপস্থিত জলে দ্রবীভূত ফসফেট আয়ন শোষণ করে। চুনা মাটিতে উচ্চ মাত্রায় ক্যালসিয়ামের উপস্থিতি থাকলে সেখানে ফসফরাসের ঘাটতি থাকতে পারে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে, ফসফরাসের লভ্যতা কম হয় কারণ ফসফরাস মাটির কণায় সম্পৃক্ত থাকে এবং উদ্ভিদ এ ফসফরাস শোষণ করতে পারে না। ক্ষারীয় ও আম্লিক মাটি উভয়ক্ষেত্রেই ফসফরাসের লভ্যতা কম হয়। মাটিতে কম জৈব পদার্থের উপস্থিতি বা লৌহ সমৃদ্ধ মাটিও সমস্যার সৃষ্টি করে। ঠাণ্ডা আবহাওয়া গাছের বৃদ্ধি এবং শিকড়ের কাজের ক্ষেত্রে বাধার সৃষ্টি করে এবং ফসফরাসের ঘাটতি তৈরী করে। খরা পরিস্থিতি দেখা দিলে বা রোগ সৃষ্টি হলে তা শিকড়ের জল ও পুষ্টি বিশোষণের ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা তৈরী করে যার ফলে ফসফরাসের অভাবজনিত উপসর্গ সৃষ্টি হয়। অন্য দিকে, মাটির আর্দ্রভাব উদ্ভিদের ফসফরাস গ্রহণের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় এবং ফলের উৎপাদনও বৃদ্ধি পায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • মাটি থেকে ফসফরাস গ্রহণ করতে সক্ষম এমন জাত ব্যবহার করুন।
  • সুষম মাত্রায় সার প্রয়োগ নিশ্চিত করুন।
  • ফসল চাষের পরে জমিতে পড়ে থাকা উদ্ভিদ দেহের অবশিষ্টাংশ মাটিতেই মিশিয়ে দিন।
  • সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে জৈব ও রাসায়নিক সার ব্যবহার করুন যাতে উদ্ভিদ মাটি থেকে সমমাত্রায় পুষ্টি লাভ করতে পারে।
  • যদি প্রয়োজন হয় তবে মাটিতে চুন প্রয়োগ করে মাটির উপযুক্ত অম্লত্ব মাত্রাকে রক্ষা করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন