Pyrilla perpusilla
বালাই
পাতার নিচের পৃষ্ঠে পতঙ্গ পাওয়া যায় যেখানে অবস্থান করে গাছের রস চুষতে থাকে। এর ফলে পাতা প্রথমে হলুদ হয়ে যায় এবং অতঃপর শুকিয়ে যায়। পোকার উপদ্রবের মাত্রা কম হলেও, হলুদাভ দাগ পাতার পৃষ্ঠে দৃশ্যমান হয়। গাছ খর্বাকৃতি হয়ে যাওয়ার ফলে সালোকসংশ্লেষণও হ্রাস পায়। পাতাফড়িং হানিডিউ নামক একটি মিষ্টি জাতীয় পদার্থ নিঃসরিত করে পাতার উপর লেপে দেয়। এটি সুযোগ সন্ধানী ছত্রাককে আকর্ষণ করে এবং এ ছত্রাকের বৃদ্ধি পত্রফলককে কালো করে তোলে। এটি সালোকসংশ্লেষনের মাত্রা আরও বেশি হ্রাস করে এবং ফলস্বরূপ ফলনও হ্রাস পায়। আখের পাশাপাশি সহজেই ভুট্টা, বাজরা, ধান, যব, জোয়ার, যই, এবং বন্যজাতের ঘাসেও আক্রমণ করে।
বেশ কয়েকটি পরজীবী পোকা পাতা ফড়িঙের ডিম এবং নিম্ফকে আক্রমণ করে। ডিম আক্রমণকারী পরজীবীগুলোর মধ্যে রয়েছে টেট্রাস্টিকাস পাইরিলি, চেইলোনিউরাস পাইরিলি, ওনিসার্টাস পাইরিলি, ও. পিপিলিওনস এবং অ্যাগোনিয়াসপিস পাইরিলি। লেস্টোড্রাইনাস পাইরিলে, পাইরিলোক্সেনোস ওমপ্যাক্টাস, ক্লোরোড্রাইনিয়াস প্যালিডাস, এপিরিসানিয়া মেলানোলেউকা প্রভৃতি নিম্ফকে আক্রমণ করে থাকে। এ পোকার শিকারী কীটের মধ্যে বেশ কয়েকটি প্রজাতির লেডি বার্ডস রয়েছে যেমনঃ কক্সিনেল্লা সেপ্টেম্পাঙ্কটাটা, সি. আনডেসিম্পাঙ্কটাটা, চিলোমিনিস সেক্সম্যাকুলাটা, ব্রুমাস স্টুরালিস। নিমবোয়া বাসিপুন্টটা, গনিওপট্রিক্স পুসানা পাতা ফড়িঙ্গের ডিম শিকার করে থাকে।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ম্যালাথিয়ন সংগঠিত বালাইনাশক এ ধরনের পোকার বিরুদ্ধে বেশ কার্যকর।
বয়স্ক পাইরিলা পারপুসিল্লার দ্বারা সাধারণত ক্ষয়ক্ষতি ঘটে থাকে। এধরনের পাতাফড়িং অত্যন্ত সক্রিয় যা সারা বছর ধরে বংশবৃদ্ধি করে এবং মাঠ থেকে মাঠে স্থানান্তরিত হতে পারে, যার ফলে বড় ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। বয়স্ক পোকা সবুজ থেকে খড় বর্ণের এবং দৈর্ঘ্যে প্রায় ৭-৮ মিমি হয়ে থাকে। এগুলো সাধারণত গাছে অবস্থান করে গোগ্রাসে সবকিছু খেয়ে থাকে এবং কোনকিছুতে বাধাগ্রস্ত হলে সহজেই লাফিয়ে একটি থেকে অন্যটিতে চলে যেতে পারে। এরা গাছের কোষকলা ছিদ্র করে সেখান থেকে রস চুষতে থাকে। অধিক আর্দ্রতা এবং জমিতে মাত্রাতিরিক্ত সার প্রয়োগে দ্রুত গাছের বৃদ্ধি উভয়ই পোকার ছড়িয়ে পড়ার অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করে। অতিরিক্ত জলসেচ বা বর্ষাকালও পাতাফড়িং এর বিস্তারে ভূমিকা রাখে।