Eublemma olivacea
বালাই
কেবলমাত্র কীড়াপোকাই (লার্ভাই) পাতার ক্ষতিসাধন করে। প্রাথমিকভাবে যে লক্ষণ দেখা যায় সেটা হলো কীড়াপোকা (লার্ভা) যেখানে অবস্থান করে সেখানে পাতার দৈর্ঘ্য বরাবর পাতা গুটিয়ে যায়। এই গুটিয়ে যাওয়া অংশের মধ্যে কীড়াপোকা (লার্ভা ) অবস্থান করে পাতার আভ্যন্তরীন সবুজ কোষকলা চিবিয়ে খেয়ে বেঁচে থাকে। ক্ষতিটা সবথেকে বেশী হয় গাছের উপরের অংশে। এই গুটিয়ে যাওয়া পাতা বাদামী হয়ে যায়, দুর্বল হয়ে পড়ে ও শুকিয়ে যায়। ক্ষতির চরমাবস্থায় , এই বাদামী বর্ণ সমগ্র গাছেই ছড়িয়ে যায় এবং পরে পত্রমোচন ঘটে। যদি কীটের বংশবৃদ্ধি দমন না করা যায় তবে ফসল উৎপাদনের উপরও দারুনভাবে তার প্রভাব পড়ে। যাইহোক, সামান্য ক্ষেত্রেই এই কীট গাছের বৃদ্ধি ও ফসল উৎপাদনের পক্ষে চরমতম বিপদের কারণ হয়ে ওঠে।
জৈবিক নিয়ন্ত্রনের মাধ্যমে কীটের উপদ্রব কমাতে পরজীবি বোলতার প্রজাতি যেমন Cotesia spp. ব্যবহার করা হয় । এছাড়াও শিকারী পতঙ্গ যেমন ম্যান্টিস (mantis ) বা উপকারী গুবরে পোকার প্রজাতিও এই কীটকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করে। নেমাটোড যেমন স্টেইনারনেমা spp. (Steinernema spp.)-ও এই কীটকে নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে।
প্রথমে সর্বদা একটি সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার কথা বিবেচনা করুন। যদি কীটনাশক ব্যবহারের প্রয়োজন হয় তবে কার্বারিল (carbaryl ) বা ম্যালাথিয়ন (malathion ) সমৃদ্ধ কীটনাশক ব্যবহার করুন যাতে বেগুনের পাতা মোড়ানো পোকার বংশবৃদ্ধি কমানো যায়।
পূর্ণাঙ্গ কীট মাঝারি আকারের, হালকা বাদামী বর্ণ থেকে জলপাই সবুজ রঙের হয় এবং এদের সামনের পাখার বাইরের দিকে গাঢ় কালো বর্ণের তিন-দিক বিশিষ্ট বড় দাগ দেখা যায়। পিছনের পাখা স্বচ্ছ সাদা বর্ণের হয়। স্ত্রী মথ সাধারণভাবে সবথেকে কচি যে পাতা থাকে তার উপরের দিকে একসঙ্গে ৮ থেকে ২২টি ডিম পাড়ে। প্রায় ৩ থেকে ৫ দিন পরে ডিম ফুটে কীড়াপোকা (লার্ভা) বের হয়। এরা বেগুনী-বাদামী বর্ণের ও মোটাসোটা হয় এবং এদের ফাঁপা পশ্চাদ্দেশ হলুদ বা ঘিয়ে বর্ণের হয় এবং পিছনের দিকে দীর্ঘ শুঁয়ো থাকে। কীড়াপোকার (লার্ভা)-র বৃদ্ধি ৪ সপ্তাহ ধরে চলে। এরপর তারা গাছের গুটিয়ে যাওয়া পাতার মধ্যে অবস্থান করে পিউপা অবস্থায় রূপান্তরিত হয়। আরো ৭ থেকে ১০ দিন পরে পূর্ণাঙ্গ মথ বেরিয়ে আসে। প্রতি বছর এদের ৩ থেকে ৪টি প্রজন্মের আগমন ঘটতে পারে, তবে তা আবহাওয়ার পরিস্থিতির উপর নির্ভর করে।