ক্যাপসিকাম ও মরিচ

কাটুই পোকা

Agrotis ipsilon

বালাই

5 mins to read

সংক্ষেপে

  • ছোট শুঁয়োপোকা কচি পাতায় অনিয়মিত ছোট ছোট গর্ত করে এবং কাণ্ডের কাছাকাছি মাটির নিচে থাকে।
  • বয়স্ক কীড়া ফসলের কাণ্ডের গোড়ায় খাওয়ার জন্য রাতে মাটি থেকে বাইরে আসে।
  • মাটির নিকটে কাণ্ড মারাত্মকভাবে আ্ক্রান্ত হলে (কর্তিত),ভুট্টা গাছের বৃদ্ধি ব্যাহত হয় বা মৃত্যু ঘটায়।
  • কাণ্ডের মধ্যে সুড়ঙ্গ তৈরি হয় ফলে বয়স্ক গাছ ঝিমিয়ে মাটিতে ঢলে পড়ে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

33 বিবিধ ফসল
আপেল
কলা
বার্লি
শিম
আরো বেশি

ক্যাপসিকাম ও মরিচ

উপসর্গ

কাটুই পোকা ব্যাপক পরিসরে শস্যের জীবনচক্রের সব ধাপেই আক্রমণ করে থাকে তবে কচি চারাই বেশি পছন্দ করে । যদি চারা গজানোর সময় অধিক পরিমাণ শুঁয়োপোকা থাকে, এবং চারিদিকের জমিতে আগাছা থাকে, তবে ক্ষতির পরিমাণ ব্যাপক হয়। অপ্রাপ্ত বয়স্ক শুঁয়োপোকা কচি পাতায় অনিয়মিতভাবে ছোট ছোট ছিদ্র করে এবং মাটির কাছাকাছি পত্রপল্লবে থাকে। এদের অনুরূপ বয়স্ক পোকা বাঁধাকপি গাছের গোড়া খাওয়ার জন্য রাতে মাটি থেকে বাইরে আসে। কচি বাঁধাকপি গাছ মাটির নীচে টেনে নিয়ে যেতে পারে। মাটির নিকটের কাণ্ড বেশী খায় যা ফসলের বর্ধিষ্ণু কলার ক্ষতি এবং বৃদ্ধি ব্যাহত করে বা মৃত্যু ঘটায়। কাটুই পোকা কাণ্ডের মধ্যেও সুড়ঙ্গ তৈরি করে, ফলে বয়স্ক গাছ ঝিমিয়ে বা ঢলে পড়ে।

Recommendations

জৈব নিয়ন্ত্রণ

কাটুই পোকার পরজীবী বোলতা, মাছি এবং ঘাসফড়িংসহ অনেক শত্রু আছে। ব্যাসিলাস থিউরিঞ্জেন্সিস, নিউক্লিয়ার পলি হেড্রসিস ভাইরাস এবং বিউভারিয়া ব্যাসিয়ানা সংঘটিত জৈব-কীটনাশক কার্যকরভাবে কাটুই পোকার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে। অপ্রয়োজনীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা বাদ দিয়ে প্রাকৃতিক শিকারী পোকার সংখ্যা বাড়ানো উচিত।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। কাটুই পোকার সংখ্যা কমাতে ক্লোরোপাইরিফস, সাইপারমেথ্রিন, বিটা-সাইপারমেথ্রিন, ডেলটামেথ্রিন এবং ল্যামডা সাইহ্যালোথ্রিন সংঘটিত কীটনাশক ব্যবহার করা যেতে পারে। রোপনের পূর্বে কীটনাশক প্রয়োগ করা যেতে পারে, তবে এটা শুধু তখনই প্রযোজ্য যখন পোকার সংখ্যা অত্যধিক থাকে।

এটা কি কারণে হয়েছে

কালো কাটুই পোকা শরীরে ধূসর বাদামী বর্ণের ছাপযুক্ত একটি শক্তিশালী মথ। তাদের বাইরের দিকে কালো চিহ্নসহ হাল্কা বা গাঢ় বাদামী বর্ণের সামনের পাখা ও সাদা পিছনের পাখা রয়েছে। তারা নিশাচর এবং দিনের বেলায় মাটির ভিতরে লুকিয়ে থাকে। স্ত্রী পোকা দেখতে পুরুষের মতোই কিন্তু কিছুটা গাঢ় বর্ণের হয়। মাটির ফাটলে বা ভেজা মাটিতে একটি বা একসাথে অনেক মুক্তোর মত সাদা বর্ণের (পরে হাল্কা বাদামী) ডিম পাড়ে। ডিম ফুটে লার্ভা বের হওয়া অনেকটাই তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে যা ৩ থেকে ২৪ দিন সময় নেয় ( যথাক্রমে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস এবং ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায়)। সদ্যোজাত লার্ভা দেখতে হাল্কা ধূসর, মসৃণ ও তৈলযুক্ত এবং ৫ থেকে ১০ মি.মি. লম্বা হয়। বয়স্ক লার্ভা দুটি ফোঁটাবিশিষ্ট নিম্নগামী হলুদ দাগসহ গাঢ় বাদামী বর্ণের, যা ৪০ মি.মি. পর্যন্ত লম্বা হয়। তারা রাতের বেলায় খায় এবং দিনের বেলায় এদের মাটির নীচে ছোট অগভীর সুড়ঙ্গের মধ্যে ইংরেজি ‘সি’ (C) আকৃতিতে কোঁকড়ানো অবস্থায় পাওয়া যায়।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • পোকার সর্বোচ্চ সংখ্যা এড়াতে আগাম চাষ করুন।
  • সয়াবিন চাষের পর বাঁধাকপি চাষ এড়িয়ে চলুন।
  • রোপণের ৩ থেকে ৬ সপ্তাহ পূর্বে জমি চাষ করে লার্ভা মাটিতে পুঁতে ফেলুন বা শিকারির জন্য উন্মুক্ত করুন।
  • কালো কাটুই পোকাকে আকর্ষণের জন্য জমির চারপাশে সূর্যমুখী চাষ করুন।
  • রোপণের পূর্বে এবং অঙ্কুরোদগমের পর জমির সর্বত্র আগাছা পরিষ্কার করুন।
  • মথ পর্যবেক্ষণ ও ধরার জন্য আলো এবং ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করুন।
  • কাটুই পোকাকে আহত ও শিকারীর কাছে উন্মুক্ত করার জন্য ঘন ঘন চাষ করুন।
  • ফসল সংগ্রহের পর অবশিষ্টাংশ মাটির গভীরে পুঁতে ফেলুন।
  • রোপণের পূর্বে জমি কয়েক সপ্তাহ পতিত ফেলে রাখুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন