Thysanoptera
বালাই
পাতার উপরের পৃষ্ঠে ছোট ছোট রূপালী রঙের দাগ উৎপন্ন হয় যাকে বলা হয় “রূপালীকরণ’’। ফুলের পাঁপড়ির যেখানে রঞ্জক পদার্থ অপসারিত হয়েছে সেখানেও একই ধরনের দাগ উৎপন্ন হতে পারে। পাতার নিচে, থ্রিপস ও এদের লার্ভা একসঙ্গে দলববদ্ধভাবে কালো রঙের বিষ্ঠার কাছাকাছি বসে থাকে। সংক্রমিত উদ্ভিদের পাতা হলুদ হয়ে যায়, নেতিয়ে পড়ে, বিকৃত রূপ ধারন করে বা কুঁকড়ে যায়। ফুলের কুঁড়ি বা ফুলের বৃদ্ধির সময়ে এর থেকে খাওয়ার ফলে ফুলে দাগ ধরে, ফুলের বৃদ্ধি স্তব্ধ হয়ে যায় বা ফুলে বা ফলে বিকৃতিভাব আসতে পারে এবং ফলন হ্রাস পায়।
কিছু জৈবঘটিত নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থাকে কিছু নির্দিষ্ট থ্রিপসের প্রজাতির উপরে প্রয়োগ করার জন্যে আরো উন্নত করা হয়েছে। কীটনাশক স্পিনোস্যাডের প্রয়োগ যে কোন রাসায়নিক বা জৈব রাসায়নিক ফর্মুলার থেকে থ্রিপসের উপরে বেশী কার্যকরী হয়। এটা ১ সপ্তাহ বা তার বেশী স্থায়ী হয় এবং স্বল্প দূরত্ব অতিক্রম করে স্প্রে করা কোষকলায় পৌঁছাতে পারে। তবে এটি কিছু নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক শত্রু পোকা (উদাহরণ হিসাবে শিকারী মাকড়, সারফিড মাছির লার্ভা) ও মৌমাছির পক্ষে বিষাক্ত। সুতরাং, যে গাছে ফুল এসেছে সেই গাছে স্পিনোস্যাড ব্যবহার করবেন না। ফুলে থ্রিপসের সংক্রমণ ঘটলে সেক্ষেত্রে রসুনের নির্যাসের সঙ্গে কিছু কীটনাশকের মিশ্রন ব্যবহার করে ভালো ফল পাওয়া যায়। যে প্রজাতি নির্দিষ্টভাবে পাতাকে আক্রমণ করে কিন্তু ফুলকে নয়, সেক্ষেত্রে নিম তেল বা প্রাকৃতিক পাইরেথ্রিনস সরাসরি পাতার নিচে প্রয়োগ করার পরামর্শ রয়েছে। উচ্চ ধরনের প্রতিফলক আলট্রা ভায়োলেট মালচ্ ব্যবহার করার পরামর্শ রইলো।
সম্ভাব্যক্ষেত্রে সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। বংশবৃদ্ধির উচ্চ হার ও জীবনচক্রের জন্যে, থ্রিপস বিভিন্ন শ্রেণীর কীটনাশকের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। কার্যকরী সংস্পর্শজনিত কীটনাশক হলো ফিপ্রোনিল, ইমিডাক্লোপ্রিড বা অ্যাসিটামিপ্রিড এবং অনেক দ্রব্যে পাইপিরোনিল বুটোক্সাইড যোগ করে কার্যকারিতা বৃদ্ধি করা হয়।
থ্রিপস ১ থেকে ২ মিমি দীর্ঘ ও হলুদ, কালো বা উভয় রঙ বিশিষ্ট হয়। কিছু প্রজাতির দুটো ডানা থাকে, অন্যদের পাখা বলে কোন কিছুই আদৌ থাকে না। এরা উদ্ভিদের বর্জ্যের মধ্যে বা মাটিতে বা বিকল্প কোন আবাসে শীতঘুম কাটিয়ে দেয়। এরা দীর্ঘমেয়াদে একধরনের ভাইরাস ঘটিত রোগের জীবাণু বহন করে। বহু জাতের উদ্ভিদ থ্রিপসের দ্বারা আক্রান্ত হয়। শুষ্ক ও উষ্ণ আবহাওয়া এ কীটের বংশবৃদ্ধির পক্ষে অনুকূল হয়। আর্দ্রতা তা কমিয়ে দেয়। বায়ু, জামাকাপড়, সরঞ্জাম এবং জমিতে কাজ করার পরে সঠিকভাবে পরিষ্কার না করা পাত্রের মাধ্যমে পূর্ণবয়সী থ্রিপস বিভিন্ন জায়গায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।