বেগুন

তুলার লাল গান্ধী পোকা

Dysdercus cingulatus

বালাই

সংক্ষেপে

  • পোকা তুলার গুটি খেয়ে নষ্ট করে, অকালে বোল উন্মুক্ত হয় এবং গুটি ঝরে পড়ে।
  • তুলার তন্তুতে ময়লার দাগ পড়ে এবং ক্ষতিগ্রস্ত কোষকলায় রোগজীবাণু কলো্নী তৈরি করে ক্ষতি সাধন করে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

8 বিবিধ ফসল

বেগুন

উপসর্গ

বয়স্ক পোকা এবং নিম্ফ উভয়েই ফুল কুঁড়ি এবং বন্ধ বা আংশিকভাবে খোলা তুলার বোল খায়। এরা তন্তুতে ছিদ্র করে এবং বীজ খায়। ক্ষতিগ্রস্ত কোষ কলা অণুজীবের দ্বারা উপনিবেশিত হয় যা তুলার গুটি পচিয়ে ফেলে এবং বিবর্ণ করে। বোলের গর্ভপাত ঘটে, অকালে উন্মুক্ত হয় এবং অকালে ঝরে পড়ে। পরবর্তী লক্ষণ হিসেবে দেখা যায় কম তেল সমৃদ্ধ ছোট বীজ, ময়লা দাগ যুক্ত তুলার তন্তু এবং অঙ্কুরোদগমের হার কমে যায়। বীজ বপনের অযোগ্য হয়ে পড়ে। ডি. সিঙ্গুলাটা কেবল একটি গাছে সীমাবদ্ধ থাকে না এবং অন্য কম বয়সী বোলে স্থানান্তরিত হয়। তীব্র আক্রমণের ফলে তুলায় ময়লা দাগ পড়ে গুনগত মান মারাত্মকভাবে হ্রাস করে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

নিম তেল মিশ্রণ পাতায় ছিটিয়ে দিলে এ পোকার বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নি। ক্লোরোপাইরিফস, এসফেনভারেট বা ইন্ডোক্সাকর্ব দ্বারা সংঘটিত উপাদানের বালাইনাশক গাছের পাতায় ছিটিয়ে প্রয়োগ করলে গোলাপী গুটি পোকার বিরুদ্ধে ভালো কাজ করে এবং লাল গান্ধী পোকার সংখ্যাও কমিয়ে দেয়। যাইহোক, এই পোকা সাধারণত ঋতুর দেরীতে আক্রমণ করে, ফলে ফসলের অবশিষ্টাংশের কারণে রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ প্রায়ই সম্ভব হয় না।

এটা কি কারণে হয়েছে

ডিসডারকাস সিঙ্গুলাটা এর বয়স্ক পোকা এবং নিম্ফ দ্বারা ক্ষতি সাধিত হয়। প্রাপ্তবয়স্কদের দৈর্ঘ্য ১২-১৩ মিমি পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে এবং এটি একটি স্বতন্ত্র লাল-কমলা রং ধারণ করে। মাথা সাদা দাগযুক্ত লাল রঙের হয়, উদর কালো এবং সামনের পাখায় দুটি ডট-এর ন্যায় কালো দাগ থাকে। পুরুষ পোকা স্ত্রী পোকার চেয়ে ছোট হয়। স্ত্রী পোকা আবাসী গাছের নিকটে মাটিতে একত্রে উজ্জ্বল হলুদ রঙের ১৩০টির মতো ডিম পাড়ে। ৭-৮ দিন সুপ্তাবস্থায় থাকার পর নিম্ফ ডিম ফুটে বের হয়ে আসে এবং গাছ খেতে থাকে। এরাও দেখতে লাল হয় এবং পেটে তিনটি কালো বিন্দু থাকে এবং তিন জোড়া সাদা ডর্সাল দাগ থাকে। জলবায়ুর উপর নির্ভর করে এদের বৃদ্ধি পর্যায়ের জন্য মোট ৫০-৯০ দিন সময় লাগে। মরশুমের শেষের দিকে যখন প্রথম বোলটি খুলতে শুরু করে তখন আক্রমণ শুরু হয় । বিকল্প আবাসী গাছের মধ্যে রয়েছে ঢেঁড়স, হিবিস্কাস এবং লেবু জাতীয় গাছ।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • পোকার সংখ্যা কম থাকলে হাতের সাহায্যে সরিয়ে দিন।
  • তুলার ফল সংগ্রহের সাথে সাথে সব গাছ সরিয়ে ধ্বংস করে ফেলুন।
  • বিকল্প আবাসী গাছগুলো অপসারণ করুন, যেমন বোম্বাক্স গাছ, এবং মালভেসি পরিবারের অন্য বন্য উদ্ভিদ।
  • ডি. সিঙ্গুলাটার প্রাদুর্ভাব কমাতে জমি চাষ দিয়ে পোকার ডিম বাহিরে বের করে দিন।
  • নিয়ন্ত্রিত বালাইনাশক ব্যবহার করুন যাতে পোকা প্রতিরোধী ব্যবস্থা নিতে না পারে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন