Operophtera brumata
বালাই
বসন্তকালে প্রথম বাড়ন্ত পাতায় শীতকালীন মথের কীড়ার আক্রমণ দেখা যায়। এটি সাধারণত গ্রীষ্মের মাঝামাঝি সময়ে দৃশ্যমান হয়, যখন পাতা সম্পূর্ণভাবে বিস্তৃত হয়। ততক্ষণে, শুঁয়োপোকা গাছ ত্যাগ করে কিন্তু বসন্তকালে তৈরি ছোট ছিদ্রটি পাতার স্বাভাবিক বৃদ্ধির সাথে সাথে বড় হতে থাকে। পোকার কীড়া বাড়ন্ত ফল এবং ফুলের কুঁড়ি খায়। যদি একবার একটি কুঁড়িতে ক্ষতি করতে পারে তারপর এরা অন্য্ কুঁড়িতে স্থানান্তরিত হয়ে একই কাজ করে। ফল প্রথম দিকে আক্রান্ত হলে ফলের উপর গভীর ক্ষত দেখা যায় যা কালক্রমে গ্রীষ্মকালে পুরো ফলে ছড়িয়ে পড়ে।
শরৎকালে বিপদ্গ্রস্থ গাছের প্রধান শাখায় না উঠতে পারে সেজন্য গাছের প্রধান কান্ডের চারপাশে আঠা দিয়ে রিং তৈরি করুন প্রয়োজনে বলদানকারী বস্তু ব্যবহার করুন । এর ফলে স্ত্রী পোকা মাটির নিচ থেকে গাছের প্রধান শাখায় যেতে পারবে না। আঠার উপরে পাড়া ডিমগুলো ব্রাশ দিয়ে সরিয়ে ফেলতে হবে। কীড়া দমনে বেসিলাস থুরেনজিয়েনসিস সংঘটিত উপাদান প্রয়োগ করা যায়। নিমের নির্যাসের ব্যবহারেও কার্যকরী ফল পাওয়া যায়। পাতা যখন পুরোপুরি সম্প্রসারিত হয় তখন স্পিনোসাদ ব্যবহার করে কীড়া দমন করা যায়। সম্পূর্ণ ফুল ফোটার পর স্পিনোসাদ ব্যবহার থেকে বিরত থাকুন এবং এরা মৌমাছির জন্য ক্ষতিকর।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। উল্লেখ্য, কুঁড়ির ভিতরে থাকা কীড়া কীটনাশকের প্রভাব মুক্ত থাকে। সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনায় ডাইফ্লুবেঞ্জুরন সংঘটিত উপাদান ব্যবহৃত হয়। টবিওবেনজয়েড পোকার বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রক হিসেবে ব্যবহার খুবই কার্যকরী কারণ এরা পোকার মল্টিং এ বাধা দেয় ফলে পোকা মরে যায়।
শীতকালীন মথ ওপেরোপেথেরা ব্রুমাটা পোকার কীড়া ক্ষতির জন্য দায়ী । মিলনের পর , স্ত্রী পোকা শীতাবস্থায় থাকা ডিম গাছের বাকল, বাকলের ফাটা অংশ বা বাকলের নিচে জমা করে । এই ডিম ১২-১৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটে যায় । নতুন জন্মানো কীড়া গাছের প্রধান কান্ডে স্থানান্তরিত হয়ে নতুন কুঁড়িতে আক্রমণ করে। এরা আবদ্ধ মুকুলে ছিদ্র করতে পারে না কিন্তু যখন উন্মুক্ত হয় পাতার নরম কোষ কলার ক্ষতি করে। আর্দ্র গ্রীষ্মকাল এবং হালকা আর্দ্র শরৎকাল এই পোকার জীবন ধারণের জন্য খুবই উপযোগী । পরিনত কীড়া মাটিতে পড়ে যায় এবং সেখানে কোকুন তৈরি করে । আবাসী গাছের মধ্যে রয়েছে এপ্রিকট, চেরি, আপেল,তাল, কোরন্ট এবং কিছু বনজ গাছ।