লাল ছোলা ও অড়হর

গুচ্ছ মথ

Lymantriinae

বালাই

5 mins to read

সংক্ষেপে

  • পাতায় খাওয়ার ফলে ক্ষতি হয়।
  • গুরুতর সংক্রমণ হলে পাতা ঝরে যায়।
  • এই পতঙ্গের শুঁয়োপোকার দশায় আক্রমণে ক্ষতি হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

12 বিবিধ ফসল
লেবু জাতীয় ফসল
বেগুন
পেয়ারা
আম
আরো বেশি

লাল ছোলা ও অড়হর

উপসর্গ

শুঁয়োপোকা পাতা চিবিয়ে খাওয়ার ফলে উদ্ভিদের মুড়িয়ে যাওয়ার মতো চেহারা তৈরী হয়। এরা ফসল ও উদ্ভিদের বিবিধ জাতের থেকেই খেয়ে থাকে। সংখ্যায় অগুন্তি লার্ভা পাতা ঝরে যাওয়ার কারণ হয়। এছাড়াও কচি ফলে লার্ভার ছোট্ট কামড়ের কারণে ফলের রঙ পরিবর্তিত হয় এবং ফলের ত্বক খসখসে হয়ে ওঠে।

Recommendations

জৈব নিয়ন্ত্রণ

গুচ্ছ মথ পতঙ্গের হাত থেকে বাঁচতে ব্যাসিলাস থুরিঞ্জিয়েন্সিস ব্যবহার করা যেতে পারে, বিশেষ করে এই পতঙ্গগুলি স্বল্প বয়স্ক থাকাকালীন অবস্থায়। ব্যাসিলাস থুরিঞ্জিয়েন্সিস কেবলমাত্র সেই শুঁয়োপোকাকে মারতে পারে যেগুলি স্প্রে করা হয়েছে এমন পাতা খায়। প্রথম স্প্রে করার ৭-১০ দিন পরে দ্বিতীয়বার প্রয়োগ করার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে কেননা এটি স্বল্প সময়ব্যাপী কার্যকর থাকে। স্পিনোস্যাডও কার্যকরী হয় কিন্তু এটি মৌমাছি ও প্রাকৃতিক শত্রু পোকাদেরও মেরে ফেলে। শুকিয়ে যাওয়ার পরেও কয়েক ঘন্টা ধরে এটি মৌমাছিদের কাছে বিষতুল্য থাকে। স্পিনোস্যাড ফুল ধরেছে এমন উদ্ভিদে প্রয়োগ করা উচিৎ নয়।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

গুচ্ছ মথের আক্রমণকে সাধারণত প্রাকৃতিক শত্রু পোকা দিয়েই নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাই কীটনাশকের ব্যবহার অপ্রয়োজনীয় যদি না উদ্ভিদ কচি হয় এবং বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সমস্যা দেখায়। যদি ব্যাপক হারে পত্রমোচন হয়, রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণই একমাত্র সমাধান হতে পারে। আপনার অঞ্চলে কোন ধরণের কীটনাশক এই ব্যবহারের জন্য অনুমোদিত তা খুঁজে বের করাটা গুরুত্বপূর্ণ। মুদ্রিত আকারে উল্লিখিত আছে এমন কিছু সক্রিয় উপাদান, যেমন ক্লোরান্ট্র্যানিলিপ্রোল, মেথোক্সিফেনোজাইড, ও ফসমেট গুচ্ছ মথের নিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত হয়। মনে রাখুন যে বসন্তকালে শুঁয়োপোকার অন্যান্য সমস্যাজনিত কারণে স্প্রে ব্যবহার করলে তা গুচ্ছ মথের নিয়ন্ত্রণেও সাহায্য করতে পারে।

এটা কি কারণে হয়েছে

মূলত অরজিয়া, ড্যাসিচিরা ও ইউপ্রোক্টিস জেনেরা নামক গুচ্ছ মথের আক্রমণে উদ্ভিদের ক্ষতি সারা বিশ্ব জুড়েই পরিচিত। প্রাপ্তবয়স্ক মথের সারা দেহে রোম থাকে এবং তা বাদামী, ধূসর, বা সাদা হতে পারে। গুচ্ছ মথ এর সম্পূর্ণ জীবনচক্রে বেশ কয়েকটি দশা অতিক্রম করে। শরৎকালে স্ত্রী মথ গুচ্ছাকারে ডিম পাড়ে, এবং বসন্তকাল না আসা পর্যন্ত এই ডিম এভাবেই শীতকাল অতিবাহিত করে। যখন আবহাওয়া একটু উষ্ণ হয়, তখন ডিম ফুটে বাচ্চা শুঁয়োপোকা বেরিয়ে আসে। এই কচি শুঁয়োপোকাগুলি ফসল, উদ্ভিদ ও গুল্মের পাতায় বসে খেতে শুরু করে এবং বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় ও খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে। বৃদ্ধি পেলে, এদের দেহে রোম গজায় এবং এই বৈশিষ্ট্য এই মথের এইরকম নামকরনের কারণ। কয়েক সপ্তাহ খাওয়ার পরে, শুঁয়োপোকা গুটি তৈরী করে। গুটির মধ্যে, শুঁয়োপোকা পরিণত মথে রূপান্তরিত হয়। পরিণত বয়স্ক মথ গুটি থেকে বেরিয়ে এসে সঙ্গমে লিপ্ত হয়, এবং স্ত্রী মথ ডিম পেড়ে আবার নতুন জীবনচক্র শুরু করে। স্ত্রী মথ উড়তে অক্ষম হওয়ায় মথের সংখ্যা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল জুড়ে বাড়ার প্রবণতা দেখায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • গুচ্ছ মথ নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময়ে সতর্ক থাকাটা গুরুত্বপূর্ণ কেননা এই পতঙ্গের শুঁয়োপোকার রোম আছে যা মনুষ্য ত্বকে প্রদাহের সৃষ্টি করতে পারে এবং যখন এদের স্পর্শ করা হয় তখন সহজেই এই রোম বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
  • সুরক্ষামূলক পোষাক পরিধান করুন এবং শুঁয়োপোকার দেহের কোন অংশের কাছাকাছি গিয়ে শ্বাস গ্রহণ করা এড়িয়ে চলুন।
  • গুচ্ছাকারে ডিম ও স্বল্প বয়স্ক শুঁয়োপোকার সন্ধান পেলে এগুলিকে অপসারিত করুন।
  • কীটের সন্ধানে নিয়মিত তদারকি চালিয়ে যাওয়াটা সবসময়ে ভালো ফল দেয়।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন