Elateridae
বালাই
কাটাকৃমি মাটির নিচে অঙ্কুরিত বীজ, শিকড়, কচি চারাগাছ খেয়ে ফেলে গাছকে সরাসরি মেরে ফেলে কিংবা আহত করে। এই ক্ষতস্থান কিছু সুবিধাবাদী জীবানুর উপযুক্ত প্রবেশপথ হিসেবে কাজ করে যা এর লক্ষনকে আরো খারাপ করে তোলে। কচি চারাগাছের মৃত্যু এবং এবং বীজ গর্ত হবার মাধ্যমে এই পোকার আক্রমন প্রকাশ পায়। পরবর্তী ধাপে কচি চারাগুলো নেতিয়ে পড়তে পারে এবং বিবর্ণ হতে পারে। বাইরের পাতাগুলো সবুজ থাকলেও কেন্দ্রীয় পাতাগুলো ক্ষতিগ্রস্থ বা মারা যেতে পারে। কান্ডের কাটা অংশ শিকড়ের সাথে লেগে থাকে। জমিতে পাতলা ক্ষতদাগ বা খালি দেখা যায়। বসন্তের শুরুতেই বেশিরভাগ ক্ষতিসাধন হয়। বসন্তে আলুর বীজের অংশে এটি আক্রমন করতে পারে এবং শরৎকালে তা স্ফীতকন্দে প্রবেশ করে।
কিছু গুবরে পোকা এবং বিচরনকারী পোকা কাটাকৃমি ধরে খায় । স্টিলেট্টো মাছির লার্ভা কাটাকৃমির শিকারী। নেমাটোডের কিছু প্রজাতিও কাটাকৃমির শিকারী। মেটারহিজিয়াম আনিসোপ্লি ছত্রাক কাটাকৃমিকে আক্রমন করে এবং মেরে ফেলে বলে মনে করা হয়। এই ছত্রাক সমৃদ্ধ গুটি কীটনাশক ব্যবহার করে দেখা হয়েছে এটা কাটাকৃমিকে নিয়ন্ত্রণ করে কিনা।
সম্ভমবমতো, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। কাটাকৃমির প্রতিরোধের জন্য রোপনের আগেই প্রতিকারমূলক ব্যাবস্থা নিতে হবে। এদের সংখ্যা কমানোর জন্য বীজ চিকিৎসা করে নিতে হবে। কিছু দ্রব্য ব্যবহারে দেশের বিধি নিষেধ মেনে চলতে হবে।
এর লক্ষণ গুবরে পোকার অপূর্ণাঙ্গ লার্ভা স্তরের কারনে ঘটে। কাটাকৃমিগুলো ২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত লম্বা, বাঁকানো, সিলিন্ডার আকৃতির দেহ এবং হলদে বা তামাটে বর্ণের হয়। গ্রীষ্মে স্ত্রী কৃমিরা কয়েকশত ডিম পাড়ে মাটির কণার উপর। ঝুরঝুরে বেলে মাটি তাদের বংশবৃদ্ধির জন্য ভালো। লার্ভা বয়স্ক হবার আগেই ২-৩ বছর ধরে মাটির নিচে অঙ্কুরিত বীজ, শিকড়, কচি চারাগাছ খেয়ে ফেলে। এর ফলে ফসলের উৎপাদন কমে যায়। গম ছাড়াও এরা ভুট্টা, ঘাস এবং সবজিতে আক্রমন করে। ফসলের ক্ষতি সাধারনত রোপনের পর লক্ষ্য করা যায় যখন কার্যকরী পদক্ষেপ নিতে দেরী হয়ে যায়। এজন্য গাছ রোপনের আগেই কাটাকৃমি আছে কিনা তা নিরীক্ষা করে নিতে হবে ।