অন্যান্য

ফলের মাছি পোকা

Zeugodacus cucurbitae

বালাই

সংক্ষেপে

  • ফলের মধ্যে সুড়ঙ্গ পথ সৃষ্টি করার কারনে এবং কীড়া পোকার ফল খাওয়ার ফলে পচন ধরে ও ফল অকালে ঝড়ে পড়ে।
  • ফলের উপর ছোট বিবর্ণ দাগ দেখা যায়।
  • মাছির কীড়া পোকা চারাগাছ, শিকড়, এবং কুঁড়িতে আক্রমণ করতে পারে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

9 বিবিধ ফসল

অন্যান্য

উপসর্গ

জেড কিউকারবিটির স্ত্রী পোকা ফলের ত্বক ছিদ্র করে ডিম পাড়ে। কীড়া পোকা ফলের মধ্যে সুড়ঙ্গ তৈরি করে। ফলের শাঁসের ভিতরে উল্লেখযোগ্য ক্ষতি ( বিষ্ঠা দূষণ, পচন) সাধন করতে পারে। ফলের ত্বকের উপর যেখানে ডিম পাড়ে, সেখানে ক্ষুদ্র, বিবর্ণ দাগের বিকাশ ঘটতে পারে। পোকার ডিম পাড়ার ফলে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়, সেখানে কিছু আক্রমণকারী ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতির ফলে দ্বিতীয় ধাপের আক্রমনের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে। আক্রান্ত ফল পচে যায় এবং প্রায়শই গাছ থেকে অপরিণত অবস্থায় ঝরে পড়ে। মাছির কীড়া পোকা ছোট চারাগাছে আক্রমণ করে, তরমুজের নরম প্রধান মূল এবং আবাসি গাছের শাখা ও কাণ্ড, যেমনঃ কুমড়া, স্কোয়াশ এবং অন্যান্য ফসলে আক্রমণ করে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

ফসল সংগ্রহের পরে তাপবাহিত শোধন (গরম বাষ্প বা গরম জল) বা পরিবহনের সময় ও পরে শীতার্ত শোধন দূষণের ঝুঁকি কমায়। বাড়ন্ত ফল প্রতিরক্ষার জন্য মোড়ক ব্যবহার করুন বা ফেরোমোনের ফাঁদ বা প্রোটিন ফাঁদ (যেমন মিথাইল ইউজিনল যা পুরুষ মাছি পোকাকে আকর্ষণ করে) ব্যবহার করুন । ওসিমাম স্যাংটাম ( তুলসি ) পাতার নির্যাস, যার মধ্যে ইউজিনল, বিটা-ক্যারিওফিলিন এবং বিটা-এমেনি রয়েছে, এগুলো তুলোর প্যাডে স্থাপন করলে ০.৮ কিলোমিটারের দূরত্ব থেকে তা মাছিকে আকর্ষণ করে। স্পিনোস্যাডের সাথে মাখানো এসব উপাদান ফলের বাগানে ছিটিয়ে দিলে মাছি পোকাকে আকর্ষণ করে, ফলে এভাবে দমন করা যায়। নিম বীজের নির্যাস মাছি পোকার ডিম পাড়া প্রতিরোধী হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন । ম্যালাথিয়ন সংগঠিত কীটনাশক ফলের মাছি কীড়া পোকার বিরুদ্ধে মাঝারিভাবে কার্যকর। নির্দিষ্ট অবস্থান স্থাপনের জন্য মাছি দমনে স্প্রে ফাঁদের সঙ্গে প্রোটিন মিশ্রিত করতে হবে।

এটা কি কারণে হয়েছে

মাছি পোকা ফলের ত্বকের ভিতর গুচ্ছাকারে ডিম পাড়ে। সম্পূর্ণরূপে এর বিকাশ ঘটলে মাছির কীড়া পোকা ১০- ১২ মিমি লম্বা হয় এবং ফলের শাঁস ছিদ্র করে আক্রমন করতে পারে। পিউপেসন সাধারণত ১০ দিন স্থায়ী হয়, এ প্রক্রিয়াটি সাধারণত মাটিতে সম্পন্ন হয়, কিন্তু মাঝে মাঝে ফলের মধ্যেও ঘটে। পিউপার একটি ডিম্বাকৃতি, বাদামী এবং ৬-৮ মিমি দীর্ঘ খাঁচার মধ্যে বিকাশ ঘটে। খুব শুষ্ক এলাকায় পিউপার বিকাশ রোধ ঘটে। প্রাপ্তবয়স্ক পোকা ৮-১০ মিমি লম্বা হয়ে থাকে, গাঢ় বাদামী মাথা এবং পিঠের উপর তিনটি উজ্জ্বল হলুদ ডোরাকাটা দাগ বিশিষ্ট হয়। এরা ফুলের মধু, ক্ষতিগ্রস্ত ফলের রস এবং গাছের রস খেয়ে থাকে। পোকার পাখা ১২-১৫ মিমি পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে, যা স্বচ্ছ হয় ও পাখার সামনে একটি গাঢ় বাদামি ডোরাকাটা দাগ দেখা যায়। জীবনচক্র সম্পন্ন হতে ৩-৪ সপ্তাহ সময় নেয় এবং প্রতি বছর একাধিক চক্রের পুনরাবৃত্তি ঘটে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • মাছির সমস্ত কীড়া পোকা ধ্বংস করার জন্য আক্রান্ত সব ফল মাটির ০.৫ মিটার গভীরে পুঁতে ফেলতে হবে।
  • পিউপা যাতে সূর্যের আলোয় মুক্ত হয় সেজন্য জমি নিয়মিত চাষ দিন এবং মৃত পিউপা মাটিতে পুঁতে ফেলুন।
  • সম্ভব হলে, প্রতিরোধী জাত ব্যবহার করুন।
  • নিয়মিত ফাঁদ স্থাপন করে জমি পর্যবেক্ষণ করুন।
  • বিশেষ করে বয়স্ক মাছি পোকা ধরার জন্য সমন্বিতভাবে ফাঁদ পাতুন।
  • আক্রান্ত স্থান থেকে সংক্রামিত ফল অন্য স্থানে স্থানান্তর করবেন না।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন