ধান

ধানের এশিয়াটিক মাজরা পোকা

Chilo suppressalis

বালাই

সংক্ষেপে

  • বিষেশতঃ নার্সারিতে প্রায়ই ধানের চারা মারা যেতে থাকে।
  • পাতার খোলে, পাতায় এবং কাণ্ডে খাওয়ার ফলে ক্ষতি হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

ধান

উপসর্গ

চারা অবস্থায় (সাধারণত বীজতলায়) আক্রমণের কারণে কচি পাতা নেতিয়ে পড়ে এবং চারার বর্ধিষ্ণু অংশ মরতে থাকে যে লক্ষণকে মরা ডিগ বলে অভিহিত করা হয়। বড় গাছের ক্ষেত্রে কীড়াপোকা পাতায়, বিশেষ করে পাতার খোলে ছোট ছিদ্র তৈরি করে। বয়স্ক কীড়া কাণ্ডে ছিদ্র করে গাছের ভিতরে ঢোকে এবং নরম পরিবহণ কলা খেয়ে ফেলে, মাঝে মাঝে পুরোটাই ফাঁকা করে ফেলে । এমন গাছ খর্বাকৃতির হয় এবং পাতায় মৃত কোষকলা দেখা যায় যা পরে শুকিয়ে ও কুঁকড়ে যায়, পরিশেষে ঝরে পড়ে। মঞ্জরিতে দানা পূর্ণ থাকে না , এমন অবস্থাকে (white head) সাদাডিগ বলে। একটি কীড়া অনেক গাছ ধ্বংস করতে পারে এবং তীব্র আক্রমণে ফসলের ১০০% ক্ষতি হয় ।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

কোন কোন দেশ Paratheresia claripalpis and Eriborus sinicus জাতের উপকারি বোলতা ছেড়ে ধানের এশিয়াটিক মাজরা পোকার সংখ্যা এবং ক্ষতির পরিমাণ সীমিত রাখার একটি কার্যকর উপায় অবলম্বন করে। বিভিন্ন জাতের শিকারী মাকড়সাও ব্যবহার করা হয় ।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। যদি কীটনাশকের প্রয়োজন হয়, তবে ক্লোরান্ট্রানিলিপ্রোল, ফিপ্রোনিল বা কুইনাফস সংঘঠিত কীটনাশক ছিটিয়ে দিন। রোপণের সময় এবং বৃদ্ধিকালে দানাদার কারটাপ হাইড্রোক্লোরাইড প্রয়োগ সংক্রমণ কমায়। শুরুর লক্ষণ দেখেই পোকা চিহ্নিত করতে হবে, তাছাড়া ফসল রক্ষার যোগ্য থাকবে না।

এটা কি কারণে হয়েছে

Chilo suppressalis এশিয়াটিক মাজরা পোকার ক্ষতির কারণ। এটি প্রধানত দক্ষিণ এশিয়ায় পাওয়া যায় এবং বছরে দুটি প্রজন্ম থাকে। কীড়া প্রধানত আভ্যন্তরীণ কোষকলা খায়, বয়স্ক কীড়া বাইরের রস খেয়ে থাকে। ধান ছাড়াও এরা জোয়ার এবং কয়েক প্রজাতির বুনো ঘাসেও আক্রমণ করে। কীড়া শীতকালে মুড়া ও খড়ের মধ্যে থাকে এবং মৃদু তুষারেও বেঁচে থাকতে পারে। স্ত্রী পোকা পাতার নিম্নপৃষ্ঠে প্রধান শিরা বরাবর কয়েক ধাপে ৩০০টি পর্যন্ত ডিম পাড়তে পারে, যা বাদামী বর্ণের নিঃসৃত দ্রব্য দিয়ে ঢেকে রাখে। ডিম ফোটার পর কীড়া পাতার বহিঃত্বক খাওয়া শুরু করে, পরে পাতার খোলে একটি সুড়ঙ্গ তৈরি করে ফলে পাতা হলুদ হয় এবং মারা যায়। যখন এ পোকা কাণ্ডে পৌঁছায়, এরা কাণ্ড ফাঁকা করে ফেলে, কাণ্ডসন্ধি ছিদ্র করে কাণ্ড পর্ব খেয়ে ফেলে। গাছে উচ্চ মাত্রার সিলিকা থাকলে কীড়ার খাওয়া এবং ছিদ্র করা বাধাগ্রস্ত হয়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • এলাকায় যদি রোগ প্রতিরোধী বা সহনশীল জাত সহজলভ্য হয় তাহলে সেই জাতের ধান চাষ করুন।
  • উচ্চ সিলিকা সমৃদ্ধ জাত চাষ করুন, যা শূককীটের খাওয়া ও ছিদ্র করা কমায়।
  • ধানি জমিতে বিকল্প পোষক ফসলের (জোয়ার) চাষ করা থেকে বিরত থাকুন।
  • আক্রমণ এড়াতে মৌসুমের শুরুতে চাষ করুন বা আগাম ফলনে সক্ষম জাত ব্যবহার করুন।
  • রোগের শুরুতেই লক্ষণ সনাক্ত করতে জমি পর্যবেক্ষণ করুন।
  • ফসল সংগ্রহের পর ধানের মুড়া ও খড় মাটি থেকে তুলে ফেলুন এবং পরের মৌসুমে পোকার আক্রমণ রোধ করতে জমিতে চাষ দিন।
  • পোকার জীবনচক্র ভাঙ্গতে একই এলাকার আশেপাশের জমির সাথে মিল রেখে চাষ করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন