অন্যান্য

ডায়মন্ডব্যাক মথ

Plutella xylostella

বালাই

সংক্ষেপে

  • কীড়া পোকার খাওয়ার কারনে পাতায় ছোট ছোট ছিদ্র হয় যা প্রায়শই পাতার ত্বকে জানালার মত দেখায়।
  • এরা ব্রকোলির ফুল এবং ফুলকপির মোচার ভিতরে পুত্তুলিতে পরিণত হয়ে ফসলের মান বিনষ্ট করে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

3 বিবিধ ফসল
বাঁধাকপি
সরিষা
ফুলকপি

অন্যান্য

উপসর্গ

ডায়মন্ডব্যাক মথ সাধারণত ক্ষতির দিক বিবেচনায় তুলনামূলকভাবে সামান্য ক্ষতিকারক পোকা হিসাবে বিবেচিত হয়। যা'হোক, আক্রমণ তীব্র হলে, ব্রাসিকা ফসলের জন্য ঝামেলা হতে পারে। আক্রমণে লার্ভার দ্বারা ক্ষতি হয় যা পাতার টিস্যুতে সুড়ঙ্গ খনন করে বা পত্র ফলকের নীচের পৃষ্ঠ ঝাঁঝরা করে। অনিয়মিত প্যাচ দৃশ্যমান হয় (যদিও উপরের পাতার ত্বকে আক্রমণ বেশি থাকে) মাঝে মাঝে কিছু এলাকা অক্ষত থাকতে পারে, যা জানালার মত দেখায়। বয়স্ক লার্ভা খুবই মারাত্মক বিশেষ করে তীব্র আক্রমণ পর্যায়ে, শুধু শিরা বাদে সম্পূর্ণ পাতা কঙ্কাল করে খেয়ে ফেলতে পারে। ব্রকোলি বা ফুলক্পির মাথা গঠনে বাধা দিতে পুষ্পিকায় লার্ভা থাকলে তা ধ্বংসাত্মক হতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

ডায়মন্ডব্যাক মথের প্রাকৃতিক শত্রুগুলির মধ্যে পরজীবী বোলতা, ডায়াডেগমা ইনসুলারি, উমিজাস সকলোভস্কি, মাইক্রোপ্লাইটিস প্লুটিলি, ডায়াড্রোমস সাবটিলিকর্নিস এবং কোটেসিয়া প্লুটিলি অন্যতম। প্যারাসিটয়েড বোলতা ছাড়াও পোকার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করতে এন্টোমো্প্যাথোজেনিক ছত্রাক বা নিউক্লিয়ার পলিহাইড্রোসিস ভাইরাস ( এনপিভি )ব্যবহার করা যেতে পারে। ব্যাসিলাস থিউরেঞ্জিয়েনসিস সংগঠিত কীটনাশক ব্যবহার করেও ভালো ফলাফল পাওয়া যায়, তবে এর প্রতি যাতে প্রতিরোধ গড়ে না ওঠে এর জন্য, পণ্যগুলি পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করার পরামর্শ রয়েছে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। কীটনাশকের প্রতি প্রতিরোধ গড়ে ওঠার কারনে বেশিরভাগ রাসায়নিক পণ্য (কিছু জৈবিক উপাদান সহ) তেমন কাজ করে না, তাই কীটনাশকের সক্রিয় উপাদান পরিবর্তন করে ব্যবহার করার সুপারিশ রয়েছে। ৮0 এর দশক থেকে পাইরিথ্রয়েড সংগঠিত পণ্য এক যুগ ব্যাপী ব্যবহারের পরে ইতিমধ্যে তা ব্যর্থ হতে শুরু করেছে।

এটা কি কারণে হয়েছে

প্লুটেলা জাইলোস্টেলা প্রজাতির ডায়মন্ডব্যাক মথের লার্ভা দ্বারা এ ক্ষতি হয়। এদের প্রধান আবাস হচ্ছে, ব্রাসিকা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত ব্রকোলি, বাঁধাকপি, ফুলকপি, মূলা এবং শালগম, এর পাশাপাশি বিভিন্ন প্রকার আগাছা। প্রাপ্তবয়স্ক পোকা আকারে ছোট এবং সরু, প্রায় ৬ মিমি দীর্ঘ এবং লম্বা শুঁড় থাকে। এদের দেহ গাঢ় বাদামী বর্ণের এবং পিছনের দিকে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ হালকা বাদামী পটি থাকে। এরা ভাল ভাবে দূরে উড়তে পারে না কিন্তু বাতাসের মাধ্যমে দীর্ঘ দূরত্বে পরিভ্রমণ করতে পারে। স্ত্রী পোকা পাতার নিচে গড়ে ১৫০টি ডিম পাড়ে, সাধারণত আটটি করে ছোট দলে এবং পাতায় শিরার কাছাকাছি এরা ডিম পেড়ে থাকে। অল্প বয়স্ক লার্ভা পাতায় ছিদ্র করে এবং বয়স্ক লার্ভা পাতার নিচের পৃষ্ঠে খাওয়া শুরু করে, ফলস্বরূপ অনিয়মিত প্যাচ তৈরি হয়। বৃষ্টিপাত হলে তরুণ লার্ভার মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • সরিষা, শালগম এবং খোলরবির প্রতিরোধী জাত নির্বাচন করুন।
  • পাতার পৃষ্ঠে সাধারণ মোম অনুপস্থিত এমন চকচকে জাত নির্বাচন করুন (ধূসর সবুজ রঙের চেয়ে সবুজ ভাল), কারণ এসব জাত এ পোকার প্রতিরোধী হয়।
  • রোপণের আগে চারা পোকামাকড় মুক্ত রয়েছে বলে নিশ্চিত করুন।
  • মাঠে ক্ষয়ক্ষতি বা লার্ভার উপস্থিতি আছে কিনা তা পর্যবেক্ষণ করুন (প্রতি ৩ টি গাছে অন্তত ১ টি লার্ভা বা প্রতি গাছে একটি পোকার ছিদ্র আদর্শ)।
  • বয়স্ক পোকা ধরতে এবং সংখ্যা নির্ধারণ করতে ফেরোমন ফাঁদ ব্যবহার করুন।
  • এ পোকা বৃষ্টিপাত পছন্দ করে না, তাই সম্ভব হলে স্প্রিঙ্কলার পদ্ধতির ওভারহেড সেচ ব্যবহার করুন।
  • উপযুক্ত অনাবাসী ফসল দ্বারা সাথী ফসল চাষের পরিকল্পনা করুন।
  • অন্যান্য পরিবারের ফসল নিয়ে ফসল চক্রের পরিকল্পনা করুন।
  • ফসল কাটার পরে ফসলের বর্জ্য অপসারণ ও ধ্বংস করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন