Amrasca biguttula
বালাই
আক্রান্ত পাতা হলদেটে বর্ণ ধারণ করে, এরপর পাতার কিনারা থেকে বাদামী বর্ণ শুরু হয়ে মধ্যশিরা পর্যন্ত ছড়িয়ে যায়। সম্পূর্ণ মরে যাওয়ার আগে পাতা ধীরে ধীরে কুঁকড়ে যেতে থাকে এবং এর পরে গাছ থেকে ঝরে পড়ে যায়। মারাত্মক এ ঘটনাকে "hopper burn" আঘাত বলে অভিহিত করা হয় এবং পাতা মরে যাওয়ার ফলে বাড়ন্ত গাছের বৃদ্ধি থমকে যায়। বৃদ্ধির পরবর্তী পর্যায়ে এ ঘটনা ঘটলে গাছের ফল উৎপাদন ক্ষমতা ব্যাহত হয় এবং বেশীর ভাগ ক্ষেত্রে ফসলের কম উৎপাদন ও তন্তু নিম্ন গুণমানের হয়।
তুলার হপারকে সবুজ লেস উইং (Chrysoperla carnea) নামক শিকারী পতঙ্গ ধরে খেয়ে ফেলে। এই শিকারী পতঙ্গ অরিয়াস বা জিওকরিস নামক বর্গের অন্তর্ভুক্ত, আবার কিছু প্রজাতি Coccinellids ও মাকড়শা শ্রেণীর। এই প্রজাতিগুলিকে হপারের বিনাশ করার কাজে লাগানো এবং নির্বিচারে কীটনাশক প্রয়োগ বন্ধ রাখুন। প্রথম উপসর্গ দেখার সঙ্গে সঙ্গে স্পিনোস্যাড ( ০.৩৫ মিলি/লি ) স্প্রে করুন।
সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ম্যালাথিয়ন, সাইপারমেথ্রিন (প্রতি লিটারে ১ মিলি.), সালফক্সাফ্লোর, ক্লোরপাইরিফস (প্রতি লিটারে ২.৫ মিলি.), ডাইমেথোয়েট, ল্যামডাসাইহ্যালোথ্রিন (প্রতি লিটারে ১ মিলি.) বা ক্লোর্যানট্র্যানিলিপ্রোল+ ল্যামডা-সাইহ্যালোথ্রিন (প্রতি লিটারে ০.৫ মিলি.) সমৃদ্ধ কীটনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে। যদিও এই সমস্ত কীটনাশক তুলার হপারের শত্রু পতঙ্গকেও ধ্বংস করতে পারে, সেইজন্য গুরুতর কোন ক্ষেত্রেই শুধু সময়মতো কীটনাশক ব্যবহার করুন। কীটনাশক দ্বারা বীজ পরিশোধন হপারের বংশবৃদ্ধি ৪৫ থেকে ৫০ দিন পর্যন্ত দমন করতে পারে।
বাচ্চা ও পূর্ণবয়স্ক অ্যামরাসকা পোকা গাছের প্রাণরস শুষে নিতে থাকে এবং এর ফলে পতঙ্গের লালার সঙ্গে মিশ্রিত অবস্থায় বিষাক্ত পদার্থ কোষকলাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সালোকসংশ্লেষ পদ্ধতিকে অকেজো করে দেয়। মৃদু থেকে উচ্চ তাপমাত্রা (২১ ডিগ্রি থেকে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা) ও আর্দ্রতা (৫৫ থেকে ৮৫%) সরাসরি এই পতঙ্গের উপস্থিতি ও বংশবৃদ্ধির সহায়ক। কম তাপমাত্রা এবং ঝড়ো বাতাস এই পতঙ্গের বংশবৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঋণাত্মক প্রভাব ফেলে।