Xanthomonas axonopodis pv. punicae
ব্যাকটেরিয়া
সংক্রমণের ২-৩ দিন পরে প্রথমে লক্ষণ দেখা দেয়। ফসলের আক্রান্ত অংশগুলিতে হলুদ বর্ণের জলে ভেজা দাগ দেখতে পাওয়া যায়। গুরুতর আক্রমণ হলে অকালে পত্রমোচন হয়। পরবর্তীতে অনিয়মিত গোলাকার দাগ দেখা যায় এবং ধীরে ধীরে কেন্দ্রভাগ মৃত কোষকলা সমন্বিত ঘন কালো বাদামী আকার ধারণ করে। এ জীবাণু কাণ্ড এবং শাখা ঘিরে ফেলে ফাটল তৈরি করে। সংক্রমণের চূড়ান্ত পর্যায়ে, পাতা এবং ডগায় মৃত কোষকলার আবির্ভাব ঘটে। রোগের প্রকোপে পুরো ফলে ফাটল ধরে এবং সঙ্গত কারনে পুরো ফল কালো এবং শুকনো হয়ে যায়। বৃদ্ধির সমস্ত পর্যায়ে উদ্ভিদ এ রোগের প্রতি সংবেদনশীল।
ব্যাকিলাস সাবটিলিস, স্যিউডোমোনাস ফ্লুরোসেন্স এবং ট্রাইকোডার্মা হার্জিয়ানামের মতো জৈব নিয়ন্ত্রক এজেন্ট প্রয়োগ করুন। কীটপতঙ্গ ও প্যাথোজেন নিয়ন্ত্রণের জন্য নিম পাতা গরুর প্রস্রাবে মিশিয়ে স্প্রে করুন। তুলসী পাতার নির্যাসের ৪০% নিম বীজের তেল সহ প্রয়োগ করুন। এছাড়াও, রসুনের রস, মেসওয়াক স্টেম এবং পাচৌলি পাতার ৩০% নিয়ে প্রয়োগ করুন।
সম্ভবমতো সমম্বিত বালাই ব্যবস্থাপনার আওতায় জৈবিক নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে রোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা নিন। এ রোগের কার্যকর কোনও রাসায়নিক নিয়ন্ত্রণ এখনও আবিষ্কার করা যায় নি। অ্যান্টিবায়োটিক, রাসায়নিক এবং অন্যান্য হাতে নাতে পরিচালিত দমন ব্যবস্থা বিকল্প হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে, তবে রাসায়নিক দমন কেবল কোন কার্যকর ব্যবস্থা নয়। বোর্দো মিশ্রণ, ক্যাপ্টান, কপার হাইড্রোক্সাইড, ব্রোমোপল এবং অ্যান্টিবায়োটিক স্ট্রেপ্টোসাইক্লিনের মতো রাসায়নিক এককভাবে বা সংমিশ্রণে ব্যবহার করা যেতে পারে।
বায়ুবাহিত ব্যাকটেরিয়া জ্যান্থোমোনাস অ্যাকোনোপোডিস পিভি পিউনিসি দ্বারা এ রোগ হয়। বৃদ্ধির যে কোন পর্যায়ে বিভিন্ন ধরণের ফসলের জাতকে এ জীবাণু সংক্রামিত করে। ব্যাকটেরিয়া প্রাকৃতিক খোলামুখ এবং ক্ষতের মধ্য দিয়ে প্রবেশ করে। সংক্রামিত গাছের পাতা, কাণ্ড এবং ফলে এ ব্যাকটেরিয়া শীতকাল অতিবাহিত করে। বৃষ্টিপাত, পোকামাকড় এবং ছাঁটাইয়ের সরঞ্জামের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে এ রোগ ছড়াতে সহায়তা করে। দিনে উচ্চ তাপমাত্রা এবং স্বল্প আর্দ্রতা প্যাথোজেন বৃদ্ধির পক্ষে কাজ করে। ব্যাকটেরিয়ামের বৃদ্ধির সর্বোত্তম তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বৃষ্টি এবং তরল স্প্রে করার মাধ্যমে, সেচের জল, ছাঁটাইয়ের সরঞ্জাম, মানুষ এবং বাহক পোকা ব্যাকটেরিয়ার দ্বিতীয় স্তরের প্রসারের জন্য দায়ী। এই রোগের কারণে ফলের বিপণন সম্ভাবনা হ্রাস পায়।