Achaea janata
বালাই
মসৃণ ধূসর-বাদামী কীড়াপোকা পাতার শিরাসমূহ কংকালসার করা থেকে শুরু করে (শুধুমাত্র প্রধান শিরা বাদে) উদ্ভিদের সম্পূর্ণ পত্রমোচন হওয়া বা ক্ষেতের চরম ধ্বংসসাধন করে ফসলের ক্ষতি করে। কম বয়সী শূককীট/কীড়া পাতার বহিরাবণ খেয়ে কংকালসার করে ফেলে এবং বয়স্ক শূককীট/কীড়া আগ্রাসী খাদক হয়ে পুরো গাছের পাতা খেয়ে ফেলে উল্লেখযোগ্য ক্ষতিসাধন করতে পারে।
শূককীট দশার প্রথম পর্যায়ে ৫% নিম বীজের শাঁসের নির্যাস এবং ২% নিমের তেলের মিশ্রন প্রয়োগে পোকার সংখ্যা কমে যাবে। ট্রাইকোগ্রামা এভানেসেন্স মিনিউটাম প্রজাতির বোলতা ডিম পরজীবায়ণ করে। অন্যদিকে ব্রাকোনিড পরজীবী , মাইক্রোপ্লিটিস মাকিউলিপেনিস এবং রোগাস গোত্রের প্রজাতি শুককীটকে পরজীবায়ণ করে। অন্যান্য পরজীবীগুলোও বাণিজ্যিকভাবে সহজলভ্য বা পরীক্ষামূলক গবেষণার অধীনে রয়েছে। এছাড়াও পাখির কিছু প্রজাতিও এ শূককীটের শিকারী। পাখিকে বসার জায়গা দিলে তা কীটের আক্রমণ কমাতে সহায়ক হবে।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ফুল ফোটার পর থেকে তিন সপ্তাহের ব্যবধানে তিনবার ম্যালাথিয়ন স্প্রে করা যেতে পারে। সেমি-লুপারের সংখ্যার আধিক্য হলে ক্লোরোপাইরিফস ২মিলি/লিটার জলের সাথে মিশিয়ে স্প্রে করুন।
অফিউসা মেলিসেরটার শূককীট/কীড়া চিবিয়ে খায়। প্রাপ্তবয়স্ক মথ হালকা বাদামী হয় এবং পুরো শরীরের উপর আঁশ থাকে, যা একটি হ্যাং-গ্লাইডারের অনুরূপ দেখতে হয়। এ মথের পেছনের দিকে শেষের অংশে কালো এবং সাদা বিন্যাস থাকে। স্ত্রী পোকা পাতার উপরের পৃষ্ঠে এবং গাছের নরম অংশগুলোতে গাদা করে ডিম পাড়ে। ডিম সবুজাভ রঙের হয় এবং সুন্দরভাবে ডিমের গায়ে উঁচু-নিচু লম্বা খাঁজকাটা থাকে। সম্পূর্ণ বয়স্ক শুঁয়োপোকা ৬০ মিলিমিটার পর্যন্ত লম্বা হতে পারে এবং তাদের মাথা হয় কালো এবং শরীরে বিভিন্ন রঙে বিন্যস্ত থাকে। এদের শরীর মখমলসদৃশ, পিঠের কালো পৃষ্ঠের উপর লম্বালম্বিভাবে একটি কালো ডোরাকাটা আঁকাবাঁকা দাগ দেখা যায়। শূককীট দশা ১৫-১৯ দিন পর্যন্ত স্থায়ী হয় এবং সম্পূর্ণ কীটে পরিণত হতে ৩৩-৪১ দিনের মত সময় লাগে।