সয়াবিন

পটাশিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণ

Potassium Deficiency

অভাব

5 mins to read

সংক্ষেপে

  • পাতা হলুদ হয়ে যায় - যা পাতার কিনারা থেকে শুরু হয়।
  • প্রধান শিরাসমূহ গাঢ় সবুজ থাকে।
  • পাতা কুঁকড়িয়ে যায়।
  • গাছ খর্বাকার আকৃতি ধারণ করে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

56 বিবিধ ফসল
বাদাম
আপেল
খুবানি
কলা
আরো বেশি

সয়াবিন

উপসর্গ

প্রধানতঃ পুরনো পাতায় এ লক্ষণ দৃশ্যমান হয় এবং চূড়ান্ত পর্যায়ে কচি পাতা ক্ষতিগ্রস্ত হয়। পাতার কিনারা ঘেঁষে ও পাতার আগা সামান্য হলুদাভ হতে থাকলে তা মৃদু পটাসিয়ামের ঘাটতি বলে চিহ্নিত করা হয় এবং এই ঘটনাই পরে আগা পোড়া রোগের জন্ম দেয়। পত্রফলক কিছুটা বিবর্ণ হয়ে যায় কিন্তু প্রধান শিরা গাঢ় সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে (আন্তঃশিরা বিবর্ণতা)। যদি সংশোধন করা না হয, তবে এই হলুদাভ (ক্লোরোটিক) দাগগুলি শুকনো, চামড়ার মতো বা গাঢ় বাদামী ঝলসানো দাগে (নেক্রোসিস) পরিণত হয় যা সাধারণত পাতাটির প্রান্ত থেকে মধ্যপর্ব পর্যন্ত অগ্রসর হয়। তবে, প্রধান শিরা সবুজ থাকে। পাতাগুলো কুঁচকে যায় এবং চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে ওঠে এবং প্রায়শই অকালমৃত হয়ে ঝরে পড়ে। কচি পাতা ছোট, ফ্যাকাশে এবং উপরের দিকে বাঁকানো থাকে। পটাশিয়ামের অভাবের ফলে গাছ খাটো হয় এবং রোগের প্রতি সংবেদনশীল হয় এবং অন্যান্য চাপ যেমন খরা এবং তুষারের প্রতিও সংবেদনশীল হয়ে রোগে আক্রান্ত হয়। কিছু ক্ষেত্রে, ফল গুরুতরভাবে বিকৃত আকার ধারণ করতে পারে।

Recommendations

জৈব নিয়ন্ত্রণ

বছরে অন্ততঃ একবার ছাই বা বোদমাটি আকারে জৈবসার মাটিতে প্রয়োগ করুন। কাঠের ছাইও প্রচুর পরিমানে পটাশিয়াম সমৃদ্ধ। আম্লিক মাটিতে চুন প্রয়োগ করার মাধ্যমে কিছু কিছু মাটিতে পটাশিয়ামের ধারণক্ষমতা বৃদ্ধি করা যেতে পারে এবং এতে লিচিং কমে আসে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

  • পটাশিয়াম (K) সমৃদ্ধ সার ব্যবহার করুন।
  • উদাহরণ: মিউরেট অফ পটাশ (MOP), পটাশিয়াম নাইট্রেট (KNO3)।
  • মাটি ও ফসলের জন্য সেরা পণ্য এবং প্রয়োগের মাত্রা জানার জন্য কৃষি বিষয়ক উপদেষ্টার সঙ্গে আলোচনা করুন।

আরো সুপারিশ:

  • সর্বোত্তম হারে ফসল পাওয়ার জন্য ফসল মরশুম শুরু হওয়ার আগে মাটি পরীক্ষা করার জন্য সুপারিশ করা হচ্ছে।
  • মাঠ প্রস্তুতির সময় ও গাছে ফুল আসার সময়ে সার প্রয়োগ করলে ভালো।
  • গাছের পাতায় স্প্রে করার থেকে মাটিতে সার প্রয়োগ করলে গাছ আরো ভালোভাবে পটাশিয়াম গ্রহণ করতে পারে।

এটা কি কারণে হয়েছে

মাটিতে পটাশিয়ামের মজুত কম থাকলে বা গাছের জন্য সহজলভ্যতার অভাবে পটাসিয়ামের ঘাটতি দেখা দিতে পারে। সীমিত জৈব পদার্থ সম্পন্ন নিম্ন মাত্রার pH সমন্বিত বেলে বা হালকা মাটিতৈ খাদ্যপ্রাণের লিচিং এবং খরা, উভয় কারণেই সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে। ভারী সেচ ও প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এমন এলাকায় মূল অঞ্চল থেকে খাদ্যপ্রাণ ধুয়ে যেতে পারে এবং পটাশিয়ামের অভাব দেখা দিতে পারে। গরম তাপমাত্রা বা খরা অবস্থার ফলে উদ্ভিদের জন্য জল ও পুষ্টি সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়। উচ্চ মাত্রার ফসফরাস, ম্যাগনেসিয়াম এবং লোহাও পটাশিয়ামের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে পারে। উদ্ভিদের কলাতন্ত্রে জল পরিবহন, কলার দৃঢ়তা বৃদ্ধি এবং বায়ুমণ্ডলের সঙ্গে গ্যাস বিনিময়ে পটাশিয়াম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। পটাশিয়ামের অভাবজনিত লক্ষণগুলো অপরিবর্তনীয় থাকে, এমনকি যদি পরে উদ্ভিদে পটাশিয়াম যোগ করা হয় তবুও।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • মাটিতে অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব অতিরিক্ত মাত্রায় থাকলে মুখ্য ও গৌণ উভয় প্রকার খাদ্যপ্রাণের অভাব দেখা যেতে পারে, তাই মাটির সঠিক pH মাত্রা পরীক্ষা করে নিন এবং মাটি থেকে সর্বোত্তম সুবিধা পেতে যদি প্রয়োজন হয় তবে মাটিতে চুন প্রয়োগ করুন।
  • পটাশিয়াম দ্রুত গ্রহণে সক্ষম এমন জাতের চাষ করুন।
  • গাছ যাতে সঠিকভাবে খাদ্যপ্রাণ সংগ্রহ করতে পারে সেজন্য আনুপাতিক হারে সার প্রয়োগ করুন।
  • মৃত্তিকায় জৈবপদার্থ বাড়ানোর জন্য গোবর সার অথবা উদ্ভিদের মালচ্‌ ব্যবহার করুন।
  • নিয়মিত গাছে জলসেচ দিন এবং মাঠ ভাসিয়ে জলসেচ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন