ভুট্টা

ভুট্টার স্ট্রিগা আগাছা

Striga hermonthica

আগাছা

5 mins to read

সংক্ষেপে

  • ভুট্টা গাছের চারপাশে জন্মানো উজ্জ্বল সবুজ পাতা ও উজ্জ্বল বেগুনি রঙের ছোট ফুল বিশিষ্ট গাছ।
  • আবাসী গাছের লক্ষণ হল বৃদ্ধি ব্যাহত হওয়া, নেতিয়ে পড়া ও হলুদ হয়ে যাওয়া।

এখানেও পাওয়া যেতে পারে

6 বিবিধ ফসল

ভুট্টা

উপসর্গ

বেগুনি ডাইনী আগাছা নামেও পরিচিত এ গাছের প্রধান বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে উজ্জ্বল সবুজ কাণ্ড ও পাতা, সেই সাথে উজ্জ্বল বেগুনী রঙের ছোট ছোট ফুল। পরগাছা হিসেবে এই গাছ আবাসী ফসল থেকে জল ও পুষ্টি শোষণ করে, যার কারণে খরা বা পুষ্টি ঘাটতির মত লক্ষণ, হলুদ হয়ে যাওয়া, পাতা নেতিয়ে পড়া ও উদ্ভিদের বৃদ্ধি থেমে যাওয়া প্রভৃতি লক্ষণ প্রকাশিত হয়। পুষ্টি ঘাটতির মত একই রকম বলে প্রতিষ্ঠার পূর্বে লক্ষণ নির্ধারণ করা কঠিন। একবার স্ট্রিগা প্রতিষ্ঠা পেলে যদি তুলেও ফেলা হয় তবুও ক্ষতি উপশম করতে বড্ড দেরী হয়ে যায়। এটি উল্লেখযোগ্য ফলন হ্রাস ঘটায়।

Recommendations

জৈব নিয়ন্ত্রণ

মূলতঃ অধিক পরিমাণ বীজ উৎপাদন ও দীর্ঘায়ুর কারণে দমন করতে কঠিনতম পরগাছাগুলোর মাঝে ডাইনী আগাছা একটি। তাদের ফুল আসার আগেই আক্রান্ত গাছ সমূলে তুলে পুড়িয়ে ফেলতে হবে। স্ট্রিগা গাছের প্রাথমিক পরিবহন কোষকলা সংক্রমণ ও তাদের বৃদ্ধি ব্যাহত করে বলে ফিউজারিয়াম অক্সিস্পোরাম ছত্রাককে ডাইনী আগাছার সম্ভাব্য জৈবিক দমন ব্যবস্থা হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ

সম্ভবমতো সমন্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে সর্বদা প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। ডাইনী আগাছার বিরুদ্ধে যেসব আগাছানাশক সহজলভ্য আছে সেগুলো দামী হয় এবং সরাসরি ফসলের ক্ষতি করে থাকে। একদিকে স্প্রে করা ব্যক্তির সুরক্ষার প্রয়োজন আছে, অপরদিকে আগাছানাশক উপকারী গাছ মেরে ফেলতে পারে। আগাছানাশক দিয়ে বীজ শোধন বজরা ও সরগামে সফলভাবে ব্যবহার করা গেছে যা ৮০ শতাংশ পর্যন্ত সংক্রমণ হ্রাস করতে পারে। এক্ষেত্রে রোপনের পূর্বে আগাছানাশক প্রতিরোধী বীজ আগাছানাশক দ্রবণে ডুবাতে হয়।

এটা কি কারণে হয়েছে

এ লক্ষণ স্ট্রিগা হারমনথিকা পরগাছার কারণে হয় যা সাধারণভাবে বেগুনী ডাইনী আগাছা বা বিরাট ডাইনী আগাছা নামে পরিচিত। এটি মূলতঃ উপ-সাহারা আফ্রিকা অঞ্চলের জন্য সমস্যার। তারা ধান, ভুট্টা, বজরা, সরগাম, আখ ও ফেলনসহ অন্যান্য দানা শস্য, ঘাস ও ডাল জাতীয় ফসল (লিগিউম) এর জন্য মারাত্মক সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে। প্রতিটি গাছ ৯০০০০ থেকে ৫০০০০০ বীজ উৎপাদন করতে পারে যা ১০ বছর পর্যন্ত মাটিতে থেকে যেতে পারে। এসব বীজ বাতাস, জল, পশু বা মানুষের ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি মাধ্যমে ছড়ানোর পর মাটিতে শীত অতিবাহিত করে। অনুকূল আবহাওয়ায় আবাসী ফসলের শিকড় থেকে মাত্র কয়েক সেমি দূরে থাকলে তাদের অঙ্কুরোদগম শুরু হয়। একবার শিকড়ের সংস্পর্শে আসলে ডাইনী আগাছা একধরণের অঙ্গ গঠন করে যা আবাসী গাছের সাথে সংযুক্ত করে, এভাবে পরগাছার সম্পর্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। নাইট্রোজেন সমৃদ্ধ সার ডাইনী আগাছার সংক্রমণের হার হ্রাস করে।


প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা

  • ফসলের সাধারণ শক্তিশালীকরণ কৌশল হিসেবে গাছকে সতেজ করতে চেষ্টা করুন।
  • মরশুমের শুরুতে বিস্তৃতভাবে কম্পোস্ট সার প্রয়োগ করুন।
  • ফসলের শিকড়ে স্ট্রিগার যুক্ত হওয়া এড়াতে ডেসমোডিয়াম গণের গাছ বপন করুন।
  • মাঠের চতুর্দিকে নেপিয়ার ঘাস রোপন মূল ফসল স্ট্রিগামুক্ত রাখতে সাহায্য করে।
  • সংক্রমিত ফসলে কাজের পর সকল যন্ত্রপাতি, উপকরণ, কাপড়-চোপড়, জুতা পরিষ্কার করুন।
  • ফসলে নাইট্রোজেন সার সঠিকভাবে প্রয়োগ করুন।
  • ডাল জাতীয় শস্য চাষ করে ফসল চক্র অনুসরণ করার পরিকল্পনা করুন।

প্ল্যান্টিক্স অ্যাপসকে ডাউনলোড করুন