অন্যান্য

বেগুনী মাজরা পোকা

Sesamia inferens

বালাই

সংক্ষেপে

  • কীড়াপোকা গাছের কাণ্ড ও পুষ্পমঞ্জরীর গোড়ায় ছিদ্র তৈরি করে।
  • গাছের এ অংশে প্রবেশের ছিদ্র দেখা যায়।
  • জল ও পুষ্টির অভাবে আক্রান্ত কোষকলা শুকিয়ে যায়।
  • লম্বালম্বিভাবে কাটলে কাণ্ডের ভিতর মৃত অন্তঃসারশূন্য অংশ সহ শুককীট ও মিহি গুঁড়ার মত পদার্থ দেখা যায়।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

7 বিবিধ ফসল
বার্লি
ভুট্টা
বাজরা
ধান
আরো বেশি

অন্যান্য

উপসর্গ

কীড়াপোকা প্রধানতঃ খাবার গ্রহনের সম্ভাব্য ক্রিয়াবলীর মাধ্যমে ফসলের ক্ষতি সাধন করে। পোকা গাছের কাণ্ড ও শীষের গোড়ায় ছিদ্র করে এবং অভ্যন্তরীণ কোষকলাসমূহ খাদ্য হিসাবে গ্রহন করে, ফলে জল ও পুষ্টি উপাদান সরবরাহে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হয়। কাণ্ড ও শীষে কীড়াপোকার প্রবেশের ছিদ্রমুখ দেখা যায়। খাদ্যপ্রাণ সরবরাহ ব্যাহত হওয়ায় আক্রান্ত গাছ ঝিমিয়ে যায়। লম্বালম্বিভাবে কাটলে কাণ্ডের ভিতর মৃত অন্তঃসারশূন্য অংশ সহ শুককীট ও মিহি গুঁড়ার মত পদার্থ দেখা যায়।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

টেলিনোমায়াস এবং ট্রাইকোগ্রামা প্রজাতির বেশ কিছু পরজীবী পোকা, সিসামিয়া ইনফারেন্সের ডিমের ভিতর এরা ডিম পাড়ে এবং বেগুনী মাজরা পোকার সংখ্যা নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করে। এছাড়া Apanteles flavipes, Bracon chinensis and Sturmiopsis inferens ইত্যাদি পোকার বোলতা বেগুনী মাজরা পোকার কীড়াপোকাকে পরজীবায়ন করে। সর্বোপরি, Xanthopinpla এবং Tetrastichus-এর প্রজাতি দ্বারা এরা আক্রান্ত হয়। এছাড়া Beauveria bassiana ছত্রাকের নির্যাস থেকে তৈরি জৈবকীটনাশক এবং ব্যাসিলাস থিউরিনজিয়েনসিস (Bacillus thuringiensis) ব্যাকটেরিয়া কাণ্ড ছিদ্রকারী বেগুনী মাজরা পোকার বিরুদ্ধে কার্যকারী ভুমিকা পালন করে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। দানাদার বা তরল ক্লরান্ত্রানিলিপ্রল কীটনাশক পত্রপল্লপবে ছিটিয়ে বা স্প্রে করে বেগুনী মাজরা পোকা দমন বেশ কার্যকরী।

এটা কি কারণে হয়েছে

তীব্র শীতে শুককীট মুককীট হিসেবে গাছের কান্ডে অথবা মাটিতে গাছের ধ্বংসাবশেষের মধ্যে শীতের মৌসুম অতিবাহিত করে। যখন আবহাওয়ার পরিবর্তন শুরু হয় অর্থাৎ বসন্তকালে এরা প্রাপ্তবয়স্ক হয়। পোকার ঘাড় ও মাথা লোমযুক্ত এবং এরা ছোট, বলিষ্ঠ ও হালকা বাদামী রঙের হয়। সামনের পাখাগুলো খড় বর্ণের এবং সোনালী রঙের ডোরাকাটা হয় । পেছনের পাখাগুলো হলুদ বর্ণের শিরাসহ স্বচ্ছ সাদা বর্ণের হয়। স্ত্রী পোকা পাতার শীষের পেছনে গোলাকার, বর্ণহীন এবং হলুদাভ-সবুজ রঙের অনেকগুলো ডিম সারি করে পাড়ে যা ডিমগুলোকে শিকারী পোকার আক্রমন থেকে রক্ষা করে। শুঁয়োপোকা প্রায় ২০ থেকে ২৫ মিমি পর্যন্ত লম্বা, লালচে-বাদামী বর্ণের মাথাসহ গোলাপি বর্ণের ডোরাকাটাবিহীন হয়। কীড়াপোকা কান্ডের মধ্যে ছিদ্র করে ও অভ্যন্তরীণ কোষকলা খেয়ে ফেলে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • সম্ভবমতো রোগ সহিষ্ণু জাতের চাষ করুন।
  • পোকার সংখ্যা বৃদ্ধির অনুকূল পরিবেশ এড়াতে অন্যান্য কৃষকদের একই সময়ে ফসল লাগাতে বলুন।
  • একই সময়ে পাকে এমন জাত চাষ করুন।
  • আগাম চাষ করলে পোকার ব্যাপক আক্রমন পরিহার করা যায়।
  • চারা ঘন করে রোপণ করলে পোকার মথ পাতা পর্যন্ত পৌছাতে পারে না।
  • নিয়মিত মাঠ নিরীক্ষা করুন এবং গাছের আক্রান্ত অংশ সরিয়ে ফেলুন।
  • সময়মত ও পর্যাপ্ত পরিমানে নাইট্রোজেনের প্রয়োগ নিশ্চিত করুন।
  • মাঠের আগাছা তুলে ফেলুন।
  • জল সরবরাহের সুব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করুন।
  • ফসল উত্তোলনের পর মাঠে ফসলের অবশিষ্টাংশ সরিয়ে ফেলুন এবং ধ্বংস করুন।
  • আশ্রয় প্রদান করে না এমন ফসল যোগে দীর্ঘমেয়াদী ফসল-চক্রের পরিকল্পনা করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন