আখ

আখের আগাম মাজরা পোকা

Chilo infuscatellus

বালাই

সংক্ষেপে

  • কাণ্ড ও পাতায় খাওয়ার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত অংশ পরিলক্ষিত হয়।
  • কচি গাছে মরাডিগ দেখা দেয়।
  • আক্রান্ত পর্ব থেকে দুর্গন্ধ নির্গত হয়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

1 বিবিধ ফসল

আখ

উপসর্গ

পাতার নিম্ন বহিঃত্বকে ৩-৫ সারিতে ৬০টি-র মত সাদা, চ্যাপ্টা ডিম গুচ্ছাকারে পাওয়া যায়। ছোট শুককীট পাতায় বিশেষতঃ পাতার অগ্রভাগে ছোট ছিদ্র তৈ্রী করে। বয়স্ক শুককীট কান্ডের গোড়ায় ছিদ্র করে কুশির ভিতরে প্রবেশ করে এবং ভিতরের নরম কোষকলাগুলো খেতে থাকে,ফলে উদ্ভিদে মরাডিগ লক্ষণ দেখা দেয়। আক্রান্ত উদ্ভিদের পাতার পত্রমূল সমূহ শুকিয়ে যেতে পারে। রোগগ্রস্ত স্থান থেকে দুর্গন্ধ নির্গত হয়। আগাম মাজরা পোকা মূলত মধ্যপর্ব ছিদ্রকারী লার্ভা হিসাবে কাজ করে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

চারা রোপনের এক মাস থেকে ফসল আহরণের এক মাস আগে পর্যন্ত ৭-১০ দিন বিরতি দিয়ে ডিম পরজীবী ট্রাইকোগ্রামা কাইলোনিস (Trichogramma chilonis) ক্ষেতে অবমুক্ত করতে হবে। রোপণের ৩০-৪৫ দিন পর Sturmiopsis inferens স্ত্রীপোকা ছেড়ে দিতে হবে। ফসলের বয়স ৩০তম, ৪৫তম এবং ৬০তম দিন হলে আখের আগাম মাজরা পোকার granulosis ভাইরাস প্রতি মিলি লিটারে ৮-১০ টি প্রয়োগ করতে হবে। সেচ দেওয়ার পর পর সান্ধ্যকালীন সময়ে ভাইরাস প্রয়োগ করতে হবে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। যদি কীটনাশকের প্রয়োজন হয় তাহলে ক্লোরোট্রানিলিপ্রল (chlorantraniliprole) , ফিপ্রোনিল (fipronil) অথবা কুইনালফস (quinalphos) স্প্রে করতে হবে। চারা রোপণ এবং বৃদ্ধির সময়ে সময় দানাদার কাপটান হাইড্রোক্লোরাইড প্রয়োগ করলে রোগের আক্রমণ কম হয়।

এটা কি কারণে হয়েছে

১-৩ মাস বয়সী শস্যগুলো অতি সংবেদনশীল। স্ত্রীপোকা পাতার অগ্রভাগের নিম্ন বহিঃত্বকে ৩-৫ সারিতে গুচ্ছাকারে ৬০টির মত সাদা চ্যাপ্টা ডিম পাড়ে। ১-৬ দিনের মধ্যে ডিম ফুটে শুককীট বের হয়, পরে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে পড়ে এবং মাটির উপরে গর্ত করে কান্ডে প্রবেশ করে। শুককীট স্থানান্তরিত হতে পারে এবং একই সাথে একাধিক কাণ্ড আক্রমণ করতে পারে। এটি ২৫-৩০ দিনের মধ্যে সম্পূর্ণভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয় এবং পুত্তলি পর্যায় কান্ডের মধ্যেই সম্পন্ন হয়। ৬-৮ দিন পর বয়স্ক পোকা বের হয়। জীবন চক্র ৩৫-৪০ দিনে সম্পূর্ণ হয় ।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • রোগ প্রতিরোধী অথবা সহনশীল জাত ব্যবহার করুন।
  • আখ ক্ষেতের নিকটে আশ্রয় প্রদানকারী আগাছা (দূর্বা, ঘাস,ভুট্টা) রোপণ পরিহার করুন।
  • পোকার উপদ্রব এড়ানোর জন্য আগাম চাষ করুন।
  • পোকা ধরার জন্য ফেরোমোন স্লীভের ফাঁদ অথবা আলোক ফাঁদ ব্যবহার করুন।
  • ফসল আহরণ করার পর শুষ্ক কাণ্ড ও ফসলের অবশিষ্টাংশ অপসারণ ও ধ্বংস করুন।
  • ডাল জাতীয় শস্য ও ধইঞ্চা দিয়ে সাথীফসলের চাষাবাদ বড় পোকাদের প্রতিহত করতে সাহায্য করে।
  • বেশী মাত্রায় নাইট্রোজেন জাতীয় সারের ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন ।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন