Aceria sheldoni
মাকড়
নামের নির্দেশ অনুযায়ী এসব মাকড়সা পাতা এবং ফুলের কুঁড়ি আক্রমণ করে। ডগা ও পুষ্পমঞ্জরীর বর্ধনশীল অংশের মরে যাওয়ার কারণে পাতা, পুষ্পমঞ্জরী এবং কচি ডগা শুকিয়ে যায়। ডালে পাতাগুলো গোলাপ ফুলের মত বিন্যস্ত থাকে। গাছের বৃদ্ধি থমকে যাবার কারণে অন্যান্য গাছের চাইতে কম হারে ফল ধরে। সংক্রমিত ফল মারাত্মকভাবে বিকৃত হয়ে যায় এবং হালকা হলুদ থেকে রূপালি রঙ ধারণ করে। আবার এই ক্ষতস্থান দিয়ে ছত্রাকের সংক্রমণও ঘটতে পারে। বৃদ্ধির প্রাথমিক পর্যায়ে এরা ঝরে যেতে পারে। পরিণত ফলগুলো কম রস উৎপাদন করে বলে এবং খারাপ মানের হওয়ায় তাদের বাজারমূল্য হ্রাস পায়।
সাধারণত প্রাকৃতিক শত্রু দ্বারা মাকড়সা ভালভাবে দমন করা যায় না। শিকারী মাকড়সা ব্যবহারের মাধ্যমে কুঁড়ির মাকড়সা মোটামুটি ভালভাবে দমন করা যায়। সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণের জন্য জৈবকীটনাশক সবচেয়ে ভাল পদ্ধতি হতে পারে। অপেক্ষাকৃত কম সংক্রমিত পরিস্থিতিতে ২ শতাংশ হারে সালফার সমৃদ্ধ দ্রবণ প্রয়োগ কুঁড়ির মাকড়সা দমনে সাহায্য করে। ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের অধিক তাপমাত্রায় এই পদ্ধতি প্রয়োগ করা উচিত নয় এবং দুটি প্রয়োগের মধ্যে কমপক্ষে ৪ সপ্তাহের ব্যবধান মেনে চলা উচিত।
সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। উদ্ভিজ্জ বিষাক্ত তেল পত্রপল্লবে ছিটিয়ে কুঁড়িতে মাকড়সা কর্তৃক ক্ষতি হ্রাস করা যেতে পারে। তেলের সাথে অ্যাবামেকটিন, ফেনবুটাটিন অক্সাইড, ক্লোরোপাইরিফস, স্পাইরোটেট্রাম্যাট, ফেনপাইরোক্সিমেট ভিত্তিক রাসায়নিক বা এদের মিশ্রণ ব্যবহারের মাধ্যমে প্রভাব বৃদ্ধি করা যেতে পারে।
লেবু ফসলের কুঁড়ি আক্রমণকারী মাকড়সা একারিয়া শেলডোনি-র কারণে এসব লক্ষণ দেখা যায়। এরা খালি চোখে দেখা যায় না কিন্তু লেবু ফসলের বাগানের উল্লেখযোগ্য ক্ষতি করে এবং সকলেরই ফলন হ্রাস ঘটায়। বিবর্ধক কাঁচের সাহায্যে, কুঁড়িতে ক্ষুদ্রাকৃতি, কৃমি আকৃতির, ঘিয়ে সাদা বা স্বচ্ছ মাকড়সা দেখা যায়। শীতকালে, কুঁড়ির মঞ্জরীপত্রের নিচে তারা আশ্রয় খোঁজে। বসন্তে যখন পরিস্থিতি অনুকূলে থাকে তখন স্ত্রী পোকা সক্রিয় হয় এবং নতুন কুঁড়ির ক্ষুদ্র পাতায় ডিম পাড়ে। অপূর্ণাঙ্গ পোকা কুঁড়ি এবং পুষ্পমঞ্জরীর বর্ধনশীল অংশে আক্রমণ করে, ফলে কচি পাতা, ফুল এবং ডগা বিকৃত হয়ে যায়। এর ধারাবাহিকতায়, গাছের বৃদ্ধি থমকে যায়। ফল ধারণও ব্যাহত হতে পারে এবং ফল ধরলে সেগুলো অতিরিক্ত রকমের বিকৃত হয়। উষ্ণ, শুষ্ক আবহাওয়ায় পোকার সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়, এমনকি এরকম পরিস্থিতি বিরাজমান থাকলে অপেক্ষাকৃত কম সংক্রমণেও মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে।