Magnesium Deficiency
অভাব
ম্যাগনেসিয়ামের অভাবজনিত রোগে আক্রান্ত গাছের পুরাতন পাতায় আন্তঃশিরায় হলুদ বর্ণ কিংবা ক্ষয়িষ্ণু সবুজ দাগ সৃষ্টি হয়। সাধারণত পাতার কিনারা থেকে এ রোগ প্রথম প্রকাশ পায়। দানাদার ফসলে ম্যাগনেসিয়ামের স্বল্প অভাবের কারণে পাতায় সবুজ রঙের সরলরৈখিক গুটিকার মতো দাগ সৃষ্টি হয়; ক্রমশঃ এ দাগগুলো হলুদ বর্ণযুক্ত আন্তঃশিরার দিকে অগ্রসর হয়। রোগ তীব্র হলে, দাগগুলো পাতার কিনারা থেকে মধ্যভাগে বিস্তার লাভ করে এবং ছোট ছোট শিরাগুলোও আক্রান্ত হয়। পাতায় লালচে অথবা বাদামী বর্ণের দাগ দেখা যায়। দাগগুলো ক্রমশঃ পচন সৃষ্টি করে এবং পাতাগুলো খসখসে ধরণের হয় ও পচনশীল জায়গাগুলো বিকৃত হয়ে যায়। পরিশেষে সমস্ত পাতা হলুদ বর্ণ ধারণ করে; পাতা তাড়াতাড়ি মারা যায় এবং অকালে ঝরে পড়ে। শিকড়তন্ত্র সীমিত হয়ে যাওয়ার ফলে গাছের জীবনীশক্তিও কমে যায়।
জমিতে ম্যাগনেসিয়াম সমৃদ্ধ পদার্থ যেমন চুনা শৈবাল, ডলোমাইট অথবা ম্যাগনেসিয়াম চুনাপাথর প্রয়োগ করুন। মাটিতে ভারসাম্যপূর্ণ পুষ্টির উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য জৈব সার, জৈব মালচ্ অথবা কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করুন। এ বস্তুগুলো জৈব পদার্থ ও বিভিন্ন পুষ্টি সমৃদ্ধ এবং মাটিতে ধীরে ধীরে এগুলি সরবরাহিত হয়।
হালকা, বেলে মাটি, স্বল্প পুষ্টি সমৃদ্ধ কিংবা স্বল্প জল ধারণ ক্ষমতা সম্পন্ন অম্ল মাটিতে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব বেশি দেখা যায়। কারণ এসব মাটিতে ম্যাগনেসিয়াম খুব সহজেই মাটি থেকে হারিয়ে যেতে পারে। যেসব জমিতে পটাশিয়াম কিংবা অ্যামোনিয়ামের মাত্রা বেশি থাকে অথবা এসব সার বেশি পরিমাণে প্রয়োগ করা হয়, সেসব জমিতেও ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ কম থাকে, কারণ এ পুষ্টিগুলো ম্যাগনেসিয়ামের সহজলভ্যতায় বাধা দেয়। ম্যাগনেসিয়াম উদ্ভিদের অভ্যন্তরে শর্করা পরিবহনে সহায়তা করে এবং পাতার ক্লোরোফিলের অন্যতম উপাদান হল ম্যাগনেসিয়াম। ম্যাগনেসিয়ামের অভাব যথেষ্ট পরিমাণে দেখা দিলে পুরাতন পাতার ক্লোরোফিলে ম্যাগনেসিয়ামের পরিমাণ কমতে থাকে, কারণ এ সময় কচি পাতাগুলোতে ক্লোরোফিলের প্রয়োজন হয় বেশি। মূলতঃ এ কারণেই পাতায় আন্তঃশিরা হলুদ বর্ণ ধারণ করে। আলোর তীব্রতাও ম্যাগনেসিয়ামের উপস্থিতিকে প্রভাবিত করে। অধিক আলোতে ম্যাগনেসিয়ামের অভাব প্রকট হয়।