Aproaerema modicella
বালাই
পাতার মেসোফিল খেয়ে ফেলার কারনে পাতার উপর ছোট বাদামী ফোস্কা (ব্লচ) দেখা দেয়। কীড়া বেশ কয়েকটি পাতার জাল তৈরি করে পাতার ভাঁজের মধ্যে অবস্থান করে এবং খেতে থাকে। দূর থেকে দেখলে মারাত্মক আক্রান্ত জমি ঝলসানো বলে মনে হয়। আক্রান্ত পাতা শুকিয়ে যায় এবং গাছ নেতিয়ে পড়ে।
মাকড়সা, দীর্ঘ শৃঙ্গযুক্ত ফড়িং, প্রেয়িং মেন্টিস, পিঁপড়া, লেডিবার্ড বিটলস, ঝিঁঝি পোকা ইত্যাদি প্রাকৃতিক শিকারী পোকামাকড় সংরক্ষণ করুন। পাতার সুড়ঙ্গকারী পোকার ওপর পরজীবায়ন করতে পারে এমন গোনিওজাস প্রজাতির সংখ্যা বাড়ানোর জন্য চিনা বাদামের সাথে পেন্নিসেটাম গ্ল্যাউকাম নামক সাথী ফসল চাষ করুন।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। রাসায়নিক স্প্রে কেবল তখনই সুপারিশ করা হয় যখন চারা অবস্থায় ৩০ দিন পর গাছ প্রতি কমপক্ষে ৫টি কীড়া পাওয়া যাবে (ডিএ ই), বা ফুল পর্যায়ে ১০ টি কীড়া (৫০ ডিএ ই), এবং ফল গঠনের পর্যায়ে প্রতি গাছে ১৫টি কীড়া (৭০ ডিএ ই) থাকে। যদি ক্ষতির পরিমাণ অর্থনৈতিক ঝুঁকির প্রান্তিকসীমার উপরে যায়, তবে বীজ বপনের ৩০-৪৫ দিন পরে ২০০-২৫০ মিলি/হেক্টরে ডাইমেথোয়েট রাসায়নিক (Chlorpyrifos @ 2.5 ml/l or Acephate @ 1.5 g/l) অথবা প্রোফেনোফস 20EC @ 2 ml/l দিয়ে স্প্রে করুন।
পাতা সুড়ঙ্গকারী কীড়া দ্বারা চিনাবাদামের ক্ষতি হয়। সুড়ঙ্গকারী পোকা পাতার নীচের দিকে এককভাবে ডিম পাড়ে এবং দেখতে হয় চকচকে সাদা, কিন্তু কীড়াগুলি হালকা সবুজ বা বাদামী রঙের, মাথা এবং ঘাড় (প্রোথোরাক্স) গাঢ় রঙের। প্রাপ্তবয়স্ক সুড়ঙ্গকারী পোকা একটি ছোট মথ যা দৈর্ঘ্যে প্রায় ৬ মিমি হয়। এর ডানা বাদামী-ধূসর বর্ণের। পূর্ণাঙ্গ মথের ডানাতে সাদা বিন্দুও থাকে। কীড়া পাতায় সুড়ঙ্গ করে এবং পাতার ভিতরে খায়। এরা ৫-৬ দিন পর সুড়ঙ্গ থেকে বেরিয়ে সংলগ্ন অন্য পাতায় জালের ভাঁজে খেতে ও শুককীটে পরিণত হতে আসে। পাতার সুড়ঙ্গ অঞ্চল শুকিয়ে যায়। পাতার সুড়ঙ্গকারী পোকা বর্ষা এবং বর্ষা পরবর্তী উভয় কালে সক্রিয় থাকে এবং ফসলের ২৫% থেকে ৭৫% পর্যন্ত ক্ষতি হতে পারে।