Citripestis eutraphera
বালাই
ঝুলন্ত আম মটর বা লেবুর মত আকারের হলে এর দূরবর্তী প্রান্তে কালো রঙের প্রবেশপথ দেখা যায়, যা প্রায়ই বিবর্ণ ছোপ দ্বারা বেষ্টিত থাকে। ফল বড় হলে চর্বিত শাঁস ও রস প্রবেশ পথ দিয়ে বেরিয়ে আসে। ছিদ্রকারী পোকা ব্যাপকভাবে সুড়ঙ্গ তৈরী করে বলে ফল ফেটে যেতে পারে। এরপর শূককীট অন্য একটি ফলে আক্রমণ করে। ডিম থেকে সদ্য ফোটা শূককীটের মাথা ঘন বাদামী থেকে কালো রঙের ও শরীর হালকা গোলাপি হয়। পরবর্তীতে তারা লালচে বাদামী রঙ ধারণ করে। প্রাথমিকভাবে তারা ফলের গায়ে আঁচড় কাটে তারপর ভেতরে ঢুকে যায় যার ফলে কচি ফল অকালে ঝরে যায়। মারাত্মকভাবে আক্রান্ত গাছে তাদেরকে সংখ্যায় একশতের মত পাওয়া যেতে পারে। আক্রান্ত ফল অপরিণত অবস্থাতেই ঝরে পড়ে।
ফুল ধারণ থেকে শুরু করে দুই মাস পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহ অন্তর অন্তর নিমের নির্যাস প্রয়োগ করুন। আমের ফল ছিদ্রকারী পোকার প্রাকৃতিক শত্রুদের সংখ্যার সাম্য নিশ্চিত করুন। এদের মধ্যে রয়েছে রিকিয়াম এট্রিসিয়াম বোলতা (শূককীট খেয়ে থাকে), ট্রাইকোগ্রামা চিলোনিস এবং ট্রাইকোগ্রামা চিলোট্রি, যা ডিম অবশ করে ফেলে।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। থিয়াক্লোপ্রিড সমৃদ্ধ রাসায়নিক কার্যকরভাবে আমের ফল ছিদ্রকারী পোকা দমন করে। মার্বেল আকৃতির ফলে ফেনপ্রোপাথ্রিন ও ফেনথিওন (০.১%)ভিত্তিক কীটনাশক ছিটিয়ে দিলেও সন্তোষজনক ফলাফল পাওয়া যায়। ক্লোরোপাইরিফস (প্রতি লিটারে ২.৫ মিলি)বা ডাইক্লোরোভাস (প্রতি লিটারে ১.৫ মিলি) বা কার্বারিল (প্রতি লিটারে ৩ গ্রাম) সমৃদ্ধ রাসায়নিক ছিটিয়েও আমের ফল ছিদ্রকারী পোকা সফলভাবে দমন করা যায়।
পূর্ণাঙ্গ মথের সামনের পাখা ঘন বাদামী ও পিছনের পাখা হালকা সাদা থেকে ধূসর বর্ণের হয়। এরা মাঝারি আকারের হয় যাদের পাখার বিস্তার ২০ মিমি হয়ে থাকে। পূর্ণাঙ্গ মথ প্রায় ১ সপ্তাহ বাঁচে এবং ফল ও বোঁটার খসখসে/ অমসৃণ অংশে ১২৫-৪৫০ টি ডিম পাড়ে। শূককীট ফলে প্রবেশ করে এবং শাঁস ও বীজ খেয়ে থাকে। সম্পূর্ণভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত বিছা দৈর্ঘ্যে প্রায় ২০ মিমি পর্যন্ত হয়। এটি ঝরে পড়া ফলের পাশে মাটিতে রেশমি কোকুনে মূককীট দশা সম্পন্ন করে। বৃদ্ধি হতে প্রায় ৩০ দিন সময় লাগে। আক্রান্ত ফল পরিবহনের মাধ্যমে এ বালাইয়ের বিস্তার ঘটে। অধিকন্তু পূর্ণাঙ্গ মথ ভিন্ন বাগানে উড়ে যেতে সক্ষম।