জলপাই

পার্পল মুসেল স্কেল

Lepidosaphes beckii

বালাই

সংক্ষেপে

  • ডিম্বাকৃতি, সমতলাকার, ঈষৎ বেগুনী বাদামী রঙের বালাই যাকে দেখতে গাছের পৃষ্ঠতলের উপরে ক্ষুদ্র ফুলে ওঠা অংশের মতো লাগে।
  • ফলের উপরে সবুজ দাগ থাকে যা বালাইয়ের খাওয়ার ফলে সৃষ্টি হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

জলপাই

উপসর্গ

পার্পল মুসেল স্কেল পোকা উদ্ভিদের পৃষ্ঠতল আঁকড়ে থাকে, যার মধ্যে ফল, পাতা, ডালপালা, ও গাছের ধড় অন্তর্ভুক্ত। পোকা উদ্ভিদের তরল রস পান করে, যার ফলে খালি চোখে দেখা যায় এমন কিছু সমস্যা তৈরী হয়। পাকা ফলের যে অংশে বসে স্কেল পোকা খায় সেই অংশটি সবুজ হতে শুরু করে। পাতা হলুদ হয় এবং গাছ থেকে খসে পড়তে পারে। গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে, শাখাপ্রশাখার শেষভাগ শুকিয়ে যেতে শুরু করে এবং এই ক্ষতি শাখাপ্রশাখার প্রধান অংশের দিকে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

ডিমের প্রথম স্ফুটনের আগে শীতের শেষভাগে বা আগেভাগেই গুরুতর সংক্রমণকে চিহ্নিত করতে পারলে অপরিবর্ধিত তেল ও লাইম সালফার গাছে স্প্রে করুন। ছোট গাছে , বা বড় গাছের যে অংশে হাত পৌঁছায় সেখান থেকে আপনি প্লাস্টিক ডিশ স্ক্রাবার দিয়ে বহু সংখ্যক বালাইকে ঝেড়ে নিয়ে সংগ্রহ করতে পারেন। সাধারণত, প্রাকৃতিক শত্রুরা এই সমস্ত বালাইকে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রাখে, তাই এই সমস্ত বালাই খুব বেশী সমস্যার কারণ হয় না।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

এই বালাই সাধারণত ন্যূনতম ক্ষতির কারণ হয়, কিন্তু সংখ্যাধিক্য হলে এগুলিই গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে, এবং তখন রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণের সম্ভাবনা তৈরী হয়। এই সমস্ত বালাইগুলিকে আপনি দেখতে পেলেও বালাইনাশক দিয়ে মেরে ফেলাটা খুবই কঠিন কারণ এদের দেহের শক্ত খোল এদের রক্ষা করে। মরশুমের শুরুতেই যখন স্বল্প বয়সী, অসুরক্ষিত বালাইগুলি খাওয়ার আগে ইতস্ততঃ ঘুরে বেড়ায় তখন এদের নিয়ন্ত্রণ করাটাই সেরা উপায়। শক্তিশালী এবং নির্বিচারে প্রয়োগ করা যায় এমন বালাইনাশক যেমন সিন্থেটিক পাইরেথ্রেয়ডস, ব্যবহার করাটা এড়িয়ে চলাই ভালো কেননা এই ধরণের বালাইনাশক উপকারী শিকারী পতঙ্গকেও হত্যা করতে পারে। যে ধরণের বালাইনাশককে উদ্ভিদ শোষণ করতে পারে তেমন বালাইনাশক ব্যবহার করাটাই ভালো।

এটা কি কারণে হয়েছে

গাছের উপরে যে স্ফীত অংশ দেখা যায় সেগুলিই স্ত্রী পার্পল মুসেল স্কেল বালাই। সেগুলি সরে যেতে পারে না এবং ঈষৎ বেগুনী-বাদামী সুরক্ষামূলক আবরণের নীচে লুকিয়ে পড়ে। স্ত্রী পোকা তার সুরক্ষামূলক আবরণের নীচে ডিম পাড়ে, এবং এই স্থানে সারা শীতকাল নিরাপদে কাটায় এবং মে বা জুন মাসের শেষে ডিম ফুটে বাচ্চা স্কেল পোকা বেরিয়ে আসে। এই সমস্ত বালাইগুলি বছরে একবার প্রজনন করে। স্বল্প বয়সী বালাইগুলি চলতে পারে এবং হেঁটে অথবা বাতাস, যানবাহন, প্রাণী, পাখি, ও মানুষের জামাকাপড়ের মাধ্যমে নতুন গাছে ছড়িয়ে পড়ে। গাছের অবশিষ্টাংশের স্থানান্তরের মাধ্যমেও বালাই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গাতে ছড়িয়ে যেতে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • বালাই-মুক্ত উপকরণ ব্যবহার করুন।
  • পর্যাপ্ত জলসেচ করে এবং পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে গাছকে সুস্থ রাখুন যা বালাইয়ের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে সাহায্য করে।
  • ফলের বাগানে স্কেল পোকার নিয়মিত তদারকি প্রয়োজনীয়।
  • প্রাপ্তবয়স্ক বালাইয়ের সন্ধান করতে পাতার তলদেশ বা কচি কাণ্ড পরীক্ষা করে দেখতে ভুলবেন না, বিশেষ করে ছায়াযুক্ত ও আশ্রয় নেওয়া হয় এমন জায়গায়।
  • বালাইকে তাড়াতাড়ি চিহ্নিত করাটা গুরুত্বপূর্ণ! আপনি প্রাপ্তবয়স্ক বালাইকে সহজেই খালি চোখে দেখতে পেলেও, স্বল্প বয়সী বালাইকে চিহ্নিত করাটা খুবই শক্ত।
  • স্বল্প বয়সী বালাইয়ের প্রথম প্রজন্মটিকে চিহ্নিত করতে, দুই দিকেই আঠা দেওয়া ফিতেকে আগেই আক্রান্ত হয়েছে এমন গাছের ডালপালার চারিদিক ঘিরে লাগিয়ে দিন।
  • স্বল্প বয়সী বালাই ক্ষুদ্রাকৃতি, সমতলাকার, স্বচ্ছ, এবং এদের দেহে সরু পা আছে।
  • প্রতি দুইদিনে একবার আঠালো ফিতেটিকে পরীক্ষা করে দেখুন যে এই ফিতেতে স্বল্প বয়সী বালাই আটকে আছে কিনা।
  • যদি ফিতে ভিজে যায় বা ধুলিপূর্ণ হয়, তাহলে এটিকে পরিবর্তন করুন।
  • বিকল্পভাবে, আপনি গাছের শাখাপ্রশাখার নীচে একটি সাদা কাগজ ধরতে পারেন এবং একটি লাঠি দিয়ে গাছে মৃদু আঘাত করতে পারেন।
  • ধীর গতিতে চলা সাদা, হলুদ, কমলা, বা বেগুনী রঙের বালাইগুলি নীচে কাগজের উপরে পড়বে এবং কাগজের সাদা পটভূমিতে এগুলিকে স্পষ্টভাবে দেখা যাবে।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন