চিনাবাদাম

জাবপোকা

Aphis

বালাই

সংক্ষেপে

  • এ পোকার আক্রমণে পাতা কুঁকড়ে যায়।
  • মঞ্জরীতে ও পাতার নীচে ক্ষুদ্র পোকার দেখা পাওয়া যায়।
  • উদ্ভিদের বৃদ্ধি থমকে যেতে পারে।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

59 বিবিধ ফসল
বাদাম
আপেল
খুবানি
কলা
আরো বেশি

চিনাবাদাম

উপসর্গ

স্বল্প পরিমান আক্রমণে এ পোকা তেমন ক্ষতি করতে পারে না। আক্রমণ বেশি হলে কচি পাতা এবং ডগা হলুদাভ বর্ণ ধারণ করে, কুঁকড়িয়ে নেতিয়ে যায় এবং গাছ খর্বাকৃতি হয়। সার্বিকভাবে, গাছের তেজ অনেকটা কমে যেতে দেখা যায়। জাব পোকার দেহ থেকে নিঃসৃত মিষ্টি তরলের গায়ে ছত্রাকের জন্ম হয় এবং যার কারণে বিভিন্ন প্রকার রোগের সৃ্ষ্টি করে। পাতার উপরে মোল্ডের বৃদ্ধি দেখে তা সহজেই বোঝা যায়। মিষ্টিরস খাওয়ার জন্য পিঁপড়ে এসে ভিড় করে। স্বল্প সংখ্যক জাব পোকাও গাছ থেকে গাছে দ্রুত ভাইরাস রোগ ছড়াতে পারে।

সুপারিশমালা

জৈব নিয়ন্ত্রণ

স্বল্প আক্রমণে কীটনাশক সাবানের দ্রবন বা ভেষজ উদ্ভিদের নির্যাস দ্বারা তৈরী দ্রবন ব্যবহার করুন যেমন নিম তেল (৩ মিলি/প্রতি লিটার)। আর্দ্র আবহাওয়ায় জাবপোকা ছত্রাকের আক্রমণের প্রতি অসহনশীল। আক্রান্ত গাছে শুধুমাত্র জল স্প্রে করলেও জাবপোকা দমন করা যায়।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। রাসায়নিক কীটনাশকের ব্যবহার জাবপোকার প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির কারণ হতে পারে, তাই এ বিষয়ে সচেতন থাকবেন । বীজ বপনের ৩০ , ৪৫ , ৬০ দিন পরে (১:২০) আনুপাতিক হারে ফ্লোনিকামিড এবং জলের সংমিশ্রণ কাণ্ডে প্রয়োগ করার পরিকল্পনা করা যেতে পারে। ফিপ্রোনিল ২ মিলিমিটার বা থায়ামেথোক্সাম ( 0.২) গ্রাম অথবা ফ্লোনিকামিড (০.৩) গ্রাম বা অ্যাসিটামিপ্রিড ( প্রতি লিটার জলে ০.২ হারে) ব্যবহার করা যেতে পারে। যাইহোক, শিকারী পতঙ্গ বা পাখি, পরজীবি, ও পরাগরেণুর ক্ষেত্রে এই সমস্ত রাসায়নিকের ঋণাত্মক প্রভাব থাকতে পারে।

এটা কি কারণে হয়েছে

জাবপোকা ছোট, নরম শরীরের দীর্ঘ পা এবং অ্যান্টেনা বিশিষ্ট একটি পোকা। তাদের আকার ০.৫- ২ মিমি পর্যন্ত এবং তাদের শরীরের রং প্রজাতির ভিন্নতার উপর নির্ভর করে হলুদ, বাদামী, লাল বা কালো হতে পারে। এদের বিস্তার পাখা বিহীন প্রজাতি থেকে শুরু করে (সাধারণতঃ কর্তৃত্বকারী হয়) সাধারণত পাখা বিশিষ্ট, মোমের মত বা পশমী প্রজাতি পর্যন্ত হয়। এ পোকার বৃদ্ধির জন্যে সর্বোত্তম শর্ত হলো শুষ্ক ও উষ্ণ আবহাওয়া থাকতে হবে। এরা সাধারণত অঙ্কুরশীর্ষে এবং কচি পাতার নীচে গুচ্ছাকারে থাকে এবং দলবদ্ধভাবে খাবার খায়। তারা তাদের দীর্ঘ মুখ-উপাঙ্গ ব্যবহার করে উদ্ভিদের কোষকলা থেকে তরল শোষণ করে। বসন্তের শেষ দিকে বা গ্রীষ্মের প্রথম দিকেই এরা প্রাথমিক আক্রমণ করে, জাবপোকার জনসংখ্যা স্বাভাবিকভাবেই প্রাকৃতিক শত্রুর কারণে হ্রাস পেয়ে থাকে। তাছাড়াও এদের কয়েকটি প্রজাতি উদ্ভিদ ভাইরাস বহন করে যা অন্যান্য রোগের বিকাশ ঘটাতে পারে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • ক্ষেতের চারিদিকে বিভিন্ন প্রজাতির উদ্ভিদের একটি উচ্চমাত্রার সংখ্যা বজায় রাখুন।
  • পূর্বে চাষ হয়েছে এমন ফসলের বর্জ্য পরিষ্কার করুন।
  • গমে আক্রমণকারী জাবপোকা জনসংখ্যা হ্রাসকরণে, প্রতিফলিত হয় এমন আস্তরণ জমিতে ব্যবহার করুন।
  • রোগ বা কীটপতঙ্গের প্রভাব মূল্যায়ন এবং তাদের তীব্রতা নির্ধারণের জন্য জমি নিয়মিত পর্যবেক্ষণ করুন।
  • সংক্রমিত উদ্ভিদের অংশ সরিয়ে ফেলুন।
  • ক্ষেতের মধ্যে এবং চারপাশের আগাছা নিয়মিত পরিষ্কার করুন।
  • অধিক জল বা অধিক মাত্রায় সার ব্যবহার করবেন না।
  • জাবপোকাকে রক্ষা করতে পারে এমন পিঁপড়ার বংশ আঠালো পটি তৈরির মাধ্যমে দমন করুন।
  • পত্রপল্লবের মধ্য দিয়ে বায়ু চলাচলের সুবিধার্থে গাছের পাতা ছেঁটে দিন অথবা নীচের পাতাগুলো অপসারন করুন।
  • সম্ভব হলে জাল ব্যবহার করে ফসলকে রক্ষা করুন।
  • কীটনাশক ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ এমনভাবে করুন যেন উপকারী কীটপতঙ্গ প্রভাবিত না হয়।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন