বেগুন

বিহার রোমশ শুঁয়োপোকা

Spilarctia obliqua

বালাই

সংক্ষেপে

  • আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে যায়।
  • পাতা সম্পূর্ণ ঝরে পড়ে।
  • পাতাগুলিকে পরস্পরের সঙ্গে বেঁধে জাল তৈরী করে।
  • বাদামী প্রজাপতির পেটের দিকটা লাল রঙের এবং কালো দাগ দেখতে পাওয়া যায়।
  • কীড়া পোকা হলদে থেকে কালো লোমে আবৃত থাকে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

16 বিবিধ ফসল
শিম
বাঁধাকপি
ফুলকপি
তুলা
আরো বেশি

বেগুন

উপসর্গ

প্রথমে আক্রান্ত পাতা হলুদ - বাদামী হয়ে যায় এবং শুকিয়ে যায়। শুঁয়োপোকা ধীরে ধীরে পাতার নরম কলা কুড়ে কুড়ে খেয়ে অগ্রসর হয়। আক্রমণের হার বেশী হলে গাছ পাতাশূন্য হয়ে যায় এবং শেষে শুধুমাত্র কাণ্ড বাকি থাকে। পাতা জালিকাকার দেখায় এবং শুকনো কঙ্কালের মত আবরন দেখা যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

স্পিলার্কটিয়া অবলিকুয়াকে শুককীট থাকা অবস্থায় খুব সহজেই প্রাকৃতিক শত্রু দ্বারা এর সংখ্যা দমন করা যায়। উপকারী পরজীবী পোকার মধ্যে ব্রাকোনিড অন্যতম, এছাড়াও মেটরাস স্পাইলসমি, প্রটাপেন্টালিস, অব্লিকুঊ, গ্লিপ্টাপেন্টালিস, আগামেননিস, কটেসিয়া রুফিক্রাস এবং এর সঙ্গে ইকনুমেনিড আগাথিস প্রজাতির লেসউইং, লেডি বার্ড বিটল মাকড়শা , লাল পিঁপড়া, ড্রাগন ফ্লাই, শিকারি মান্টিস, মাটির বিটল , এবং শিল্ড বাগ রয়েছে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। কীটনাশক সাবধানতার সাথে ব্যবহার করা উচিত কারন কীটনাশকের অতিরিক্ত ব্যবহারের কারণে অনেক সাদা মাছি প্রজাতি এই কীটনাশকের প্রতি প্রতিরোধী হয়ে উঠতে পারে। এটি প্রতিরোধ করতে, কীটনাশক পর্যায় ক্রমে এবং মিশ্রণ আকারে ব্যবহার নিশ্চিত করুন। শুঁয়োপোকা ছোট থাকতে ল্যাম্বা-সাইহালোথ্রিন ১০ ইসি @ 0.৬ মিলি / লিটার জলে মিশিয়ে ছিটিয়ে দিন। ফেন্থোলেট ৫০% স্পিলার্কটিয়া অবলিকুয়া-র বিরুদ্ধে ভালো কার্যকরী।

এটা কি কারণে হয়েছে

এ লক্ষণ বেশিরভাগই স্পিলার্কটিয়া অবলিকুয়া শুককীট দ্বারা সৃষ্ট। প্রাপ্তবয়স্ক শুঁয়োপোকার লাল পেটে একটি মাঝারি বাদামী দাগ থাকে। স্ত্রীপোকা পাতার নীচের অংশে গাদা করে ডিম (১০০০/ পোকা পর্যন্ত) পাড়ে। ডিম ফুটে যাওয়ার পর শুককীট হলুদ থেকে কালো রঙের চুল দ্বারা আবৃত থাকে এবং গাছের গোড়ায় পড়ে থাকা পাতায় মূককীটগুলো অবস্থান করে। প্রথমদিকে শুককীট পাতার নিচের ক্লোরফিলের অংশ গ্রোগ্রাসে খেয়ে ফেলে। পরবর্তীতে এরা পাতার প্রান্তের অংশ একাকী ভক্ষণ করে। সাধারনত শুককীট পুরানো পাতা পছন্দ করে কিন্তু আক্রমণ বেশী হলে এরা ডগার পাতাকেও আক্রমণ করে থাকে। বিহার রোমশ শুঁয়োপোকা বিভিন্ন দেশে ডাল, তৈলবীজ এবং নির্দিষ্ট কিছু সবজি এবং পাট জাতীয় ফসলে আক্রমণ করে, যার ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধিত হয়। এ পোকার বংশবিস্তারের জন্য অনুকূল তাপমাত্রা ১৮ থেকে ৩৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস হওয়ায় উৎপাদনের ক্ষতির পরিমান আবহাওয়ার উপর অনেকটাই নির্ভর করে ।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • মাটি থেকে মূককীট দূর করতে গ্রীষ্মে মাটিতে গভীর ভাবে চাষ দিন।
  • বর্ষার পূর্বে বপন থেকে বিরত থাকুন।
  • বীজ পরিমানে কম বা বেশী না দিয়ে সঠিক পরিমানে বপন করুন।
  • গাছ থেকে গাছের পর্যাপ্ত দূ্রত্ব রাখুন।
  • ভালো মানের পচা গোবর সার ব্যবহার করুন।
  • সাথী ফসল হিসেবে মটরশুটি অথবা ভুট্টা বা জোয়ার চাষ করুন।
  • কীটপতঙ্গের উপস্থিতি দেখতে নিয়মিত জমি পর্যবেক্ষণ করুন (ডিমের গাদা, শুঁয়োপোকা, এবং কোন ক্ষতির চিহ্ন)।
  • জমি এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় একটি কার্যকরী আগাছা দমন পদ্ধতি প্রয়োগ করুন।
  • জমি থেকে আক্রান্ত গাছের অংশ সংগ্রহ করে জমি থেকে নিরাপদ দূরত্বে ধ্বংস করুন।
  • শুককীট ধ্বংস করার জন্য জমিতে পাখিদের আনাগোনা বৃদ্ধি করুন এবং পাখি বসার জন্য খুঁটি স্থাপন করুন।
  • উপকারী পোকামাকড় রক্ষা করার জন্য জমিতে উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কীটনাশকের প্রয়োগ বন্ধ করুন।
  • ফসল সংগ্রহের পর অবশিষ্ট গাছপালা ধ্বংস করে ফেলুন।
  • অনাবাসী ফসল যেমন ধান বা ভুট্টা চাষের মাধ্যমে ফসল চক্র মেনে চলুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন