Aleurocanthus woglumi
বালাই
আক্রান্ত পাতা বিকৃত এবং কোঁকড়ানো দেখা যেতে পারে, অবশেষে অকালে ঝরে পড়ে। পাতা এবং কাণ্ডে আঠালো মধুর মতন জমা হয় এবং সাধারণত কালো ছাঁচ ছত্রাকের বিকাশ ঘটে, এবং পাতার উপর কালো আবরণ পড়ে। মধুচক্র দ্বারা পিঁপড়া আকৃষ্ট হতে পারে। পাতার নীচের অংশে খুব ছোট, কালো কুন্ডলী পাকিয়ে পোকামাকড় সবচেয়ে বেশি দেখা যায়। পোকা এবং স্যুটি মোল্ডের আক্রমণে গাছ দুর্বল হয়ে যায় এবং ফল কম ধরে।
সাইট্রাসের কালোমাছি দমনে এনকার্সিয়া পের্পেলেক্সা, পোলাশেক এবং অমিতাস হেস্পেরিডাম সিলভেস্ট্রি পরজীবি বোলতা হিসেবে চিহ্নিত। এসব বোলতা কেবল কালো মাছির উপর পরজীবিতা করে, মানুষ বা গাছের কোন ক্ষতি করে না। লেডিবার্ড, লেসউইং, ব্রুমাস স্পেসিস, সিমন স্পেসিস , ক্লাইসোপারেলা স্পেসিস ইত্যাদি এ পোকার প্রাকৃতিক শত্রু। তেলের নির্যাস যেমন কার্পাস তেল এবং মাছের তেল রজন সাবান (ফোর্স) প্রাকৃতিকভাবে কার্যকর এবং পরিবেশ-বান্ধব যা কেবল ব্ল্যাকফ্লাই-এর সংখ্যা হ্রাস করতে পারে তাই নয়, সাথে পাতার স্যুটি মোল্ডও হ্রাস করে। পোকামাকড়ের সংখ্যা কমাতে নিম বীজ নির্যাস (৪%) ছিটিয়ে দিন।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। আলেউরোকান্থাস ওগলুমির প্রাকৃতিক শত্রু টিকিয়ে রাখার জন্য উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন কীটনাশকের এলোপাথাড়ি ব্যবহার বন্ধ করতে হবে। চারা লাগানোর আগে রাসায়নিক ছিটিয়ে বা ধোঁয়া দ্বারা আবদ্ধ করে পোকা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। ৫০% ডিম ফুটলে এবং প্রতিরক্ষামূলক ত্বক তৈরি হবার আগেই কার্যকরী রাসায়ানিক কীটনাশক ছিটিয়ে দিন। সাইট্রাস ব্ল্যাকফ্লাইয়ের সংখ্যা হ্রাস করার জন্য কুইনালফাস এবং ট্রাইজোফোস ব্যবহার করা যায়। পোকার অবস্থান পাতার নিচে থাকে তাই পাতার তলদেশে কীটনাশক ছিটাতে হবে। পুরো গাছ রাসায়নিক দ্রবনে ভেজানো উচিত।
সাইট্রাসের কালো মাছি (আলেউরোকান্থাস ওগলুমি) এশিয়াতে একটি মারাত্মক সাইট্রাস পোকা এবং বিভিন্ন আবাসের উদ্ভিদে আক্রমণ করে। এটি হোয়াইটফ্লাই পরিবারের সদস্য তবে প্রাপ্তবয়স্কেরা গাঢ়, ধূসর নীল বর্ণের হয়, ফলে এদের ব্ল্যাকফ্লাই বলা হয়। প্রাপ্তবয়স্ক পোকাগুলো সামান্য ওড়ার ক্ষমতা বিশিষ্ট খুব ছোট পোকা, যা সন্ধ্যায় সক্রিয় থাকে এবং দিনের বেলা পাতার নিচের পৃষ্ঠে লুকিয়ে থাকে। স্ত্রী পোকা পাতার নিচে আঁকাবাঁকাভাবে সজ্জিত প্রায় ১০০ টি সোনালি রঙের ডিম পাড়ে। শূককীট দেখতে চ্যাপ্টা, গোলাকৃতি এং পাল্লার মতন দেখা যায়। এটি পাতা থেকে রস চুষে খায়। ওড়ার সময় এটি অনেক মধু ছিটিয়ে যায়। এ পোকার বিকাশ প্রায় ২৮-৩০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রায় এবং ৭০-৮০% আপেক্ষিক আর্দ্রতায় ভালো হয়। আলেউরোকান্থাস ওগলুমি হিম পড়ে এমন শীতল পরিবেশে বাঁচতে পারে না।