Parlatoria oleae
বালাই
মূলতঃ, বাহক গাছের পত্রপল্লব জলপাইয়ের আঁশ পোকা দ্বারা সংক্রামিত হতে পারে। এটি গাছের গুঁড়ি, ডাল এবং তরুগুল্মের ছালের উপর আটকে থাকা অবস্থায় বেশী দেখতে পাওয়া যায়। তবে এর উপস্থিতি পাতায় ছোট সাদা বিন্দু দ্বারা চিহ্নিত করা যেতে পারে। বিকৃত অলিভ ফলে পোকা খাওয়ার অংশের চারপাশে ধূসর কেন্দ্রবিশিষ্ট কালো দাগের বিকাশ ঘটে। অন্যান্য ফলের (উদাহরণস্বরূপ আপেল এবং পীচ) ক্ষেত্রে গাঢ় লাল দাগ প্রদর্শিত হতে পারে। অধিক সংক্রমণের ফলে পাতা নেতিয়ে পড়ে, হলুদাভ এবং এমনকি পাতা ঝরে যেতে পারে। এ পরিস্থিতিতে ফলের বিবর্ণতা, অকালে ফল ঝরে যাওয়া, দুর্বল হওয়া এবং তরুগুল্ম এবং শাখা মরে যাওয়া সাধারণ ঘটনা।
বসন্তকালে পরজীবী বোলতা যেমন এফিটিস, কোকোফাগোয়ডেস এবং এনকার্সিয়া উত্তমরূপে ব্যবহার করা হলে, পোকার সংখ্যা অর্ধেকে নামিয়ে আনা যায়। গ্রীষ্মের প্রভাব সে রকম ভাবে লক্ষ্য করা যায়নি। চেলোটোজিনস অরনাটাস এবং চিলোরাসের বেশ কয়েকটি প্রজাতির পরজীবী পোকা, এর নিম্ফ এবং পূর্ণ বয়স্ক আঁশ পোকা দমনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। শীতকালে গাছের কাষ্ঠল অংশে সুপ্ত তেল স্প্রে করা যেতে পারে। বসন্ত ঋতুতে কীড়াপোকা বিকাশের সময় অর্গানোফসফেট সংগঠিত পোকার নিয়ন্ত্রক বা কীটনাশক ব্যবহার করুন। প্রয়োগের উত্তম সময় নির্ধারণের জন্য গাছ পর্যবেক্ষণ করা একান্ত প্রয়োজনীয়।
পার্লাটোরিয়া ওলিয়ের বয়স্ক এবং নিম্ফের খাওয়া ক্রিয়াকলাপের কারণে অলিভ গাছে আক্রমণের লক্ষণ দেখা দেয়। এগুলো পাতা এবং ফলের পাশাপাশি গাছের গুঁড়ি, শাখা এবং তরুগুল্মে সজ্জিত অবস্থায় পাওয়া যায়। এদের বৃদ্ধি এত দ্রুত যে এগুলো আসলে একই কোষকলায় জীবন্ত পোকার কয়েকটি স্তর তৈরি করতে পারে। মৃত আঁশ পোকা জীবন্তগুলোর উপরে থাকতে পারে এবং কীটনাশক থেকে জীবিতগুলোকে রক্ষা করতে পারে। তাপমাত্রা এবং বাহক গাছের উপর নির্ভর করে প্রতি বছর এদের দুটি বা তিনটি প্রজন্ম জন্মাতে পারে। ১০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রার নিচে সংখ্যাবৃদ্ধি বিপদসীমার নিচে থাকে, তবে শুকনো অবস্থার প্রতি বেশ সংবেদনশীল। ফলের উপর দাগ বিষাক্ত পদার্থ ইনজেকশনের কারণে ঘটে থাকে এবং আঁশ পোকা মারা গেলেও তা স্থায়ী হয়ে যায়। প্রাথমিকভাবে খাওয়ার জন্য যে জাতের জলপাই চাষ করা হয়, তা এ পোকার আক্রমণে গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।