Acigona ignefusalis
বালাই
মাজরা পোকা (Stem Borer)-র কীড়া বাজরার পাতা ও পাতার অগ্রভাগকে আক্রমণ করে। কীড়াপোকা কাণ্ডের গায়ে গর্ত তৈরী করে এবং কাণ্ডকে খণ্ড খণ্ড করে কাটে, যার ফলস্বরূপ শেষপর্যন্ত উদ্ভিদের মৃত্যু ঘটে। পূর্ণাঙ্গ কীড়াপোকা প্রায় ২০ মিলিমিটার লম্বা হয় এবং এদের মাথার রঙ লালচে-বাদামী এবং দেহ হয় সাদা রঙের। দেহে কালো ছোপ দাগও থাকতে পারে। পূর্ণাঙ্গ মথের পাখার বিস্তার হয় প্রায় ৮ থেকে ১৫ মিলিমিটার এবং এই পাখার রঙ হয় সাদা। মাজরা পোকার ডিম পাতার উপরে গুচ্ছাকারে থাকে এবং এই ডিমের রঙ হয় হলুদ।
মাজরা পোকার বংশবৃদ্ধিকে ফেরোমোন ফাঁদ ব্যবহার করে কমানো যেতে পারে। এই ফাঁদ বেড়ার ধার বরাবর (বিশেষ করে যদি ফেরোমোন বাজরার কাণ্ড থেকে বা অন্য ঘাস থেকে সংগ্রহ করা হয়) এবং শস্যগোলার কাছে রাখা উচিৎ। মরশুমের শুরুতেই রোগাক্রান্ত উদ্ভিদে তা প্রয়োগ করুন এবং নিম তেলও এক্ষেত্রে মাজরা পোকার বিরুদ্ধে কার্যকরী হতে পারে। "ধাক্কা-টানা" পদ্ধতি খুবই কার্যকরী হতে পারেঃ বাজরা চাষের সঙ্গেই বনচাঁড়ালের চাষ করা যেতে পারে। বনচাঁড়াল এক্ষেত্রে বিতাড়কের কাজ করে, তাই মথ বাজরার জমি থেকে "ধাক্কা" খেয়ে পালিয়ে যায়। আপনি চাষের জমির সীমানা বরাবর শস্য ফাঁদ যেমন নাপিয়ের (Napier ) বা সুদান ঘাস (Sudan grass) বুনতে পারেন। এই শস্যগুলি মথকে আকর্ষণ করে, তাই মথকে বাজরা ফসলের দিক থেকে "টেনে নেওয়া" হয়।
কীটনাশক ব্যবহার করা প্রায়শই অসুবিধাজনক হয়ে দাঁড়ায় এবং সেইসঙ্গে তা ব্যয়বহুলও বটে। ডাইমেথোয়েট (Dimethoate) ব্যবহার করা যেতে পারে কিন্তু এর দামের কথা চিন্তা করলে তা মোটেও বাস্তবসম্মত নয়।
আর্দ্র অঞ্চলে প্রতি বছর কীড়াপোকার তিনটে প্রজন্ম জন্মগ্রহণ করতে পারে এবং অন্যদিকে শুষ্ক অঞ্চলে দুটো পর্যন্ত জীবনচক্র লক্ষ্য করা যায়। মাজরা পোকা কাণ্ডকে খণ্ড করে কেটে ফেলে, ফলে জল ও খাদ্যপ্রাণ শিকড় থেকে গাছের বাকি অংশে পৌঁছাতে বাধা পায়। কীড়াপোকা শস্যের অবশিষ্টাংশের উপর জীবনধারণ করতে পারে।