আম

টি ফ্লাশ ওয়ার্ম

Cricula trifenestrata

বালাই

সংক্ষেপে

  • গাছের পত্রমোচন হয়।
  • পাতায় বাইরে থেকে খাওয়ার চিহ্ন বর্তমান থাকে।
  • শুঁয়োপোকার উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

2 বিবিধ ফসল

আম

উপসর্গ

শুঁয়োপোকা গাছ থেকে সমস্ত পাতা ঝরিয়ে ফেলতে পারে এবং গাছের মুকুলের সংখ্যা হ্রাস করতে পারে। গাছে বাইরের দিক থেকে খাওয়াজনিত ক্ষতি শুরু হয় এবং পরে কেন্দ্র ও শীর্ষে তা ছড়িয়ে পড়ে। গুরুতরভাবে আক্রান্ত গাছ দুর্বল হয়ে যায় এবং ফুল বা ফল আদৌ উৎপন্ন নাও হতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

হাতে করে শুঁয়োপোকার আক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে, দীর্ঘ-হাতলওয়ালা টর্চ ব্যবহার করুন যাতে যেখানে শুঁয়োপোকা দল বেঁধে থাকে সেই জায়গাটি উত্তপ্ত হতে পারে এবং মাটিতে পড়ে যায়। হাত-দস্তানা পরে শুঁয়োপোকাগুলিকে সংগ্রহ করুন, এবং মাটিতে পুঁতে দিন। নবীন বয়সী শুঁয়োপোকার দলবদ্ধ হয়ে থাকা ও ডিম পাড়ার আশ্রয়স্থল হিসাবে ব্যবহৃত পাতা অপসারিত করে ধ্বংস করুন। জৈবিক নিয়ন্ত্রণের জন্য, পরজীবি যেমন টেলিনোমাস প্রজাতি ডিম ও পিউপার জন্য কার্যকরী হয়, এবং বিউভেরিয়া ব্যাসিয়ানা প্রাপ্তবয়স্ক মথের উপরে কার্যকরী হয়। প্রাকৃতিক শিকারীরাও রোগের প্রাদুর্ভাবকে নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে মূল ভূমিকা পালন করে। পাশাপাশি, নিম-ভিত্তিক কীটনাশক যেমন অ্যাজাডির‍্যাকটিন এই সমস্ত বালাইকে নিয়ন্ত্রণের জন্য কার্যকরী বলে প্রমাণিত হয়েছে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

মথকে প্রায়ক্ষেত্রেই রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার ছাড়াই নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে, বিশেষ করে যদি গুরুতর আক্রমণ আগেভাগেই চিহ্নিত করা যায়। একমাত্র শেষ উপায় হিসাবে, রাসায়নিক দমন পদ্ধতি যেমন মিথাইল প্যারাথিয়ন ও এণ্ডোসালফানকে বিবেচনা করাই ভাল হবে, যেগুলি খুবই উচ্চমাত্রায় কার্যকরী বলে জানা গিয়েছে। যখন কীটনাশক বা যে কোন রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা হয়, তখন সুরক্ষামূলক পোষাক পরা ও লেবেলের গায়ে লেখা নির্দেশাবলী সাবধানে পড়ে নেওয়াটা গুরুত্বপূর্ণ। বিধিনিষেধ বিভিন্ন দেশের জন্য বিভিন্ন রকম হয়, তাই আপনার অঞ্চলের জন্য নির্দিষ্ট বিধিনিষেধ যেন আপনি অনুসরণ করেন সেটা আপনাকে নিশ্চিত করতে হবে। এটি সুরক্ষার নিশ্চয়তা দেয় এবং সফল প্রয়োগের সুযোগ বৃদ্ধি করে।

এটা কি কারণে হয়েছে

বাংলাদেশ, মায়ানমার, ও ভারতে টি ফ্লাশ ওয়ার্ম আম গাছের একটি গুরুত্বপূর্ণ বালাই, কিন্তু এটিকে রেশম উৎপাদনের সুযোগ হিসাবেও উপস্থাপিত করা যায়। স্বল্প বয়স্ক শুঁয়োপোকা দলবদ্ধ হয়ে খায় এবং বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ে। যখন পর্যাপ্ত খাদ্য থাকে না, বড়ো বড়ো লার্ভাগুলো গাছ থেকে নীচে পড়ে যেতে পারে এবং আরও খাদ্যের জন্য নতুন গাছের দিকে গুটি গুটি করে অগ্রসর হয়। এই কীটের জীবনচক্রে বেশ কয়েকটি দশা থাকে। সম্পূর্ণ খাবার খাওয়ার পরে, শুঁয়োপোকা একগুচ্ছ পাতার উপরে বা কাণ্ডের গায়ে রেশমের গুটি তৈরী করে। প্রাপ্তবয়স্ক মথ রাত্রিতে অভিযান চালায় এবং এদের গায়ের রঙের তারতম্য দেখা যায়, পুরুষ পতঙ্গের অগ্রডানার উপরে দুটি কালো দাগ আছে, কিন্তু স্ত্রী পোকার অগ্রডানার উপরে আরও বড় ও আরও বেশী অসম দাগ থাকে। প্রতি বছর এই বালাইয়ের চারটি প্রজন্মের দেখা মিলতে পারে। বালাই হওয়া সত্বেও, এই মথ উচ্চ-মানের রেশম উৎপন্ন করে। ইন্দোনেশিয়াতে, এই বালাইকে বৃহদাকারে রেশম চাষ করার জন্য ব্যবহার উপযোগী করে তোলা হয়েছে, যার ফলে গ্রামীণ জীবনে তা সম্ভাব্য আয়ের উৎস হিসাবে গড়ে উঠেছে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • গাছের চারিপাশ থেকে আগাছা পরিষ্কার করুন এবং প্রাপ্তবয়স্ক মথ পোকাকে আকর্ষণ করে মেরে ফেলতে আলোর ফাঁদ পাতুন।
  • অতিরিক্ত সতর্কতা হিসাবে, কীট দ্বারা ক্ষতির কোন চিহ্ন দেখা যাচ্ছে কিনা তা নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করুন যাতে আপনি আগাম এবং কার্যকরীভাবে হস্তক্ষেপ করতে পারেন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন