Pempherulus affinis
বালাই
এ পোকার আক্রমণের সবচেয়ে স্পষ্ট লক্ষণ হলো মাটির কাছে ফসলের কাণ্ডে স্ফীত ফোস্কা দেখা যায়। পোকার কীড়া ফসলের কাণ্ডের ভিতরে খাওয়ার ফলে পরিবহণ কলা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় কারণে এমনটা দেখা যায়। এ ক্ষতির ফলে কম বয়সী চারা মারা যায়। বয়স্ক গাছ প্রথমে নেতিয়ে পড়ে এবং পরে শুকিয়ে যায়। এরা টিকে থাকলেও সজীবতা এবং বৃদ্ধি থেমে যায়। বেশি জোরে বাতাস প্রবাহিত হলে বা বেশি সংখ্যক গুটি আসলে আক্রান্ত কাণ্ড ভেঙে যায়। পরবর্তী লক্ষণ হিসেবে তুলোর গুটির সংখ্যা কমে যায় এবং আঁশের মানও খারাপ হয়।
জমি তৈরির সময় খামার সারের সাথে নিমের খৈল প্রয়োগ করে তুলোর ডগা আক্রমণকারী উইভিল পোকা ও তুলোর কাণ্ডের উইভিল পোকার সংখ্যা হ্রাস করা যায় ( ১০ টন খামার সার +২৫০ কেজি নিমের খৈল/ হেক্টর)। কমবয়সী চারায় নিমের তেল ছিটিয়ে দিলে বয়স্ক পোকা ডিম পাড়তে পারে না। বালাইনাশকের সাথে ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা নিয়ন্ত্রণ ও দমন করুন।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। পোকার আক্রমণ ঠেকাতে প্রতিরোধী ব্যবস্থা হিসেবে বীজ শোধন করুন ( ১০ মিলি ক্লোরোপাইরিফস ২০ ইসি/ কেজি বীজ)। কাণ্ডে ক্লোরোপাইরিফস ২০ (২.৫ মিলি/লিটার) ইসি ছিটালেও এ পোকার বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে। বীজ গজানোর ১৫-২০ দিন পরে প্রতি ১৫ দিন পর পর গাছে ছিটিয়ে দিন। বালাইনাশকের সাথে ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করে পোকা নিয়ন্ত্রণ ও দমন করুন।
পেমফেরুলাস এফিনিস নামক তুলোর ডগা আক্রমণকারী উইভিল পোকা এর জন্য দায়ী। বয়স্ক পোকা ছোট এবং গাঢ় বাদামী রঙের হয়, ডানা ও মাথায় সাদা দাগ দেখা যায়। স্ত্রী পোকা কম বয়সী চারার বাড়ন্ত ডগায় ডিম পাড়ে। ডিম ফোটার সাথে সাথে পোকার সাদা কীড়া গাছের কাণ্ড ছিদ্র করে পরিবহন কলা খেতে থাকে। যার ফলে মাটির কাছে ফসলের কাণ্ডে স্ফীত ফোস্কা দেখা যায়। তুলোর কাণ্ডের উইভিল পোকাও(এলসিডোডেস এফাবার) এ ধরনের আচরণ করে। সুতরাং একই ধরনের প্রতিরোধী ও দমন ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। যাইহোক, তুলোর কাণ্ডের উইভিল পোকা সামনের ডানায় হালকা দাগযুক্ত গাঢ় ধূসর বাদামী রঙের হয়ে থাকে। ভারতের কিছু অংশে মাঝে মাঝে তুলোর ডগা আক্রমণকারী উইভিল পোকা মারাত্মক আকার ধারন করে, নির্দিষ্টভাবে বললে তামিলনাড়ুতে।