Mamestra brassicae
বালাই
বাঁধাকপি মথের কীড়াগুলো পাতা খাওয়া শুরু করে এবং বাঁধাকপির উপরের অংশে গর্ত করে সুড়ঙ্গ সৃষ্টি করে। কীড়াগুলো পাতার উপরের আবরণ চিবিয়ে খায় তবে অমসৃণ শক্ত শিরাগুলোকে এড়িয়ে চলে, তখন পাতাগুলোকে প্রায়শই কঙ্কালসার মনে হয়। প্রথম প্রজন্মের (বসন্তের থেকে গ্রীষ্মের প্রাথমিক সময়ে) তুলনায়, দ্বিতীয় প্রজন্ম ( বিলম্ব গ্রীষ্ম থেকে অক্টোবর পর্যন্ত) শক্ত কোষকলা দ্রুত চিবিয়ে খেতে পারে এবং কেবল পাতা খাওয়ার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে না বরং বাঁধাকপির শীর্ষভাগের মধ্যে গর্ত করে সুড়ঙ্গ সৃষ্টি করে। প্রবেশদ্বারে গর্ত এবং সুড়ঙ্গ সনাক্তকরণের মাধ্যমে মথের উপস্থিতি নিশ্চিত করা হয়। এভাবে বাঁধাকপির মথের কীড়া ফসলে ক্ষতি করে থাকে ।
মথের ডিমগুলো ধ্বংস করতে ট্রাইকোডার্মা প্রজাতির পরজীবী বোলতা ব্যবহার করতে পারেন। বিভিন্ন প্রজাতির শিকারি প্রাণীর মধ্যে শিকারি বিটল, হলুদ বোলতা, সবুজ লেইস উইয়িং, মাকড়শা এবং পাখি উল্লেখযোগ্য যেগুলো মথের লার্ভা খেয়ে থাকে। প্রাকৃতিকভাবে সৃষ্ট ব্যাসিলাস থুরিনজিয়েনসিস ব্যাকটেরিয়া এবং কিছু প্রজাতির ভাইরাস সংগঠিত পণ্য পোকার কীড়াগুলোকে মেরে ফেলে এবং এক্ষেত্রে এ পণ্যটি উপরের ও নিচের পাতার পৃষ্ঠে কার্যকরী হয়ে থাকে। এ ধরনের কীটনাশক প্রকৃতিতে সাধারনতঃ বিদ্যমান থাকে না। পরজীবী নেমাটোডসও পোকার কীড়াগুলোর বিরুদ্ধে কার্যকরী এবং শীতল শুষ্ক আবহাওয়ার সময় নেমাটোডসগুলো জলসিক্ত পত্রপল্লবে ব্যবহার করুন ।
সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। পোকার কীড়া দমনে পাইরিথিয়ামের সক্রিয় উপাদানযুক্ত ল্যামডা-সাইহেলোথ্রিন অথবা ডেল্টামেথ্রিন সমৃদ্ধ পণ্য ব্যবহার করুন। বিভিন্ন সময়ে এমনকি ফসল সংগ্রহের এক দিন পূর্বেও পাইরিথিয়াম নির্যাস/রস প্রয়োগ করতে পারেন। ল্যামডা-সাইহেলোথ্রিন অথবা ডেল্টামেথ্রিনের ক্ষেত্রে, সর্বোচ্চ দুইবার প্রয়োগের সুপারিশ করা হয় এবং ফসল সংগ্রহের পূর্বে সাতদিনের বিরতি দেওয়ার পরামর্শ রয়েছে।
উপসর্গগুলো প্রধানতঃ বাঁধাকপি মথ ( মামেস্ত্রা ব্রাসিকায়ি ) পোকার কীড়া দ্বারা সৃষ্ট হয়। মাটির মধ্যে পরিপক্ক লার্ভা পিউপাতে রূপান্তরিত হয়ে থাকে এবং পুরো শীতকাল ব্যাপী মাটিতে অবস্থান করতে পারে। পিছনের ডানাযুগল হালকা ধূসর বর্ণের হয়ে থাকে। অঙ্কুরোদগমের কয়েক সপ্তাহ পরে স্ত্রী পোকা পাতার পৃষ্ঠদেশের উপর সাদা গোলাকৃতি ডিম পেড়ে থাকে। ডিম ফোটার পর পোকার কীড়াগুলো প্রথমে পাতার কোষকলা খাওয়া শুরু করে, পাতায় গর্ত করে সুড়ঙ্গ সৃষ্টি করে এবং অবশেষে বাঁধাকপির অগ্রভাগ আক্রমণ করে। কীড়াগুলো হলুদাভ সবুজ বা বাদামী সবুজ বর্ণের হয়ে থাকে এবং এদের শরীরে কোন সুস্পষ্ট লোম থাকে না। বাঁধাকপির মথের বৎসরে দুটি প্রজন্ম জন্মাতে পারে। বিলম্ব বসন্ত মরশুমে, প্রথম প্রজন্মের মথকে মাটিতে এবং কীড়াগুলোকে আক্রান্ত পাতায় দেখা যায়। অন্যদিকে, বিলম্ব গ্রীষ্ম মরশুমে, দ্বিতীয় প্রজন্ম দৃশ্যমান হয়ে থাকে।