Nezara viridula
বালাই
পোকা মূলত ফল ও বর্ধনশীল ডগা থেকে খায়। বর্ধনশীল ডগা শুকিয়ে গিয়ে ঝরে পড়ে যায়। ফল থেকে খাওয়ার জন্য অধিকাংশ ক্ষতি সৃষ্টি হয়। ফল তার পূর্ণ আকারে বাড়তে পারে না, অবয়ব পরিবর্তিত হয়ে যায় এবং এমনকি ঝরে পড়েও যায়। অনেকক্ষেত্রে, ফল থেকে খাওয়ার জন্য ফলের পৃষ্ঠে কালো শক্ত দাগ তৈরী হয়। ফুলের মুকুল থেকে খাওয়ার জন্য ফুল ঝরে পড়ে যায়। ফলের স্বাদে প্রভাব পড়তে পারে। খাওয়ার ছিদ্রপথ জীবাণুর প্রবেশের অনুকূল হতে পারে এবং আরও ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। পাতার নীচের পৃষ্ঠে গাদা করে ডিমের সন্ধান পাওয়া যায়।
ডিমের উপরে ট্রিসোলকাস ব্যাসিলাস ও ট্যাক্টিনিড মাছি ট্যাকিনাস পেন্নিপেস ও ট্রাইকোপোডা পিলিপস দ্বারা পরজীবায়ন ঘটিয়ে এই পোকাকে সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করা গিয়েছে।
কীটনাশকঘটিত প্রয়োগের সাধারণত প্রয়োজন নেই/জরুরী নয়, তবে স্টিঙ্ক বাগের সংখ্যা বেশী হলে স্প্রে ব্যবহার করার দরকার হতে পারে। এই পোকাকে কার্বামেটস ও অর্গানোফসফেট যৌগ দ্বারা রাসায়নিকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে। তবে, যেহেতু এই সমস্ত যৌগের অধিকাংশই দমন ব্যবস্থা প্রয়োগকৃত উদ্ভিদে খুব বেশীদিন প্রভাব বিস্তার করতে পারে না, তাই কাছাকাছি অঞ্চল থেকে আগত পোকার দ্বারা ফসল গুরুতরভাবে সংক্রমিত হতে পারে। যখন কীটনাশক সক্রিয় থাকে এবং পর্ণরাজির মধ্যে লুক্কায়িত অবস্থায় থাকে না তখন কীটনাশকজনিত নিয়ন্ত্রণের কার্যকারিতাকে উন্নত করা যায়। ফলে, কীটনাশক সরাসরি পোকার সংস্পর্শে আসতে পারে। লক্ষ্য করে দেখা গিয়েছে স্টিঙ্ক বাগ ভোরবেলা ও শেষ বিকালে ভোজনপর্ব সমাধা করে।
ক্ষতি সৃষ্টি হয় নেজারা ভিরিডুলা নামক একটি পোকা থেকে, যার দেখা সারা বিশ্বেই মেলে, বিশেষ করে গ্রীষ্মমন্ডলীয় ও উপক্রান্তীয় জলবায়ু অঞ্চলে। এগুলিকে "স্টিঙ্ক বাগ" নামে ডাকা হয় কারণ যখনই এরা বিপদের সম্মুখীন হয় তখনই এরা বাতাসে এক রকমের তীব্র গন্ধ ছড়িয়ে দেয়। পোকা তাদের পাতলা ছিদ্রকারী মুখ অঙ্গ (স্টাইলেটস) দিয়ে ফসলে ছিদ্র করে খায়। প্রকৃত খাওয়ার ছিদ্রটি তৎক্ষণাৎ নজরে আসে না। প্রাপ্তবয়স্ক ও শৈশব উভয় অবস্থায় এই পোকা উদ্ভিদ থেকে খায়। এরা উদ্ভিদের নরম অংশ (বর্ধনশীল ডগা, ফল, ফুল) থেকে খাবার খেতে পছন্দ করে। যখন পোকার ডিম ফুটে যায়, পোকার শৈশব অবস্থা ডিমের কাছাকাছি জায়গায় অতিবাহিত হয়। প্রাপ্তবয়স্ক পোকা উড়তে পারে এবং অনেকদূর পর্যন্ত ঘোরাফেরা করতে পারে। এদের দেহের রঙ সাধারণত সবুজ হয়, সেইজন্য উদ্ভিদের উপরে যখন এরা বসে তখন আলাদা করে এদের চিহ্নিত করা মুশকিল হয়ে যায়। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পোকার দেহের রঙ পরিবর্তিত হয়, এবং জীবনচক্রের প্রতিটি পর্যায়ে আরও সবুজ হতে থাকে। ভোরবেলা এরা সাধারণত উদ্ভিদের উপরের অংশে সরে যায়।