কলা

কলায় দাগ সৃষ্টিকারী বিটল

Colaspis hypochlora

বালাই

সংক্ষেপে

  • ফলের খোসা ও কচি পাতায় প্রচুর দাগ পড়ে।
  • দাগগুলো ডিম্বাকৃতির হয়।
  • শূককীটের খাওয়ার কারণে শিকড়ের ক্ষতি হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

2 বিবিধ ফসল

কলা

উপসর্গ

পরিণত বিটল বিভিন্ন আগাছার পাশাপাশি কলা গাছের বিকাশমান কচি পাতা, কাণ্ড ও মূল খেয়ে থাকে। এরা কচি ফলও খেয়ে ফেলে, খোসায় গভীর দাগ সৃষ্টি করে যার ফলে কলা বিকৃত হয়ে যায় এবং বাজারজাতকরণের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। অধিকাংশ দাগ ফলের গোড়ায় হয় যা থেকে প্রতীয়মান হয় যে, বিটল সবচেয়ে নিরাপদ স্থান (যেমন- মঞ্জরীপত্রের নিচে) খাবারের জায়গা হিসাবে পছন্দ করে। গভীর ক্ষতগুলোর অধিকাংশই ডিম্বাকৃতির এবং ফলে ক্ষত সৃষ্টিকারী মৌমাছি মেলিপোনা এমালথিয়া-র সৃষ্ট ক্ষতের সাথে বিভ্রান্তিকর হতে পারে। সুযোগসন্ধানী জীবাণুর দলগত আবাস বা কলোনি সৃষ্টির কারণে এ ক্ষত আরও খারাপ হয়ে দাঁড়ায়। শূককীট কচি মূল খেয়ে থাকে এবং বয়স্ক মূলের কোষকলা খেতে তাতে নালা তৈরী করে। সাধারণত বর্ষাকালে এ বালাইয়ের উৎপাত বেশি হয়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

অদ্যাবধি এ বালাইয়ের বিরুদ্ধে জৈবিক নিয়ন্ত্রণের কৌশল সুনির্দিষ্ট হয়নি। এ বালাইয়ের বিস্তার পরিহারে সবচেয়ে জুতসই প্রতিরোধ ব্যবস্থা হল সঠিক পদ্ধতিতে আগাছা দমন।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভাব্যক্ষেত্রে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। সঠিকভাবে আগাছা দমন করলে এ পোকার সংখ্যা হ্রাসে কীটনাশকের প্রয়োজন হয় না বলে রাসায়নিক দমনব্যবস্থার পরামর্শ সাধারণত দেওয়া হয় না। তীব্র আক্রমণে ০.১ শতাংশ ফরমুলেশনের কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। যা'হোক, যতক্ষণ পর্যন্ত এ বিটল বিরাট পরিমাণে অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধন না করছে, ততক্ষণ পর্যন্ত কীটনাশকের ব্যবহার পরিহার করা উচিত।

এটা কি কারণে হয়েছে

কলায় গভীর ক্ষত সৃষ্টিকারী বিটল কোলাসপিস হাইপোক্লোরা-র কারণে এ ক্ষতি হয়। পরিণত পোকার সামনের পাখা বাদামী রঙের হয় এবং ছোট ছোট সমান্তরাল বিন্দুর বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সারি থাকে। এরা খুব ভালো উড়তে পারে। স্ত্রী পোকা এককভাবে বা গুচ্ছাকারে ৫-৪৫ টির মত হালকা লেমন-হলুদ রঙের ডিম পাড়ে। শীর্ষের নিকটবর্তী পাতার খোলসে চিবানোর কারণে সৃষ্ট গর্তে বা মূলের পৃষ্ঠে স্বাভাবিক গর্তে এরা ডিম পাড়ে। ৭ থেকে ৯ দিন পর, সদ্য ফোটা শূককীট কচি শিকড় খেতে শুরু করে বা বয়স্ক শিকড়ের আভ্যন্তরীণ নরম কোষকলা খেতে এর মধ্যে নালিকা তৈরি করে। তাদের শরীর সাদাটে, চোখা ও লোমশ এবং মাথা কিছুটা তৈলস্ফটিক রঙের। মূককীট অপরিচ্ছন্ন হলুদ রঙের, পরিণত পোকা বের হবার সময়ে গাঢ় রঙ ধারণ করে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • এ পোকা আগাছার উপর বেঁচে থাকে বলে বাগানে নিয়মিত আগাছা পরিষ্কার করুন।
  • নিষ্কাশন নালার নিকটে কলার চারা রোপন করবেন না।
  • মাটির সমান্তরাল থেকে নিচের আপাতকাণ্ড অপসারণ করুন এবং কন্দের যে স্থানে শূককীট পরিণত অবস্থা প্রাপ্ত হয় তা ছেঁটে ফেলুন।
  • বাগান থেকে গাছের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ অপসারণ করুন।
  • শূককীট শিকারি পোকার জন্য উন্মুক্ত করতে মাটি আঁচড়ে দিন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন