Diatraea saccharalis
বালাই
5 mins to read
শুককীট/কীড়াপোকা আখের ডগায় আলপিনের মতো গর্ত তৈরী করে। কচি কাণ্ডের আভ্যন্তরীন কোষকলা আক্রান্ত হওয়ার কারনে মরা-ডিগ নামক রোগের লক্ষণ দেখা দেয়। পুরাতন গাছের কাণ্ড এবং পাতার সংযোগস্থলে এবং পাতার খোলে শুককীট/কীড়াপোকা ছিদ্র করে ভেতরে প্রবেশ করে। শুককীট/কীড়াপোকা বড় হয়ে সুড়ঙ্গ তেরী করে। মারাত্মকভাবে আক্রান্ত হলে গাছের বৃদ্ধি কমে যায় এবং খর্বাকৃতির হয়; প্রতিকূল আবহাওয়ায় স্বভাবতই ভেঙে বা ঢলে পড়ে। সম্পূর্ণ কাণ্ডেই ছোট ছোট ছিদ্র পরিলক্ষিত হয় এবং আখের ফলন এবং রসের গুণমান হ্রাস পায়।
আখের বীজখন্ড ২৫.৬ ডিগ্রী তাপমাত্রায় ৭২ ঘন্টার জন্য ডুবিয়ে রাখুন ; এর ফলে ২৭-১০০% পর্যন্ত মাজরা পোকার ডিম ধ্বংস হবে। এভাবে শোধনের ফলে অংকুরোদগমে কোন ব্যাঘাত ঘটবেনা বরং আখের ভালো ফলন হয়। অনেক পরজীবি ও শিকারী পোকা ব্যবহার করে D. saccharalis বা আখের মাজরা পোকা দমন করা যায়। ডিমের সংখ্যা যতদূর সম্ভব কম রাখতে পরজীবী বোলতা Trichogramma ও Solenopsis invicta নামক লাল পিপীলিকা মাঠে ছেড়ে দিন।
সম্ভাব্যক্ষেত্রে, সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে র্সবদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। জমি নিয়মিত পর্যবেক্ষন করুন যেন পোকার বিস্তার এমন না হয় যাতে অর্থনৈতিক ভাবে ব্যাপক ক্ষতির কারন হয়। ক্লোরান্ট্রানিলিপ্রোল (chlorantraniliprole), ফ্লুবেন্ডায়ামাইড (flubendiamide), পোকার বংশ নিয়ন্ত্রক কীটনাশক ব্যবহার করুন যাতে বয়স্ক শুককীট/কীড়াপোকা সুড়ঙ্গ তৈরী করতে না পারে।
পোকার জীবন চক্র তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। মাজরা পোকা সাধারণত উষ্ণ-আবহাওয়ায় ২৫-৩০ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ রূপ ধারণ করে এবং ঠাণ্ডা আবহাওয়ায় এর চেয়ে ৫ দিন বেশী লাগতে পারে। শীতকালে অতিরিক্ত বৃষ্টিপাত ও স্বল্প তাপমাত্রায় শুককীট/কীড়াপোকা-র বংশবৃদ্ধি কম হয়। উষ্ণ-আবহাওয়া এবং হাল্কা বৃষ্টিপাত পোকার বৃদ্ধির জন্য সহায়ক। অগভীরভাবে চাষের কারনে আক্রান্ত আখের অবশিষ্টাংশের ভিতর গোটা শীতকালটাই কাটিয়ে দেয়। স্বাভাবিক শত্রুর অভাব এবং অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সার প্রয়োগ পোকার বংশবৃদ্ধির জন্য সহায়ক।