Argyrotaenia ljungiana
বালাই
বসন্তের শুরুতে শুঁয়াপোকা ফুলের বাড়ন্ত কুঁড়ি এবং কোমল পাতার কলা খায়, ফলে পত্রফলকগুলো কংকালসার দেখায়। ফুল ফোটার শুরুতে প্রাপ্ত বয়স্ক কীড়া দলবেঁধে আঙ্গুরের ভিতরে প্রবেশ করে এবং পাতাগুলো বেরির ভিতর পাখির বাসার ন্যায় দেখায়। কীড়া ফলের উপর আঁচড় দিয়ে ক্ষত তৈরি করে ভিতরে প্রবেশ করে । পাতা ও ফল আক্রান্ত হওয়ার সাথে সাথে আক্রান্ত স্থানে সুযোগ সন্ধানী জীবাণু আক্রমন করে পচিয়ে ফেলে । আঙ্গুর গাছের পাশাপাশি এ পোকা সহজেই পেয়ার ও আপেল গাছেও আক্রমণ করতে পারে। এদের বিকল্প আবাসী গাছের মধ্যে রয়েছে ম্যালো, কারলি ডক, সরিষা ও লিউপাইন। আঙ্গুরের বাগানের পাশে কভার ফসল ওট এবং বার্লিও এ পোকার জন্য আকর্ষণীয়।
পরজীবি ভোমরা পোকা, যেমন ট্রাইকোগ্রামা, এক্সোকস নিগ্রিপল্পাস ও সাববস্কুরস এর কিছু প্রজাতি, পাশাপাশি বিভিন্ন প্রজাতির মাকড়সা কীড়া খায় । ব্যাসিলাস থুরিনিজিয়েনসিস এবং স্পিনোস্যাড-এর মিশ্রণ জৈবিকভাবে গ্রহণযোগ্য ব্যবস্থাপনা সরঞ্জাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন । টরট্রিক্স মথ দমনে মিথোক্সিফেঞ্জয়েড, ক্লোরেন্ট্রানিলিপ্রোলি, ক্রাইওলাইট এবং স্পাইন্টেরাম এর সক্রিয় উপাদানের কীটনাশকের ব্যবহার কার্যকরী ।
পাতা ও ফলে সর্বভূক প্রজাতির আরগাইরোটেইনিয়া লিজাংগিয়ানার খাদ্য গ্রহণের কার্যক্রম দেখে এ রোগের আক্রমণ বোঝা যায়। প্রাপ্তবয়স্ক পোকার একটি ১৫ মি.মি. পাখা আছে এবং সামনের পা গাঢ় পার্শ্বীয় ব্যান্ডসহ হালকা বাদামী রঙের হয় এবং পিছনের পা খড় রঙের হয়ে থাকে। শীতকালে কীড়া জমিতে থাকা পাতা , উদ্ভিদ অবশিষ্টাংশে কোকুন তৈরি করে টিকে থাকে । অন্যথায়, তীব্র শীতে বিকল্প আবাসী ফসলে টিকে থাকে। বসন্তকালে স্ত্রী পোকা একত্রে ৫০ টি করে ডিম পাড়ে । শুঁয়াপোকা ফ্যাকাশে সবুজ হয় এবং এদের সামান্য স্বচ্ছ হলুদ বাদামী মাথা থাকে । এরা প্রথমে বাড়ন্ত পাতার কোষকলা খেয়ে পাতা জালিকার মতো করে ফেলে । বয়স্ক কীড়া পাতা গুটিয়ে নিয়ে সেখানে আশ্রয় নেয় এবং কুঁড়ি ও ফল খেতে থাকে । এ পোকা তিন বারেরও বেশি প্রজন্ম দিতে পারে এবং সারা বছর পোকার সব ধরনের পর্যায় উপস্থিত থাকে ।