আখ

আখের আঁশ পোকা

Melanaspis glomerata

বালাই

সংক্ষেপে

  • পাতা এবং আখ শুকিয়ে যায়।
  • বৃদ্ধি থেমে যায়।
  • কাণ্ড এবং পাতার মধ্যশিরা বৃত্তাকার গাঢ় বর্ণের আঁশ দ্বারা ঢাকা থাকে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

আখ

উপসর্গ

কাণ্ড এবং পাতার মধ্যশিরা বৃত্তাকার, বাদামী বা ধূসর-কালো আঁশ পোকায় আচ্ছাদিত। আক্রান্ত আখের পাতা অস্বাস্থ্যকর ফ্যাকাশে সবুজ রঙ সহ ডগার দিকে শুকিয়ে যায়। ধারাবাহিক আক্রমণের ফলে পাতা পরে হলুদ হয়ে যায়। রসের ঘাটতির জন্য কচি পাতা খুলতে পারে না যা শেষপর্যন্ত হলুদ রঙ হয়ে শুকিয়ে যায়। অবশেষে, আখ চিরে ফেললে বাদামী-লাল পচা দেখা যায়। আক্রান্ত আখ কুঞ্চিত হয় এবং প্রচণ্ড আক্রমণের ক্ষেত্রে পুরো আখের কাণ্ডের উপরের ত্বক পোকায় ঢেকে একটা আস্তরন তৈরি করে। লেপটে থাকার অভ্যাস এবং আকারে ছোট হওয়ার কারণে এ পোকা আখ চাষির নজর এড়িয়ে যায়। এর অস্তিত্ব কেবলমাত্র গুরুতর ক্ষতি হওয়ার পরে প্রকাশিত হয়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

১% ফিশ অয়েল রোজিন ইমালসনে বীজখণ্ড ডুবিয়ে নিন। সাদা তেল (পাতা এবং কাণ্ডে) স্প্রে করুন, যা তরুণ আঁশ পোকার বিরুদ্ধে কিছু কার্যকারিতা দেখায়। চিলোকোরাস নিগ্রিটাস বা ফারাসেসিমনাস হর্নি এগ কার্ড @ ৫ সিসি / এসি ছেড়ে দিন। হাইমেনোপটেরান প্যারাসিটয়েড যেমন আনাব্রোটেপিস মায়ুরাই, চেইলোনিউরাস স্পেসিস এবং শিকারী মাকড় যেমন সানিয়াসুলাস নুডাস এবং টাইরোফাগাস পুত্রেসেন্টিয়া অবমুক্ত করুন যা আঁশ পোকাদের ধরে খেতে পারে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। রোপনের আগে ম্যালাথিয়ন ০.১% দ্রবণের মধ্যে বীজখণ্ড ভিজিয়ে রাখুন। পাতা ছাড়ানোর পরে ডাইমেথোয়েট @ ২ মিলি / লি. বা মনোক্রোটোফস @ ১.৬ মিলি. / লি. স্প্রে করুন। পোকামাকড়ের প্রাথমিক উপস্থিতির ঠিক আগে পাতা ছড়ানোর পরে দু'বার অ্যাসিফেট ৭৫ এসপি @ ১ গ্রা / লি. দিয়ে বীজখণ্ড শোধন করুন।

এটা কি কারণে হয়েছে

ক্রলার আঁশ পোকার কারণে ক্ষতি হয়। স্ত্রী পোকা অভোভিভাইপারাস - অর্থাৎ যে প্রাণী নিজ দেহভ্যন্তরেই ডিম তা দিয়ে বাচ্চা ফুটায়। ফুটার পর বাচ্চাগুলো (ক্রলার) (তরুণ অপরিণত আঁশপোকা) কোনো একটি খাওয়ার জায়গার সন্ধানে ঘুরে বেড়ায়। তারা সূঁচের মতো মুখ- উপাঙ্গ সংযোজন করে, গাছের রস বের করে খায় এবং অন্যত্র সরে যায় না। আখের ইন্টারনোডস গঠনের সাথে আক্রমণ শুরু হয় এবং গাছ বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এটি বাড়তে থাকে। ক্রলার দ্বারা গাছের রস শোষিত হয়। মারাত্মক আক্রমণে পাতার খোল, পত্রফলক ও মধ্যশিরা আক্রান্ত হয়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • রোগ প্রতিরোধী জাত, যেমন- CO 439, CO 443, CO 453, CO 671, CO 691 এবং CO 692 ব্যবহার করুন।
  • আঁশপোকা মুক্ত বীজ খণ্ড চাষ করুন।
  • আঁশ পোকার বিস্তার কমাতে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বীজ ব্যবহার করুন।
  • ক্ষেত এবং বাঁধ আগাছা মুক্ত রাখুন।
  • ক্ষেত থেকে বদ্ধ জল বের করে দিন।
  • আক্রান্ত হওয়ার লক্ষণ জানতে নিয়মিত মাঠ পর্যবেক্ষণ করুন।
  • বেশি আক্রান্ত আখ গাছ উপড়ে পুড়িয়ে ফেলুন।
  • অনাবাসী ফসল (উদাঃ গম) দিয়ে ফসল আবর্তন করুন।
  • রোপণের ১৫০তম এবং ২১০তম দিনে আখের পাতা ঝরিয়ে দিন।
  • বারবার মুড়ি চাষ এড়িয়ে চলুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন