অন্যান্য

মেডিটারেনিয়ান মাছি পোকা

Ceratitis capitata

বালাই

5 mins to read

সংক্ষেপে

  • ফলের উপর স্ত্রী পোকার ডিম পাড়া অংশে ছিদ্রের চিহ্ন দেখা যায়।
  • আক্রান্ত ফল অকালে পেকে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় অকালে ঝরে পড়ে।
  • সুযোগ সন্ধানী ছত্রাক ফলের ছিদ্র বা পচা অংশে আক্রমণ করে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

14 বিবিধ ফসল
বাদাম
আপেল
খুবানি
কলা
আরো বেশি

অন্যান্য

উপসর্গ

মাছি পোকার আক্রমণের কারণে ফলের উপর স্ত্রী পোকার ডিম পাড়া অংশে ছিদ্রের চিহ্ন দেখা যায়। আক্রান্ত ফল অকালে পেকে যায় এবং ক্ষতিগ্রস্ত অবস্থায় সেখান থেকে চিনির ন্যায় রস নিঃসৃত হয়ে অকালে ঝরে পড়ে। সুযোগ সন্ধানী ছত্রাক ফলের ছিদ্র বা পচা অংশে আক্রমণ করে। মাছির কালো দাগ যুক্ত রূপালী বক্ষ অংশ থাকে। গাঢ় দাগসহ বাদামী রঙের উদর দেখা যায় এবং হালকা বাদামী ও ধূসর রঙের ডোরাকাটা দাগযুক্ত স্পষ্ট ডানা দেখা যায়।

Recommendations

জৈব নিয়ন্ত্রণ

জৈব দমন ব্যবস্থায় কিছু পরজীবী এবং শিকারী পোকা ব্যবহার করা হয়। ভূমধ্যসাগরীয় মাছি পোকা সিরাটিটিস ক্যাপিটাটা কিছু পরজীবী ছত্রাক ( বিউভেরিয়া বেসিয়ানা) ও কিছু কৃমি পোকার প্রতি সংবেদনশীল। আক্রান্ত ফসলের (বা ফল) উপর এর কার্যকারিতা নির্ভর করে। সম্ভাব্য আক্রান্ত এলাকার ফল তাপের সাহায্যে শোধন করা যায়। এর মধ্যে অনেক ধরনের তাপ ব্যবস্থাপনা রয়েছে যেমন-উষ্ণ জলীয় বাষ্প (উদাহরণস্বরূপ- ৪৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা ৮ ঘন্টার জন্য), উষ্ণ জল এবং উচ্চ প্রবাহে গরম বায়ু প্রবাহিত করে এ পোকা দমন করুন। এছাড়া ঠান্ডা প্রয়োগ করেও এ পোকা প্রতিরোধ করা যায়। ফল সংরক্ষণ বা পরিবহণ উভয়ের ক্ষেত্রে এ ব্যবস্থা নিন। যাইহোক, এ ধরনের সব ব্যবস্থাপনার কারণে ফলের সতেজতা/ আয়ুষ্কাল হ্রাস পায়। ফসল রক্ষা করতে নিয়মিত স্পিনোসাদ ব্যবহার করুন।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। এ পোকা দমনে একটি গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হলো ফল বালাইনাশকে ডুবিয়ে পোকার আক্রমণ প্রতিরোধ করা। প্রতিরোধী ব্যবস্থা হিসেবে পুরো ফসলের জমিতে বালাইনাশক ছিটিয়ে দেওয়া হয়, তবে তা ব্যয়বহুল। এর মধ্যে অন্যতম গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হলো আধার বা পোকার খাবার, বিশেষ করে আমিষ জাতীয় খাবারের সাথে উপযুক্ত একটি বালাইনাশক (মেলাথিয়ন) মিশিয়ে ছিটিয়ে দিলে এটি স্ত্রী ও পুরুষ উভয় পোকাকে আকৃষ্ট করে।

এটা কি কারণে হয়েছে

ভূমধ্যসাগরীয় মাছি পোকা সিরাটিটিস ক্যাপিটাটার কীড়ার খাওয়ার ফলে ক্ষতি সাধিত হয়। এর এমন নাম সত্ত্বেও, এ পোকা সাব সাহারান আফ্রিকাতে প্রচুর দেখা যায়। ভূমধ্যসাগরীয় এলাকা ছাড়াও এ পোকা মধ্য প্রাচ্য, দক্ষিণ ও মধ্য আমেরিকা এবং অস্ট্রেলিয়ায় দেখা যায়। স্ত্রী পোকা পাকা ফলের নরম ত্বকের নিচের অংশে ছিদ্র করে সেখানে ডিম পাড়ে । সেখানে ডিম ফোটে এবং পোকার কীড়া ফলের ভিতরের রসালো অংশ খেতে থাকে এবং এই ক্ষতির কারণে ফল খাওয়ার অযোগ্য হয়ে পড়ে। এটি সব ধরনের খাবার খায়, মানে এরা অনেক ফসলকে আবাসী ফসল হিসেবে ব্যবহার করতে পারে। এরা এদের পছন্দের আবাস না পেলে নতুন কোন আবাসী ফসল পেলে তাতে সহজেই আক্রমণ করে। এ পোকা আক্রান্ত ফলে ছত্রাকের আক্রমণে সহায়তা করে এমন প্রমাণ রয়েছে। এ পোকা যে কোন পরিবেশে এবং তুলনামূলকভাবে অধিক মাত্রার তাপমাত্রায় ফসলে মারাত্মকভাবে আক্রমণ করতে পারে। এ পোকার জন্য উপযুক্ত তাপমাত্রা হলো ১০ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • বাগানে এ পোকার আক্রমণ দেখা দিলে সঙ্গনিরোধ আইন জোরদার করুন।
  • পোকার আক্রমণ সনাক্ত করতে পর্যবেক্ষণ ফাঁদ বা ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করুন।
  • পোকা সনাক্ত করার সাথে সাথে উপযুক্ত কর্তৃপক্ষকে জানান।
  • কোন সম্ভাব্য আক্রান্ত ফল এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পরিবহন থেকে বিরত থাকুন।
  • ফল রপ্তানি করতে চাইলে ফল পলিথিন বা কাগজ দিয়ে মুড়িয়ে দিন।
  • আক্রান্ত ফল একটি ডাবল ব্যাগের সাহায্যে ময়লার বিনে সংগ্রহ করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন