অন্যান্য

ভুট্টার হোয়াইট গ্রাব

Phyllophaga spp.

বালাই

সংক্ষেপে

  • খর্বাকৃতির গাছ, চারা আক্রান্ত হলে নেতিয়ে পড়ে ও পাতা বিবর্ণ হয়।
  • মাঠে উপস্থিত ফসল ছোপ ছোপ আকারে নেতিয়ে পড়ে।
  • আক্রান্ত গাছের কাণ্ড বেগুনী হতে পারে।
  • ঠাণ্ডা আবহাওয়া, ভেজা মাটি এ পোকার উপদ্রব বাড়ায়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে


অন্যান্য

উপসর্গ

সাদা কীড়া পরিণত ফসলের প্রধান্ মূল কেটে ফেলে বা উপমূল চিবিয়ে খায়। এরা ফসলে জল ও পুষ্টি পরিবহনে বিপত্তি ঘটায়, ফলে গাছের বৃদ্ধি থেমে যায়, চারা নেতিয়ে পড়ে ও পত্রপল্লব বিবর্ণ হয়ে যায়। অঙ্কুরোদগমশীল চারাও আক্রান্ত হতে পারে ফলে জমিতে ছোপ ছোপ আকারে গাছ নেতিয়ে পড়ার লক্ষণ বা সহজভাবে লক্ষণীয় সারির মাঝে শূন্যস্থান তৈরি হয়। বিশেষকরে, আক্রান্ত ফসলের কাণ্ড বেগুনী রঙ ধারণ করে যা ফসফরাসের অভাব বলে মনে হয়। ঠাণ্ডা আবহাওয়া, ভেজা মাটি এ পোকার উপদ্রব বাড়াবে কারণ ভুট্টার চারার বৃদ্ধি ধীর গতিসম্পন্ন হবে এবং চারা দীর্ঘ সময়ব্যাপী সাদা কীড়া পোকার আক্রমণের প্রতি সংবেদনশীল হবে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

সাদা কীড়া পোকার নিয়ন্ত্রণকারী প্রাকৃতিক শত্রুর মধ্যে টিপিয়া ও মিজিনাম গনের পরজীবী বোলতা এবং পেলিসিনাস পলিটুরে্টর প্রজাতি অন্তর্ভুক্ত। পরজীবী মাছি প্রজাতির মধ্যে পাইরোগোটা আন্ডাটা কার্যকরী। করডিসেপ গনের অন্তর্ভুক্ত ছত্রাকও এ পোকার কীড়াকে সংক্রমিত করতে পারে এবং পোকার সংখ্যা হ্রাস করতে ছত্রাকের দ্রবণ প্রয়োগ করা যেতে পারে। ব্যাসিলাস পপিলি এবং ব্যাসিলাস লেন্টিমোরবাসের ব্যাকটেরিয়াল গুটি মাটিতে প্রজনন করলে পোকার সংখ্যা হ্রাস করা যায় । এসব পণ্য বাণিজ্যিকভাবে পাওয়া যায়।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

হোয়াইট গ্রাব পোকার দমন ব্যবস্থাপনার জন্য ভুট্টার বীজ বপনের আগে মাঠ পর্যবেক্ষণ করে পোকার উপস্থিতি যাচাই করা দরকার। বালাইনাশকের সাহায্যে মাটিতে ফিউমিগেশন করে এ পোকার সংখ্যা আশানুরূপ নিম্ন পর্যায়ে রাখা যায়। কখনো কখনো বীজ শোধন করেও সাদা কীড়া পোকার আক্রমণ কমানো যায়, তবে সাধারনত রাসায়নিক শোধনের কোন সুপারিশ নেই।

এটা কি কারণে হয়েছে

ফাইলোফ্যাগা গনের অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন প্রকার বিটল পোকার লার্ভা ফসলের ক্ষতি করে এবং সাধারণত এরা “হোয়াইট গ্রাব" (১০০টিরও বেশি বিভিন্ন প্রজাতি) নামে পরিচিত। অন্যান্য ধরনের গ্রাবসও থাকতে পারে তাই এদের সনাক্ত করা জরুরী। বিটল ১২ থেকে ২৫ মিমি লম্বা হয়, হলুদ বা রক্তিম-বাদামী বা কালো রঙের, শক্তসমর্থ এবং ডিম্বাকৃতির হয়ে থাকে। বাদামী মাথা বিশিষ্ট এদের সাদা রংয়ের দেহ ২০ থেকে ৪৫ মিমি দৈর্ঘ্যের এবং দেখতে ইংরেজী C-আকৃতির,এবং তিন জোড়া পা থাকে। উদরের পিছনের অংশ কিছুটা লম্বাটে এবং পেটের ভিতর মাটি থাকে বলে দেহ ত্বকের ভিতর কালো দেখায়। এ পোকার জীবনচক্র ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে এবং সেজন্য এদের সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা জরুরী।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • যদি পাওয়া যায়, প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করুন।
  • পোকার ব্যাপক সংখ্যার প্রজনন এড়িয়ে যেতে পূর্বপরিকল্পিত বপন তারিখ পরিবর্তন করুন।
  • আক্রান্ত এলাকায় কয়েকটি গাছের মূল এলাকায় খনন করে কীড়ার উপস্থিতি পর্যবেক্ষণ করুন।
  • বিকল্প অনাবাসী ফসল যেমন-গভীর মূল সমৃদ্ধ ডাল জাতীয় ফসলের সাথে শস্য আবর্তন বজায় রাখুন (আলফালফা বা ক্লভার)।পোকার ডিমের সংখ্যা হ্রাস করতে ফসলের জমি ঘাস ও আগাছা থেকে মুক্ত রাখুন।
  • যে সব জমিতে আগের বছর আলু বা সয়াবিন লাগানো হয়েছিল, এমন জমিতে ভুট্টা লাগানো থেকে বিরত থাকুন।
  • মধ্য-মরশুমে একটি চাষ দিয়ে ভুট্টার সাদা কীড়া পোকাকে শিকারী পোকার জন্য উন্মুক্ত করুন।
  • ফসল সংগ্রহের পর গভীর চাষ দিয়ে ফসলের অবশিষ্টাংশ সরিয়ে পুড়িয়ে ফেলুন।
  • অপরপক্ষে, গৃহপালিত শূকর ব্যবহার করে জমির মাটি আলগা করুন যাতে এরা কীড়া পোকা খেতে পারে।
  • অতিরিক্ত কীটনাশক প্রয়োগ থেকে বিরত থাকুন কারণ তা উপকারী পোকার ক্ষতি সাধন করতে পারে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন