Spodoptera frugiperda
বালাই
লেদা পোকার কীড়া গাছের সমস্ত অংশ খেয়ে ক্ষতিসাধন করে। প্রাথমিকভাবে অল্পবয়স্ক কীড়াগুলো পাতার একদিকের পৃষ্ঠের কোষকলা খেয়ে ফেলে এবং অপর পৃষ্ঠের ত্বকে কোন ক্ষতি হয় না। পোকা চারাগাছের মুকুল ও বর্ধিষ্ণু অঞ্চল ধ্বংস না হওয়া পর্যন্ত খেতে থাকে। বড় পোকা পাতা খেলে পাতায় ছিদ্র সৃষ্টি হয়, পাতার কিনারায় আঁচড়ের মত দাগ পড়ে; কীড়া পোকার বিষ্ঠা সারি সারি দেখা যায়। পোকা গাছের কাণ্ড, প্রজনন অঙ্গ ও কচি ফলেও আক্রমণ করে। গুরুতর আক্রমণ হলে, লেদা পোকার কীড়া ব্যাপকহারে পত্রমোচনের কারন হতে পারে।
কিছু কিছু পরজীবী শত্রু পোকা লেদা পোকার শুককীটের সংখ্যা সহনীয় মাত্রায় নামিয়ে রাখে। কোটেসিয়া মার্জিনিভেন্ট্রিস এবং চেলোনাস টেক্সানাস ও সি. রেমুস বোলতা জাতীয় পরজীবীর অন্তর্ভুক্ত। সর্বাধিক ব্যবহৃত পরজীবি মাছি হল আর্কাইটাস মারমোরেটাস। শিকারি পোকার অন্তর্ভুক্ত পরজীবি হল স্থল গুবরে পোকা, শুঙ্গযুক্ত সৈনিক পোকা, ফুলের পোকা, পাখী অথবা ইঁদুর। ব্যাসিলাস থিউরেঞ্জিয়েনসিস অথবা ব্যাকুলোভাইরাস স্পোডোপটেরা সমন্বিত জৈব কীটনাশকের পাশাপাশি স্পিনোস্যাড বা আজাডিরেক্টিন স্প্রে করুন। ভুট্টা ক্ষেতে লাল বালি, খনিজ লবন, কাঠ কয়লার ছাই বা ফ্ল্যাই অ্যাশ ভুট্টার খোলের মধ্যে প্রয়োগ করলে শূককীটের খাওয়া বন্ধ করা যায় এবং মারাও যেতে পারে (১০০%, ৯৮%, ৯০% এবং ৮০% ফলাফল পাওয়া যায়)।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। প্রস্তাবিত কীটনাশক যেমন এসফেনভেলারেট, ক্লোরপাইরিফস, ম্যাল্যাথিয়ন, এবং ল্যামডা-সাইহ্যালোথ্রিন ব্যবহার করুন। এই সমস্ত কীটনাশকের উপর ভিত্তি করে প্রস্তুত বিষাক্ত ফাঁদ বেড়ে ওঠা লার্ভার উপর প্রয়োগ করার জন্যে চাষীদের কাছে সুপারিশ রয়েছে।
পাতার নিচে ১০০-৩০০টি ডিম আঁটসাঁট বেঁধে গাদায় থাকে, সাধারণত এরা তুলার মত আবরণে ঢাকা থাকে। শুককীট হালকা তামাটে অথবা কালচে সবুজ বর্ণের, এছাড়া পার্শ্ব কিনারা বরাবর ডোরাকাটা এবং পেছনের দিক হলুদাভ। পোকার পেছনের পাখা স্বচ্ছ সাদা এবং সামনের বাদামী পাখায় বিভিন্ন বর্ণের হালকা ও গাঢ় দাগ আছে। সামনের পাখার অগ্রপ্রান্তে বৈশিষ্ট্যপূর্ণ সাদা দাগ আছে। খাদ্য এবং তাপমাত্রার উপর পোকার জীবন চক্রের পর্যায়ের স্থায়িত্ব নির্ধারণ করে। ঠাণ্ডা, আর্দ্র বসন্তকালের পরেই উষ্ণ, আর্দ্র আবহাওয়া পোকার জীবন চক্রের জন্য উপযোগী।